|
|
|
|
|
|
|
আসছে নানা রাজ্যের নাটক |
নান্দীকার নাট্যমেলা |
শহরে সিনেমার ঋতু শেষ হয়েছে, এই বার নাটকের ঋতু শুরু। নিন্দুকেরা বলেন সরকারের সে কাল এবং একাল দু’কালেই নাটক দুয়োরানি। তাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ধামাকার পরে মিনমিনে পশ্চিমবঙ্গীয় নাট্যমেলা। কারও মতে আন্তর্জাতিক সিনেমা আনার চেয়ে নাটক আনার খরচ অনেক অনেক বেশি, সুতরাং এই পোড়া অভাবী বাংলায় সে আশা দুরাশা। তবু এই চাপান-উতোর আর তর্কের মাঝে, স্বজনে-দুর্জনে মেশা শহরের নাট্যচিত্রেই একটি জাতীয় নাট্যমেলা তিন দশক পার করতে চলল। বিনোদিনী স্মরণে ‘নান্দীকার’-এর ৩০তম জাতীয় নাট্যমেলা শুরু হচ্ছে ১৬ ডিসেম্বর অ্যাকাডেমিতে। বাংলার নাট্যচিত্রে সে মেলা এখনও একটা ব্র্যান্ড। ভারতীয় থিয়েটারের সমসময়ের বৈচিত্রের চিত্রটা বরাবরই তুলে ধরতে চেয়েছে এ মেলা। এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ১৬-২৫ ডিসেম্বর দশ দিনে আঠেরোটি নাটকের অভিনয় এ বার। অসম, দিল্লি, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, ওড়িশা, পুদুচেরি এবং অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের নাট্যদল তাদের সাম্প্রতিক প্রযোজনাগুলি মঞ্চস্থ করবে। |
|
১৬ তারিখ সন্ধে ছ’টায় উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ। উদ্বোধনী নাটক ‘নান্দীকার’-এর ‘শানু রায়চৌধুরী’। তার পরের যে তালিকা সেখানে কানহাইয়ালালের ‘দ্রৌপদী’র মতো পুরনো প্রযোজনা যেমন আছে তেমনই হবিব তনবিরের ‘চরণদাস চোর’ নতুন করে মঞ্চস্থ করছেন অসমের অনুপ হজারিকা। তবে আয়োজক দল বাদে পশ্চিমবঙ্গের আর একটি ‘গ্রুপ’ই ঠাঁই পেয়েছে এ মেলায়, হাওড়ার ‘নটধা’। এতে অবশ্য কলকাতার খালি খালি লাগার কারণ নেই। সংস্কৃতির তথাকথিত কেন্দ্রস্থলে আটকে না থেকে একেবারে বিধাননগরের পূর্বশ্রী মঞ্চে ‘সল্টলেক থিয়েটার’-এর দ্বাদশ নাট্যোৎসবে ১১-১৫ ডিসেম্বর দিব্য দেখে নেওয়া যাবে ‘কাল্লুমামা’, ‘নিঃসঙ্গ সম্রাট’, ‘স্ত্রীর পত্র’-এর মতো শহরের দলগুলির নাটক। থাকছে আয়োজক দলের প্রযোজনা ‘এই অপরাহ্ণে’ও। সঙ্গের ছবিতে পুদুচেরির থালাই-কে-কোল দলের ভি অরুমুঘম নির্দেশিত তামিল ‘মন্থিরন’ নাটকের একটি দৃশ্য।
|
নাট্যাচার্য |
‘শিশিরকুমারের পরিচয় অনেকটাই দেখি ঢাকা পড়ে রয়েছে অজ্ঞতা, অবহেলা ও অবিশ্বাসের ধূলিমলিনতায়। শিশিরপ্রতিভাকে বুঝতে না পারার জন্য যতখানি, ঠিক ততখানিই সমসাময়িকের ঈর্ষার জন্য তাঁর আবির্ভাবলগ্নেই শিশিরবাবুকে এই অজ্ঞতা, অবহেলা ও অবিশ্বাসের শিকার হতে হয়েছিল।’— লিখেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তরুণ বন্ধু ও ছাত্র হয়ে শিশিরকুমার ভাদুড়ীর খুব কাছে পৌঁছেছিলেন সৌমিত্র, নানা সময়ে নাট্যাচার্য সম্পর্কে প্রবন্ধাদি লিখেছেন তিনি। স্মৃতিবিজড়িত সে সব রচনা প্রজ্ঞায় দৃপ্ত, এবং শিশিরকুমারের প্রতিভার চমৎকার বিশ্লেষণ— বই হয়ে বেরল সম্প্রতি: শিশিরকুমার (আজকাল)। দেবব্রত ঘোষ-কৃত প্রচ্ছদে পরিমল গোস্বামীর তোলা নাট্যাচার্যের ছবি (সঙ্গে)।
