একের পর এক চুরিতে রাতের ঘুম উড়েছে কাটোয়াবাসীর। তার উপর কোনও ঘটনাতেই এখনও দুষ্কৃতীদের ধরতে পারেনি পুলিশ। ফলে প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে।
মঙ্গলবার রাতেও কাটোয়া শহরের ডাকবাংলো রোডের একটি বাড়ির ভিতর কালী মন্দিরে ও ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে ডাকবাংলো রোডের ওই বাড়ির ভিতর ঢুকে প্রথমেই বাইরে থেকে দরজায় শিকল তুলে দেয় দুষ্কৃতীদের দলটি। পরে বাড়ির ভিতরে থাকা কালী মন্দিরে ঢুকে লুঠপাট চালায়। ওই বাড়ির কর্তা রাধাকান্ত দাস পুলিশকে অভিযোগে জানান, রাতে ঘুম ভেঙে গেলে ঘরের বাইরে বেরোতে গিয়ে দেখি দরজা বাইরে থেকে লাগানো। চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করি। তারপর কোনও রকমে দরজা খুলে দেখি দেবীর গায়ে থাকা সোনা ও রূপোর গহনা খোওয়া গিয়েছে। |
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা কাটোয়া কলেজের দিক থেকে বাড়ির ভিতরে ঢুকে ছিল। কিছু দিন আগে, ডাকবাংলো রোডের কাছে কলেজ পাড়ায় একটি বাড়িতে চুরি হয়েছিল। সে ঘটনারও কোনও কিনারা হয়নি।
ওই রাতেই কাটোয়া ২ ব্লকের ইসলামপুরে পাশাপাশি দু’টি স্কুলে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পাশের একটি প্রাথমিক স্কুলের জানালা ভেঙেও লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীদের ওই দল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, গত রবিবারও স্কুলে লুঠপাট হয়। তখন কাটোয়া থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছিল। মঙ্গলবারে ফের চুরির পরে থানায় ফোন করে ঘটনা জানানো হলেও পুলিশ পাত্তাই দিতে চায়নি। যদিও কাটোয়া থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, খবর পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। কয়েকদিন আগে কাটোয়ার চূড়পুনী ও কোশিগ্রামের উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮টি করে কম্পিউটার খোওয়া যায়। সে ঘটনারও কোনও হদিশ পায়নি পুলিশ।
|
এর মধ্যেই কাটোয়া শহরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের দু’টি এটিএম কাউন্টারে পরপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। শহরের সুবোধ স্মৃতি রোডে ও কাটোয়া-দাঁইহাট রোডের ঘোষহাটে ওই এটিএম কাউন্টার দু’টি ভাঙারও চেষ্টা চালায় তারা। এই ঘটনাতেও এখনও পর্যন্ত অন্ধকারে রয়েছে পুলিশ।
একের পর এক চুরি, লুঠপাট হয়েই চলেছে। কিন্তু কোনও ঘটনারই কিনারা না হওয়ায় শহরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের বিশিষ্টজনদের অভিযোগ, বাড়ি ফাঁকা রেখে কোথাও যাওয়া মানেই বিপদ। পুলিশের উপর ক্ষুব্ধ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও। শহরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের কর্মীর অভিযোগ, আমাদের ব্যাঙ্কে দু’বার চুরি হল। সিসিটিভির ফুটেজ নিল পুলিশ। কিন্তু কিছুই হল না।
এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ পুলিশের কর্তারা। তবে জেলার এক পুলিশ কর্তার দাবি, “এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। পুলিশের টহল বাড়ানো হচ্ছে শহরে।” |