রাজ্যের প্রতি জেলায় প্রতিটি ব্লকে আইটিআই তৈরি করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সেই কাজে অন্যতম প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জমি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জমি জটে আটকে গিয়েছে আইটিআই (ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) তৈরির কাজ।
জেলার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার ৯টি ব্লকের মধ্যে পাঁচটি ব্লকেই জমি না মেলায় এখনও আইটিআই তৈরির কাজ শুরু করা যায়নি। কোথাও আবার জমি পাওয়া গেলেও অনুমোদন মেলেনি।
ডায়মন্ড হারবার ১, মগরাহাট ২ ও মন্দিরবাজার ব্লকে ইতিমধ্যেই আইটিআই নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ফলতার দক্ষিণ সারগেড়িয়া গ্রামের কাছে প্রায় ২ একর জমিতে আইটিআই কলেজ নির্মাণের অনুমতিও মিলেছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ থমকে রয়েছে কুলপি, ডায়মন্ড হারবার-২, মগরাহাট-১, মথুরাপুর-১ ও ২ ব্লকে। |
কুলপি ব্লকের করঞ্জলি পঞ্চায়েতের দামোদরপুর গ্রামের কাছে নতুনপল্লিতে আইটিাই তৈরির জন্য যে সরকারি জমি দেখা হয়েছিল, তাতে ৪০ থেকে ৪৫টি পরিবারের বাস। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অধীন ওই ৮ একর জমি এক সময়ে খালিই ছিল। কিন্তু বাম আমলে ১২ বছর আগে চকদুলাল, হরিণখোলা, চৌধুরীমহল, শ্যামনগর, নিশ্চিন্তিপুর গ্রামের বেশ কিছু পরিবারকে ওই জমিতে বসবাস করার অনুমতি দেওয়া হয়। আইটিআই নির্মাণের জন্য যখন জমি ছাড়ার কথা পরিবারগুলিকে বলা হয়, তখন তাঁরা ৫ শতক জমি ও উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। স্থানীয় বাসিন্দা তপন হালদার, মাধব প্রামাণিক, বাদল হালদারেরা জানান, বছর খানেক আগে প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছিল, ওই জমির বিনিময়ে নতুনপল্লি গ্রামের পশ্চিম দিকের সরকারি জমি থেকে পাঁচ শতক ও ঘর নির্মাণের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত বদল করে প্রশাসন থেকে জানানো হয়, জমির সঙ্গে ৪৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। ওই টাকায় যে বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব নয়, তা প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন ওই বাসিন্দারা। কিন্তু ব্লক প্রশাসন তাঁদের সেই দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। কুলপির বিডিও সেবানন্দ পাণ্ডা বলেন, “আইটিআই কলেজ নির্মাণের জন্য প্রায় ৯ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। টেন্ডার ডেকে ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে গেলেও জমি অধিগ্রহণের সমস্যায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।”
মথুরাপুর-২ ব্লকে রায়দিঘি বাজারের কাছেও সেচ দফতরের ১১ বিঘা কৃষি জমি কলেজ নির্মাণের জন্য চিহ্নিত করা গেলেও বাসিন্দাদের দাবিমতো পাট্টা না মেলায় এখনও কলেজ নির্মাণের জন্য আর্থিক অনুমোদন পাওয়া যায়নি। মথুরাপুর-১ ব্লকে মথুরাপুর স্টেশন মোড়ের কাছে প্রায় ২ একর জমি চিহ্নিত করার পরে আর্থিক অনুমোদনের জন্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, ডায়মন্ড হারবার-২ ও মগরাহাট-১ ব্লকে এখনও আইটিআই-এর জন্য এখনও জমিই চিহ্নিত করা যায়নি। ডায়মন্ড হারবারের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক মৌমিতা সাহা বলেন, “সমস্ত বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে নির্দেশ পেলে বাকি ব্লকগুলিতে আইটিআই কলেজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।” |