অধীর চৌধুরীর ‘গড়’ বহরমপুরে গিয়ে তাঁকেই আক্রমণের নিশানা করলেন তৃণমূল যুবার সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই প্রথম সংগঠনের মুর্শিদাবাদ জেলা কনভেনশনে এসে তিনি দাবি করেন, “লোকসভা ভোটে এ জেলার তিনটি আসনই দখল করবে তৃণমূল।” অর্থাৎ, তৃণমূল মনে করছে, জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ এমনকী বহরমপুরও হাতছাড়া হবে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর। |
ঘরোয়া আলোচনায় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ বলছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার প্রয়োজন নেই, একা লড়েই এ বারের লোকসভা ভোটে তাঁরা ৩০-৩৫টি আসন পাবেন। ভোটে একা লড়ার কথা অবশ্য ইতিমধ্যেই দিল্লিতে ঘোষণা করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, পঞ্চায়েত ভোট ও তার পরে বেশ কিছু পুরভোটে বামফ্রন্ট তো বটেই, বিরোধী কংগ্রেসও যে ভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে, তাতে মুর্শিদাবাদের তিনটি আসন না পাওয়ার কোনও কারণ নেই। তৃণমূলের অন্দরের খবর, ওই জেলার জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ আসন দু’টি কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে তারা যথেষ্ট প্রত্যয়ী। জঙ্গিপুরের বর্তমান সাংসদ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, মুর্শিদাবাদের সাংসদ মান্নান হোসেন।
মুর্শিদাবাদের অন্য দু’টি আসন দখলের ব্যাপারে প্রত্যয়ী হলেও বহরমপুর নিয়ে খুব একটা আশাবাদী ছিল না তৃণমূল। ওই আসনে ১৯৯৯ সাল থেকে টানা জিতে আসছেন অধীরবাবু। বহরমপুর পুরসভাও পরপর তিন বার বিরোধীশূন্য হওয়ায় ওই লোকসভা কেন্দ্র কার্যত ছেড়েই রেখেছিল শাসক দলের একাংশ। কিন্তু এ বারের পুরভোটে বহরমপুরের দু’টি ওয়ার্ড পাওয়ার পরে অধীরের ‘দুর্গ’ দখলে কিছুটা হলেও তৃণমূল নড়েচড়ে বসেছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। তাই আসন্ন লোকসভা ভোটে এ বার বহরমপুরকেও যে তৃণমূল হিসেবের বাইরে রাখছে না, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলল অভিষেকের সভায়।
রেল প্রতিমন্ত্রীকে ‘চাচা চৌধুরী’ বলে কটাক্ষ করেন অভিষেক। বলেন, “চাচা চৌধুরী, তোমাকে বধিবে যে, কালীঘাটে বাড়িছে সে।” নাম না করে অধীরের উদ্দেশে যুবা-নেতার হুমকি, “খুন-গুণ্ডামির ইতিহাস তোমার। লোকসভা ভোটে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না আমরা।” লোকসভার তিনটি আসন দখলই যে তৃণমূলের লক্ষ্য, তা বুঝিয়ে অভিষেকের ঘোষণা, প্রতি মাসেই তিনি বহরমপুরে আসবেন।
অভিষেকের বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করেননি অধীরবাবু। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “অপরিণত মস্তিষ্কের যুব নেতার বালখিল্য কথা নিয়ে মাথাব্যথা নেই।” |