পাঁচিল নেই স্কুলে, চিন্তায় অভিভাবকেরা
রাস্তার পাশেই স্কুল। কিন্তু সেই স্কুলে নেই কোনও সীমানা পাঁচিল। ফলে, শিশুদের স্কুলে পাঠিয়েও নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন না অভিভাবকেরা। একটি-দু’টি নয়, সীমানা পাঁচিল না থাকার এই সমস্যা জেলার প্রায় ষাট শতাংশ স্কুলে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ জানায়, এই সব স্কুলের তালিকা তৈরি করে রাজ্য স্তরে পাঠানো হয়েছে।
বর্ধমানের ৩৩০৩টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে সীমানা পাঁচিল নেই প্রায় ১৯৪৬টিতে। এই সব স্কুলের পড়ুয়ারা খেলতে খেলতে পাশের রাস্তায় চলে যায়। ফলে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেও যায়। এ ছাড়াও অভিভাবকদের অভিযোগ, বহিরাগতেরা মাঝে-মধ্যেই ঢুকে পড়ে স্কুল চত্বরে। গবাদি পশুর অবাধ যাতায়াতের ফলে চত্বর নোংরা হয়ে থাকে এই সব স্কুলে। তাই খুদে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকেরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীমানা পাঁচিলের সমস্যা সবচেয়ে বেশি কেতুগ্রাম ব্লকে। সেখানকার ৮৩টি স্কুলের মধ্যে পাঁচিল নেই ৬৯টিতে। সবচেয়ে ভাল পরিস্থিতি জামুড়িয়া ব্লকে। সেখানে ৬৫টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে ৫৭টিতে ইতিমধ্যে সীমানা পাঁচিল গড়া হয়ে গিয়েছে। খনি অঞ্চলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের অবস্থাও বেশ ভাল। সেখানকার ৪৪টির মধ্যে ৩৭টি প্রাথমিক স্কুলে পাঁচিল রয়েছে।
দুর্গাপুর শহরের রাতুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনও সীমানা পাঁচিল নেই। বাচ্চারা যখন-তখন বেরিয়ে পড়ে স্কুল থেকে। অনিতা বাউরি নামে এক অভিভাবক বলেন, “মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারি না। সব সময় মনে হয়, কোনও বিপদ ঘটবে না তো!” গলসি ১ ব্লকের মুন্সেপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে বেশ কয়েকটি পুকুর রয়েছে। অসাবধানে খেলতে খেলতে পুকুরে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে পড়ুয়াদের, জানান অভিভাবকেরা। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত স্কুলের শিক্ষকেরাও। প্রধান শিক্ষক অর্বুদ ধারা বলেন, “আমাদের স্কুলের কোনও পাঁচিল না থাকায় খুবই দুশ্চিন্তায় থাকি। ছাত্রছাত্রীদের দিকে অতিরিক্ত নজর রাখতে হয়।” তিনি জানান, পড়ুয়াদের কড়া ভাবে পুকুরের ধারে যেতে বারণ করা হয়েছে। সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে বলে জানান অর্বুদবাবু।
বিভিন্ন স্কুলে সীমানা পাঁচিল না থাকার সমস্যার কথা জানেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দেবাশিষ নাগ। তিনি বলেন, “এটি একটি বড় সমস্যা। আমরা সব খোঁজখবর নিয়ে তালিকা তৈরি করে রাজ্য স্তরে কাগজপত্র পাঠিয়েছি। শীঘ্র সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।” সর্বশিক্ষা অভিযানের জেলা প্রকল্প আধিকারিক ভাস্কর পাল জানান, অনেক সময়ে প্রয়োজনীয় জায়গা না থাকায় সীমানা পাঁচিল তৈরি করতে পারে না স্কুল। সেক্ষেত্রে বাঁশ বা দড়মার বেড়া জাতীয় কিছু দিয়ে কাজ চলতে পারে। ভাস্করবাবু বলেন, “যে সমস্ত স্কুলে সীমানা পাঁচিল তৈরির কোনও অসুবিধা নেই, সেগুলির কাজ যাতে শীঘ্র শুরু হয় সে ব্যাপারে আমরা নজর রাখছি।”
জেলার সার্বিক চিত্র
• বর্ধমান জেলায় মোট প্রাথমিক স্কুল ৩৩০৩টি
• সীমানা পাঁচিল নেই ১৯৪৬টিতে।
• সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কেতুগ্রাম ব্লকে। সেখানে ৮৩টি স্কুলের মধ্যে পাঁচিল নেই ৬৯টিতে।
• ভাল পরিস্থিতি জামুড়িয়া ব্লকে সেখানে ৬৫টি স্কুলের ৫৭টিতে পাঁচিল গড়া হয়ে গিয়েছে।
• পাঁচিল না থাকা স্কুলের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, জানায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.