|
|
|
|
|
কিট নেই, রক্ত পরীক্ষায় সমস্যা আসানসোলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • রানিগঞ্জ |
|
ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে আটশো এলাইজা কিট। ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের ব্যবহারের জন্য কেনা নতুন একটি অ্যাম্বুল্যান্স অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নেই হেপাটাইটিস কিট। ফলে, বাতিল করতে হচ্ছে রক্তদান শিবির। এই ছবি আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে আসানসোল হাসপাতালকে মহকুমা থেকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। কিন্তু তার পরে শুধু মাত্র কিছু শয্যা বাড়ানো ছাড়া কোনও কাজ হয়নি এই হাসপাতালে। ব্লাড ব্যাঙ্কে চাপ বাড়লেও পরিষেবার মান আরও খারাপ হয়েছে। রক্ত না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে রোগীদের। ক্ষোভ রয়েছে রক্ত দেওয়া নিয়েও। জামুড়িয়ার বুধন বাউরি, রানিগঞ্জ জেকে নগরের অজয় মাহাতোদের অভিযোগ, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত মজুত থাকা সত্বেও রক্তের কার্ড নিয়ে গিয়ে রক্ত মেলে না। কিন্তু নার্সিংহোমের সুপারিশ নিয়ে অনেকে রক্ত নিয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ব্লাড ব্যাঙ্কের দেওয়ালে প্রতি দিন মজুত তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া উচিত।
ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়ার আগে তাঁর হেপাটাইটিস-বি, সি-সহ ছ’রকম পরীক্ষা করতে হয়। রোগীর শরীরে রক্ত ঢোকাবার আগে সেই রক্তের পরীক্ষার জন্য এলাইজা টেস্ট ও স্পট টেস্ট করা হয়। ২৮ অক্টোবর এই ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে ১৪৪০টি এলাইজা কিট দেওয়া হয়েছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৯ নভেম্বর ওই কিটগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে প্রায় ৮০০টি কিট। ১০ নভেম্বর থেকে এলাইজা টেস্ট পুরোপুরি বন্ধ।
ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের দাবি, সমস্যা মেটাবার জন্য আরও বেশি সংখ্যায় হেপাটাইটিস কিট দিলে সমস্যা মিটতে পারে। এক কর্মী জানান, ৫ ডিসেম্বর বর্ধমানে কিট আনতে গেলে তাঁদের মাত্র একশো হেপাটাইটিস বি এবং তিনশো হেপাটাইটিস সি কিট দেওয়া হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই নগণ্য। ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা বলেন, “হাসপাতালে দৈনিক ৪০ থেকে ৫০টি করে কিট লাগে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বেশি করে কিট দিলে এই সমস্যা হয় না।”
স্থানীয় স্তরে কিট কেনার অধিকার দেওয়ার বিষয়টিও ভেবে দেখা উচিত বলে দাবি করেছেন তাঁরা। ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের এক অধিকর্তা জানান, বর্তমানে চিত্তরঞ্জন রেল হাসপাতালে ৮০টি হেপাটাইটিস সি, ইসিএলের কাল্লা হাসপাতালে ৫০টি হেপাটাইটিস বি, ১০০টি হেপাটাইটিস সি এর কিট ও ইস্কো হাসপাতাল ৩৫০টি রক্তের ব্যাগ রয়েছে। কিন্তু সঠিক সময়ে ফেরত দেওয়ায় নিশ্চয়তা না থাকায় তাদের থেকে বারবার ধার নেওয়া সম্ভব নয়।
হেপাটাইটিসের কিট না থাকায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রক্তদান শিবির। রক্তদাতাদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘আইএসবিটিআই’-এর সদস্য প্রবীর ধর জানান, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গত ৯ নভেম্বর চিত্তরঞ্জনে তাদের বাৎসরিক রক্তদান শিবিরের কথা ঘোষণা করেও হাসপাতালে হেপাটাইটিস বি কিটের অভাব থাকায় শিবিরের আগের দিন অর্থাৎ ৮ নভেম্বর সেটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। তাঁর ক্ষোভ, “সরকার যখন বারবার রক্তদাতাদের উৎসাহিত করছেন, তখন জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের একাংশের এই উদাসীনতাতে সব পণ্ড হতে বসেছে।”
হাসপাতালের সুপার নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, “এই হাসপাতাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। ধানবাদ থেকে পুরুলিয়ার মানুষ এখানে আসেন। রক্ত সংক্রান্ত কিটের সরবরাহের অভাবের সমস্যা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।” |
|
|
|
|
|