সংসদে বিল পাশ করাতে আর্জি রাজনের
ংসদের টেবিলে আটকে না-রেখে সংস্কারের যাবতীয় বিল দ্রুত পাশ করতে রাজনৈতিক দলগুলিকে আর্জি জানালেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন। তাঁর মতে, আগামী লোকসভা নির্বাচনের পর কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার যে হবেই, তেমন নিশ্চয়তা নেই। আর সে রকমটা হলে, গভীর গাড্ডায় পড়বে দেশের অর্থনীতি। সম্ভাবনা তৈরি হবে রেটিং ছাঁটাইয়ের (যে হুঁশিয়ারি বুধবারই দিয়েছে মার্কিন মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি)। সুতরাং বৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত করতে ওই সমস্ত বিল ফেলে না-রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছেন তিনি।
একই সঙ্গে, দিল্লি ইকনমিক কনক্লেভ: ২০১৩-এর মঞ্চে শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্ণধার এ দিন জানান, কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা খুঁজে পেয়েছে দেশের অর্থনীতি। অর্থবর্ষ শেষে বৃদ্ধির হারও হয়তো দাঁড়াবে ৫ শতাংশের আশেপাশে। কিন্তু সেই ঘুরে দাঁড়ানোর ‘ভাল গল্প’ পণ্ড করতে এখনও শিয়রে সমন হয়ে দাঁড়িয়ে লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি।
শহরে রাজন।—নিজস্ব চিত্র।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ সম্প্রতি ভোট বাক্সে হাড়ে-হাড়ে টের পেয়েছে কংগ্রেস। খোদ সনিয়া গাঁধীই মেনে নিয়েছেন যে, চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী হওয়ার অন্যতম কারণ ওই আগুন বাজারই। কিন্তু এ দিন কনক্লেভের মঞ্চে বলতে উঠে সেই বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধির দায় রাজ্যগুলির ঘাড়ে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করলেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর যুক্তি, রাজ্য সরকারগুলি ফাটকাবাজি ও কালোবাজারি রুখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই এই সমস্যা মাথাচাড়া দিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি দীর্ঘ দিন ধরে খুব বেশি হলে, সরকারকেই মূল্য চোকাতে হয়।” তবে তাঁর অভিযোগ, কৃষি পণ্য বিপণন আইন এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন দু’টিই রাজ্য সরকারের হাতে। কিন্তু ফাটকাবাজি ও কালোবাজারি রুখতে সেগুলি ব্যবহারে রাজ্যগুলি সে ভাবে সক্রিয় হয়নি।
ভোটে ভরাডুবির পর ইউপিএ সরকারের (কার্যত সনিয়া গাঁধীর) অর্থনৈতিক দর্শন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংশয় তৈরি হয়েছে একশো দিনের কাজ, খাদ্য সুরক্ষা আইন ইত্যাদির মতো ‘পাইয়ে দেওয়ার নীতি’ মানুষ গ্রহণ করছেন কি না, তা নিয়ে। কিন্তু এ দিন চিদম্বরমের দাবি, ইউপিএ সরকারের নীতি সঠিক। খয়রাতিতে রাজকোষ ঘাটতি লাগামছাড়া হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
অর্থনীতি যাতে ঘুরে দাঁড়ায়, সে জন্য আর্থিক শৃঙ্খলার উপর জোর দেওয়ার কথা বলেছেন রাজনও। প্রথমে দিল্লি, সন্ধ্যের দিকে কলকাতা। একই দিনে দেশের দুই শহরের মঞ্চেই আর্থিক শৃঙ্খলার উপর জোর দিয়েছেন তিনি। চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে ঘাটতি যে-ভাবে কমছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে এলে আগামী দিনে সোনা আমদানি নিয়ে কড়াকড়ি কমানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে আশা রেখেছেন যে, রাজকোষ ঘাটতিকে যে-কোনও মূল্যে জাতীয় আয়ের ৪.৮ শতাংশে বেঁধে রাখবে কেন্দ্র। জোর দিয়েছেন, ডিজেল-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভর্তুকি কমানোর উপর।
শুধু তা-ই নয়। রাজন মনে করেন, অর্থনীতি নিয়ে মাথাব্যথার আর একটি বড় কারণ ব্যাঙ্কগুলির দ্রুত বাড়তে থাকা অনুৎপাদক সম্পদ। এই সমস্যা মেটাতে একাধিক পদক্ষেপ করতে চান তিনি। যেমন, যারা ‘ইচ্ছে করে’ ধার শোধ দিচ্ছেন না, ভবিষ্যতে তাদের ঋণ পাওয়ার পথ কঠিন করা, ওই সমস্ত ঋণ ঢেলে সাজা (রিস্ট্রাকচারিং) নিয়ে শীঘ্রই নির্দেশিকা জারি করা ইত্যাদি। এ প্রসঙ্গে কলকাতায় সিআইআইয়ের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ওই অনাদায়ী ঋণের জন্য কে দায়ী, তা বিচারের থেকে জরুরি অবিলম্বে ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করা। এ নিয়ে শীঘ্রই নির্দেশিকা জারি করা হবে।”
এ দিন দিল্লিতে চিদম্বরম ও রাজনের বক্তব্য যদি আলোচনার বিষয়বস্তু হয়, তবে ওই মঞ্চে উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জগদীশ ভগবতীর। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের উল্টো পথে হেঁটে বার বার শিল্পায়ন ও বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নয়নের কথা বলেছেন যিনি। প্রশংসা করেছেন নরেন্দ্র মোদীর। এ বারের কনক্লেভে প্রধান বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েও শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি। অর্থ মন্ত্রকের উপদেষ্টা এইচ এ সি প্রসাদ বলেন, “উনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সফর বাতিল করতে হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.