হলদি নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি তুলে পাচারের অভিযোগে দুটি ডাম্পারকে আটক করা হল। শুক্রবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক তাপসকুমার বাগচি হলদিয়ার বাঁশখানা জালপাই গ্রামে আচমকা হানা দিয়ে প্রথমে বালি বোঝাই একটি ডাম্পার আটক করেন। দুপুরে চণ্ডীপুরের নরঘাটের রেলসেতুর কাছে হলদি নদীর তীরে ফের বালি বোঝাই একটি ডাম্পার ও তার চালককে আটক করা হয়। দু’জায়গা মিলিয়ে এদিন প্রায় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ঘনফুট বালি বাজেয়াপ্ত করেছে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। বাজেয়াপ্ত করা বালির দাম প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক জানান, দু’টি ক্ষেত্রেই ডাম্পার-সহ চালককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। থানায় আলাদা করে অভিযোগও জানিয়েছে দফতর।
হলদি নদীর বুক থেকে তোলা সাদা বালি সাধারণত বাড়ি-সহ বিভিন্ন নির্মাণকাজে ‘ফিলিং’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ওই বালি তোলার জন্য সরকারি আইন অনুযায়ী জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অনুমতি নিতে হয়। সরকারি নিয়ম মেনে প্রতি ১০০ ঘনফুট বালির জন্য ৮১ টাকা হারে রাজস্ব দিতে হয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর জুলাই মাসে হলদিয়ার বাঁশখানা জালপাই এলাকার কাছে হলদি নদী থেকে দু’দফায় মোট ১০ দিন করে বালি তোলার জন্য ‘উমা এন্টারপ্রাইজ’ নামে স্থানীয় একটি সংস্থাকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপর গত পাঁচ মাস ধরে অনুমতি ছাড়াই ওই সংস্থা নদী থেকে বেআইনি ভাবে প্রচুর বালি তুলে পাচার করছিল। খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক পুলিশ নিয়ে বাঁশখানা জালপাই গ্রামে গিয়ে বালি বোঝাই একটি ডাম্পার ও তার চালককে আটক করে। সেই সময় ওই সংস্থার মালিক সৌগত রায় এসে বালি তোলার অনুমতি আছে বলে যে নথি দেখান, তাতে দেখা যায় সেটি জুলাই মাসের। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক জানান, বাঁশখানা জালপাই এলাকায় ওই সংস্থাটি হলদি নদী থেকে বেআইনি ভাবে প্রচুর বালি তুলে নদীতীরে জমা করে রেখেছে। এদিন হানা দিয়ে সেখানে প্রায় ৭৩ হাজার ৬৭০ ঘনফুট বালি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেআইনি ভাবে তোলা ওই বালির জন্য মোট ৭ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হবে। এদিনই দুপুরে চণ্ডীপুর থানার নরঘাটের রেলসেতুর কাছে হলদি নদী থেকে বালি পাচারের সময় একটি ডাম্পার-সহ চালককে আটক করা হয়। সেখানে বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রায় ৫২ হাজার ৫৭০ ঘনফুট বালি। বেআইনি ভাবে বালি তোলার জন্য সুরজিৎ বাগ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই বালি তোলার জন্য ৫ লক্ষ ২৫ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হবে। |