মালদহে গণ-বদলি ৩৮ শিক্ষককে
নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রি-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি ১২০০ ছাত্র ভর্তি নেওয়ার অভিযোগে মালদহ শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-সহ ৩৮ শিক্ষককে গণবদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালদহ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। অক্রুরমণি করোনেশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রি প্রাইমারি থেকে চতুর্থ শ্রেণিতে যে সমস্ত ছাত্রদের ভর্তি করা হয়েছে, সেই সব ছাত্ররা বিদ্যালয়ের ৫০০ মিটার এলাকার মধ্যে বসবাস করে কি না, তা খতিয়ে দেখতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ওই স্কুলে ছাত্র ভর্তির সমস্ত নথি বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত শুরু করেছে।
অক্রুরমনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনার পরই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ নড়েচড়ে বসেছে। আর এরপরই নিয়ম বহির্ভূত ভর্তি রুখতে মালদহ শহরে হাইস্কুল-যুক্ত সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র ভর্তি বন্ধে নির্দেশ জারি করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। প্রাথমিক সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্রুরমণি স্কুলের শিক্ষকদের বিভিন্ন স্কুলে বদলি করা হবে। তেমনই অন্য স্কুল থেকে শিক্ষকদের নিয়ে আসা হবে অক্রুরমণিতে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই বদলি প্রক্রিয়া কার্যকর করা হবে বলে জানান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান স্বপনকুমার মিশ্র। সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নীতি অনুযায়ী হাইস্কুলের সঙ্গে যুক্ত প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা সেই হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তিতে অগ্রাধিকার পাবে। আর এই নিয়মের ‘সুযোগ নিয়ে’ অক্রুরমণি প্রাথমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক তৃতীয় শ্রেণিতে ৩১৮ জন ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৩৪৪ জন ছাত্র ভর্তি করেছেন বলে অভিযোগ।
ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক কয়েকদিন আগে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন, তাঁদের হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ২৫০ জনের বেশি ছাত্র ভর্তি করা সম্ভব নয়। স্বপনবাবুর বক্তব্য, “শহরাঞ্চলে ৫০০ মিটার এলাকার বাসিন্দাদের ছেলেমেয়েরাই নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে। কিন্তু এই নিয়মকেও তোয়াক্কা না করে মোটা টাকার বিনিময়ে অক্রুরমণি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহু ছাত্রকে ভর্তি করানো হয়েছে বলে একাধিক অভিভাবক লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরপরেই শুক্রবার সংসদের বৈঠকে অক্রুরমণি করোনেশন ইন্সিটিউশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক সহ সমস্ত শিক্ষককে গণবদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” স্বপনবাবু বলেন, “মালদহ শহরের আরও কয়েকটি হাইস্কুল-যুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে প্রচুর ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে। হাইস্কুল-যুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির ছাত্র ভর্তি বন্ধে নির্দেশ জারি করা হয়েছে।”
অক্রুরমণি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজবাবু অবশ্য বলেন, “কয়েকদিন আগে সংসদের চেয়ারম্যান আমাকে ডেকে বলেছিলেন তোমার স্কুলের সমস্ত শিক্ষককে বদলি করা হবে।” তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ছাত্র ভর্তির যে অভিযোগ উঠেছে, তা ভিত্তিহীন। আমার উপর ছাত্র ভর্তির প্রচন্ড চাপ ছিল। আমি বারংবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ আমাকে কোনও সহযোগিতা করেননি। প্রতিটি ছাত্র ভর্তির নথি আমার কাছে রয়েছে। তদন্ত হলে সব দেখাব।” পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি স্বপনকুমার মন্ডল বলেন, “বিগতদিনে জেলার প্রাথমিক শিক্ষায় প্রচুর অনৈতিক ও অযৌক্তিক কাজ হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অক্রুরমণি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গণবদলিকে স্বাগত জানাই। এরপর প্রধান শিক্ষক বা সহশিক্ষকরা বেআইনি কাজের সাহস পাবে না।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.