|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
লিরিকে কী বিচিত্র উত্পাত |
বইপোকা |
এমন উত্পাত বোধকরি মুদ্রণভূতেদেরও অসাধ্য ছিল! শঙ্করলাল ভট্টাচার্য নির্বাচিত ১৫০টি প্রিয় বাংলা আধুনিক ও ছায়াছবির গান ছাপা হইয়াছেতাঁহার নিশি রাত বাঁকা চাঁদ (প্রতিভাস) গ্রন্থে। তাহাতে, এক সুমন চট্টোপাধ্যায়ের ‘তোমাকে চাই’ গানেই কম করিয়া গোটা দশেক ভ্রম।
সুমন লিখিয়াছিলেন,
‘কবেকার কলকাতা শহরের পথে
পুরনো নতুন মুখ ঘরে ইমারতে’।
ছাপা হইয়াছে, ‘কবেকার কলকাতা শহরে উত্পাতে
পুরনো নতুন মুখ ভরে ইমারতে’।
কেবল ইহাই নয়, ‘বালিশ তোশক কাঁথা’ হইয়াছে ‘বালিশ তোশক খাট’, ‘লজ্জা দ্বিধায় আমি তোমাকে চাই’ হইয়াছে ‘লজ্জাকে ভুলে আমি তোমাকে চাই’! সুমনের গানের কথার যুক্তি উপলব্ধি করিতে পারিলে এমনটা হইবার কথা নহে। অবশ্য প্রাক্-সুমন পর্বেও ভ্রান্তির কমতি নাই। যেমন ‘দোলে দোদুল দোলে ঝুলনা’ হইয়াছে ‘দোলে দোদুল দোলে দোলনায়’, ‘মম সরসীতে তব উজল প্রভা’ হইয়াছে ‘মম সরসীতে তব উজ্জ্বল প্রভা’ ইত্যাদি। এমন বিবিধ বিভ্রান্তি বাংলা আধুনিক ও চিত্রগীতির ইতিহাসের উপাদানসমূহকেই ঘুলাইয়া তুলিতেছে। অথচ বাংলা আধুনিক গান লইয়া স্মৃতিমেদুর আলোচনা অপেক্ষাও এখন গানগুলির কথা ও সুর সংরক্ষণ করা জরুরি। কারণ এই স্বর্ণভাণ্ডারের কোনও সুসম্পাদিত, নির্ভরযোগ্য সংকলন এখনও অধরা। তাহার উপর এমত ভুলে ভরা গ্রন্থ বিপদ বাড়াইবে মাত্র। সর্বাধিক পরিতাপের বিষয়, যে গান হইতে গ্রন্থনাম তাহারই গীতিকারের নাম ভুল করিয়া বসিয়া আছে গ্রন্থটি। গীতা দত্তের সুবিখ্যাত ‘নিশি রাত বাঁকা চাঁদ আকাশে’ গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের নহে, প্রণব রায়ের রচিত। |
|
|
|
|
|