শৌচাগার থাকলেও জলের অভাবে তা ব্যবহার হয় না বললেই চলে। নর্দমা উপচে পড়ছে আবর্জনায়। বৃষ্টি হলেই জল জমে যায় রাস্তায়। যত দূর চোখ যায় কোনও ডাস্টবিনের দেখা মিলবে না। পুরসভার সাফাই কর্মীর দেখা মেলে মাসে এক বার থেকে দু’বার।
দীর্ঘ দিন এই অবস্থাতেই চলছে আসানসোল কোর্ট বাজার। একটি ছোট ট্যাঙ্কে করে প্রতি দিন গোটা বাজারে জল সরবরাহ করা হয়। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত।
এই বাজারটি আসানসোলের ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার প্রধান বাজার হিসেবে পরিচিত। প্রশাসন সূত্রে খবর , আগে আসানসোল মহকুমাশাসক কার্যালয় চত্বরে এবং শশীভূষণ গড়াই রাস্তার পাশের আসানসোল চেলিডাঙা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে সকালে অস্থায়ী বাজার বসত। আসানসোলের তৎকালীন পুরপ্রধান গৌতম রায়চৌধুরী কোর্ট বাজার তৈরির পরিকল্পনা করেন। ১৯৮৪ সালে পুরমন্ত্রী প্রশান্ত শূর রেল ও পুর্ত বিভাগের জমিতে কোর্ট বাজারের উদ্বোধন করেন। |
জমে আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র। |
বাজার শুরুর সময়ে শ’খানেক দোকান থাকলেও অল্প দিনেই দোকানের সংখ্যা প্রায় তিনশো ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু যেহেতু বাজারের জমি পুরসভার নিজস্ব নয়, তাই পুর কর্তৃপক্ষ এই বাজারের ব্যবসায়ীদের বৈধ অনুমোদন দেয়নি। ফলে প্রায় ২৫ বছর বিনা ট্রেড লাইসেন্সেই শুধু মাত্র মৌখিক অনুমতিতেই ব্যবসা চলে। ২০০৬ সালে অধুনা প্রয়াত কাউন্সিলর দেবাশিস ঘটকের উদ্যোগে বাজারের কাঁচা রাস্তাটি কংক্রিটের করা হয়। ২০০৯ সালে তৃণমূল আসানসোল পুরসভার ক্ষমতায় এসে বাজারের ব্যবসায়ীদের হকার লাইসেন্স দেয়।
কিন্তু এই দুরাবস্থার কারণ কী? স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ দোষ দিচ্ছেন বাজার কমিটিকেই। নজরুল পল্লির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়, আপার চেলিডাঙার বাসিন্দা পূর্ণেন্দু দে’র অভিযোগ, বাজার কমিটি প্রতিদিন বাজারের ব্যবসায়ীদের থেকে উন্নয়ন তহবিলের নামে ২ টাকা করে চাঁদা তোলে। কিন্তু তার পরেও নিয়মিত সাফাই করা হয় না। দেওয়া হয় না ব্লিচিং। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর বাজারের ভিতরের কিছু দোকান উঠে রাস্তার পাশে এক দিকের ফুটপাত দখল করে বসে। অন্য দিকের ফুটপাতে সকাল থেকেই চলে ‘পার্কিং জোন’। ফলে ব্যাপক যানজট হয়। অর্থ খরচ না করার অভিযোগ অস্বীকার করে বাজার কমিটির সম্পাদক বাবলু সেন বলেন, “উন্নয়ন তহবিলের টাকায় দু’জন রাতের পাহারাদার, একজন সাফাইকর্মী এবং অর্থ আদায়কারীর মাইনে দিই। বাকি টাকায় সংলগ্ন ক্লাবগুলোকে পুজো ও মহরমের চাঁদা দেওয়া হয়।” তাঁর আরও দাবি, এক জন সাফাইকর্মীর পক্ষে এত বড় বাজার পরিষ্কার রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু অর্থ না থাকায় উপায়ও নেই। পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পরিকাঠামোর উন্নয়নের চেষ্টা করছি। শৌচাগারের সমস্যা প্রতিকারেরও চেষ্টা চলছে।” |