|
শতবর্ষে রাধারানী |
“আমি যখন পাঁচ বছরের শিশু, তখন থেকে পাড়ার যাত্রা ও কীর্ত্তনের আসরে বসে যে গানগুলি শুনতাম— তা যতটুকু মনে পড়ত ততটুকু বাড়ীতে গাইতাম”। ‘মাসিক বসুমতী’-তে (১৩৬৬) লিখছেন রাধারানী দেবী, পরে ‘কীর্তন সম্রাজ্ঞী’ হিসেবে খ্যাত। গ্রামে হরিমাখন দাসের কাছে কীর্তনে হাতেখড়ি। পরে পঞ্চানন ভট্টাচার্য ও মঞ্জু সাহেবের কাছে তালিম নেন। তখন থেকেই বিভিন্ন আসর, বেতার, নাটক, চলচ্চিত্রে গাইতে থাকেন। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্র ও নাটকে। বহু ভাষায় পাঁচশোরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন। ‘মহিষাসুরমর্দিনী’তে প্রায় ১২ বছর গান করেন। তাঁর জন্মশতবর্ষে ১২ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটায় শোভাবাজার-সুতানুটি মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন লাহাবাড়িতে রাধারানী দেবী: শতেক বরষ পরে (সূত্রধর) বইটি প্রকাশ করবেন সুগত মারজিৎ। অনুষ্ঠানে দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দী বসু শিল্পী রাধারানী ও বাংলা গানের প্রবহমান ধারা নিয়ে বলবেন। রেকর্ড সংগ্রাহক সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় শোনাবেন রেকর্ডে রাধারানী দেবীর দুষ্পাপ্র্য গান। প্রথম ১০০টি বইয়ের সঙ্গে থাকছে হিন্দুস্থান রেকর্ডের সহযোগিতায় রাধারানী দেবীর ৬টি কীর্তনের সিডি।
|
মাঙ্গলিক |
ছেচল্লিশে পা! ১৯৬৮-র ১২ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘মাঙ্গলিক’-এর। প্রথম প্রযোজনা ছিল ‘মিছিলের মুখ’। মাঝখানে আরও কয়েকটি প্রযোজনার পরে ’৮৯-এ মঞ্চস্থ হয় সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘মানুষ ভূত’। সেই প্রযোজনার ২৫ বছর পূর্ণ হল। ‘মাঙ্গলিক’-এর জন্মদিন উপলক্ষে ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় অ্যাকাডেমি মঞ্চে অভিনীত হবে মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের ‘মল্লভূমি’। দু’দিন আগে মঞ্চস্থ হল দলের নতুন প্রযোজনা ‘এলাম ফিরে’। নাট্যগোষ্ঠীর কর্ণধার সমীর বিশ্বাস জানাচ্ছেন, ‘শত বিঘ্নের মধ্যেও ভাল ও সুস্থ নাট্যচর্চার চেষ্টা চালাতেই হবে।’
|
হাসির গান |
‘কলকাতা যে কেবল ভুলে ভরা...’ বৈঠকি চালের এমন মেজাজি হাসির গান শহরে তেমন আর কেউ লেখেন না। কে জানে, হয়তো চারি দিকে হাস্যকরের এমন ছড়াছড়ি যে আজ আর গানে নতুন করে হাসির উদ্রেক করতে হয় না। তবু বাংলা গানের ধারায় হাসির অভাব নেই। রবীন্দ্রনাথ তো আছেনই, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় দাদাঠাকুর হয়ে মিন্টু দাশগুপ্তেরও হাসির গান আছে বেশ কিছু। সে সব নিয়েই ১৫ ডিসেম্বর রবীন্দ্রসদনে অলক রায়চৌধুরীর একক অনুষ্ঠান। গান নিয়ে লেখালেখিও করেন অলক। এ দিকে রবীন্দ্রগানের আর এক উৎসব ১০-১১ ডিসেম্বর আইসিসিআর-এ। রবীন্দ্রপ্রতিকৃতি-সহ স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে সুমিত্রা সেনকে সংবর্ধিত করা হবে। গাইবেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, শ্রীকান্ত আচার্য, প্রমিতা মল্লিক, ইন্দ্রাণী সেন, শ্রাবণী সেন প্রমুখ। আয়োজনে ‘পিকাসো এন্টারটেনমেন্ট’।
|
লোকক্রীড়া |
হারিয়ে যাওয়া লোক-ঐতিহ্যের নানা খেলা এ বার কলকাতায়। রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের উদ্যোগে ১৩ ডিসেম্বর সল্টলেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের তরণী মাঝির ঘাটে আয়োজিত হয়েছে একটি মেলা ‘ডিগনিটি ২০১৩’। তিন দিনের উৎসবে থাকছে হাডুডু-দাড়িয়াবান্ধা, ডুগডুগিয়া এবং নৌকাদৌড় প্রতিযোগিতা। থাকছে কবিগান, ভাটিয়ালি, পুতুলনাটক। গান গাইবেন বিশিষ্ট শিল্পীরা। অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের বিভিন্ন দিক নিয়ে থাকছে আলোচনা। তিন দিনই অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ১১টা থেকে, চলবে সন্ধে পর্যন্ত। শেষ দিন পুরস্কার বিতরণ।
|
রূপান্তর |
কাফকা-র মেটামরফোসিস-এর সঙ্গে সুকুমার রায়ের হাতিমি, বকচ্ছপ বা গিরগিটিয়া-র কি কোনও সম্পর্ক আছে? সাম্প্রতিক সময়ে বাঙালির রূপান্তর কিংবা হাঁসজারু মূর্তির সূত্রে বিষয়টা নিয়ে ভেবেছেন শিল্পী সমীর আইচ। আর সেই ভাবনা, পেন্টিংয়ে নয়, ভাস্কর্যে ফুটিয়েছেন সমীর। এই তাঁর প্রথম একক ভাস্কর্য প্রদর্শনী ‘মেটালমরফোসিস’। মানুষের মুখে ত্রিনয়নের মতো এখানে ফুটে ওঠে ফণাতোলা সাপ (সঙ্গের ছবি), হাতের আঙুল রূপান্তরিত হয় গাছের শিকড়ে। মায়া আর্ট স্পেস গ্যালারিতে (রাজডাঙা) এই প্রদর্শনী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
|
উত্তরণ |
সমাজসেবায় দায়বদ্ধতার কথা মনে রেখেই গড়ে উঠেছিল ‘উত্তরণ’। নানা বিষয় নিয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ওঁরা কাজ করে চলেছেন শহর থেকে গ্রামে। তবে প্রতিবন্ধী কল্যাণই ওঁদের প্রধান কর্মসূচি। প্রতুলচন্দ্র রক্ষিত, সুশীলকুমার মুখোপাধ্যায়, রমেন্দ্রনাথ বসাক, এস কে মিত্র এমন কয়েকজন শিক্ষাবিদ-ডাক্তার মিলে তৈরি করেছিলেন এই প্রতিষ্ঠান। নিজেদের সীমিত সামর্থ্যেই চলেন ওঁরা, জানালেন প্রদ্যোৎ কুমার সিংহরায়। অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে গেছে বিজয়গড়ের মূক ও বধির বিদ্যালয়। তবু উদ্যম হারাননি ওঁরা। সম্প্রতি ইন্দুমতী সভাগৃহে হল ২৬তম বার্ষিক অনুষ্ঠান। ১৫ ডিসেম্বর বিকেল ৩টেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশনের সেমিনার হলে আয়োজিত হয়েছে ‘সুশীলকুমার মুখার্জি: কর্ম ও জীবন’ শীর্ষক একটি সেমিনার, তাঁর শতবর্ষ উপলক্ষে।
|
সুবর্ণজয়ন্তী |
|
আলোকচিত্র জগৎ তাঁকে চেনে ‘জগাইদা’ নামে। ফোটোগ্রাফিক অ্যাসোসিয়েশন অব দমদম-এর (পি এ ডি) দিঘা আউটিং-এ বেণু সেন নিজের ক্যামেরা দিয়ে উনিশ বছরের বিশ্বতোষ সেনগুপ্তকে ছবি তুলতে বলেছিলেন। তাঁর ছবি পরবর্তীতে বহু সম্মান কুড়োলেও ছাত্রছাত্রী তৈরির কারিগর হিসেবেই নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন তিনি। কর্মজীবন কেটেছে সি এম ডি এ-তে, সমাজ-অর্থনীতির পরিকল্পনা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজে। পরে বি পি পোদ্দার ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে অধ্যাপনা করেছেন। আলোকচিত্র নিয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন দেশে বিদেশে। এখন ব্যস্ত কম্পিউটার গ্রাফিক্সে চিত্র সৃজনে। আলোকচিত্রী জীবনের পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে তাঁকে সম্মান জানাচ্ছে পি এ ডি, ১১ ডিসেম্বর সাড়ে পাঁচটায় অবনীন্দ্র সভাগৃহে। ১১-১৩ ডিসেম্বর গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় থাকছে তাঁর চতুর্থ একক প্রদর্শনী, এই প্রথম তাঁর ‘ক্রিয়েটিভ ফোটোগ্রাফি’ দেখা যাবে সেখানে। সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে।
|
গর্বের কথা |
সংস্কৃত ও বাংলা, দুটি বিষয়েই স্নাতকোত্তরে প্রথম, তিন দশকের অধ্যাপনাজীবন কেটেছে বেথুন, কৃষ্ণনগর ও প্রেসিডেন্সি কলেজে। এরই পাশাপাশি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, সংস্কৃত সাহিত্য পরিষৎ, এশিয়াটিক সোসাইটি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজীবন যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে, পুথি চর্চা যার অন্যতম। বিশ শতকের বাঙালি মনীষার অন্যতম উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক চিন্তাহরণ চক্রবর্তী (১৯০০-১৯৭২)। বাংলা তথা ভারতের সাহিত্য, ধর্ম, সংস্কৃতি, ইতিহাস বিষয়ে ইংরেজি-বাংলায় বহু গ্রন্থ-প্রবন্ধ রচনা, বই-পত্রিকা সম্পাদনায় তাঁর পাণ্ডিত্য স্বপ্রকাশ। সোসাইটি ফর আন্ডারস্ট্যান্ডিং কালচার অ্যান্ড হিস্টরি ইন ইন্ডিয়া (শুচি) গত বছর থেকে ‘অধ্যাপক চিন্তাহরণ চক্রবর্তী স্মারক বক্তৃতা’র আয়োজন করছে। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে দ্বিতীয় বক্তৃতা: ‘ভারতীয় পুরাতত্ত্ব: কিছু প্রসঙ্গ ফিরে দেখা ও নতুন পাওয়া’, বক্তা বিশিষ্ট ভারততত্ত্ববিদ গৌরীশ্বর ভট্টাচার্য। সভাপতি রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব অধিকর্তা গৌতম সেনগুপ্ত। ভারতীয় মূর্তি ও লিপিতত্ত্বের সুখ্যাত পণ্ডিত গৌরীশ্বর ভট্টাচার্য নব্বই বছর বয়সেও আন্তর্জাতিক স্তরে সক্রিয় গবেষণায় অক্লান্ত, এটা বাঙালির কম গর্বের বিষয় নয়।
|
বই-শিল্পী |
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য। |
বই-শিল্পের জগতে তিনি স্বশিক্ষিত। অথচ এ শহরের কন্যা সুনন্দিনী বন্দ্যোপাধ্যায়েরই ডিজাইন করা গোটা দশেক বই সম্প্রতি দেখানো হল সাংহাইয়ে, ‘দ্য বিউটি অব বুকস’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে। ভারত থেকে একমাত্র তাঁর কাজই ছিল সেখানে। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন সুনন্দিনী। তার পরে? “২০০০ সালে মূলত সম্পাদনার কাজে সিগাল বুকস-এ যোগ দিই। তখন আমাদের বইয়ের বেশির ভাগের প্রচ্ছদ করতেন নবীন কিশোর। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে নিয়মিত বসতে হত প্রকাশিতব্য বইয়ের বিষয়টা নিয়ে। একদিন নবীন আমায় একটা বইয়ের প্রচ্ছদ করতে বললেন। সেই শুরু। আজ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ বই ডিজাইন করেছি। প্রথম বইটা ছিল বাদল সরকারের হট্টমালা অ্যান্ড দ্য স্ক্যান্ডাল অব ফেয়ারিল্যান্ড,’’ বললেন সুনন্দিনী। সাংহাই-এর প্রদর্শনীটির উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বের বইশিল্পীদের কাজ ও ভাবনার বিনিময়। বিশ্ব-ভাবনার নিরিখে বাংলা বইয়ের প্রচ্ছদ ও সজ্জা ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে? “আমাদের এখানেও বহু ভাল কাজ হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময়ই তা ভাল করে ছাপা হচ্ছে না। বইয়ের বাঁধাই, মলাটের কাগজ বা বোর্ড, কাগজ, চেহারা সব কিছুর উপরেই নির্ভর করে সেই প্রচ্ছদের সু-প্রকাশ। এ বিষয়ে প্রকাশকদের একটু ভাবা উচিত,” বললেন সুনন্দিনী। ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় সিগাল আর্ট গ্যালারিতে ‘বুক অব ইমেজেস’ প্রদর্শনীতে দেখা যাবে তাঁর কাজ। প্রদর্শনী চলবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, ১১-৮টা।
|
|
|
|
|
স্মরণীয় |
ধনী হয়েও তিনি দিন কাটাতেন সাধারণের মতো। সব অর্থ ব্যয় করতেন শিক্ষা, চিকিৎসা ও দারিদ্র দূরীকরণে। আসলে হাজি মহম্মদ মহসিন ছোট থেকেই দেখে এসেছিলেন দান-খয়রাত। তাই পরেও বিলাসের স্রোতে গা ভাসাননি। তাঁর জন্ম ১৭৩২-এ হুগলি শহরে। বাড়িতে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশুনোর সঙ্গে কুস্তি, অসিচালনা ও খেলাধুলো। পরে মুর্শিদাবাদে উচ্চতর শিক্ষা শেষ করে বেরিয়ে পড়েন দেশভ্রমণে। প্রথমে উত্তর ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহর, পরে যান ইরাক, মিশর, তুরস্ক, ইরানে। ২৭ বছর পরে ফিরে এসে বাকি জীবনটা মুর্শিদাবাদে কাটাবেন ঠিক করেন। কিন্তু বোন মন্নুজানের ডাকে তিনি হুগলিতে ফিরে যান। মন্নুজান নিজের জমিদারির ভার তাঁর হাতে তুলে দেন।
জীবনধারণের জন্য মহসিনের প্রয়োজন ছিল যৎসামান্য। জমিদারির আয় সামাজিক সম্পদ এবং আল্লার উপহার ভেবে তিনি শুধুই দায়িত্বটুকু পালন করতে থাকেন। সেই আয় থেকে ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে ব্যয় করেন। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে বহু লঙ্গরখানা খুলেছিলেন। ১৮১২-য় তিনি প্রয়াত হন। মন্নুজান যখন সম্পত্তি উইল করে দেন, তখন মহসিনের বয়স সত্তর। তাঁর মৃত্যুর পরও যাতে সেবামূলক কাজ চলে তা নিশ্চিত করতেই মহসিন ১৮০৬-এ সমস্ত সম্পতি ওয়াকফ্ করে একটি ট্রাস্টের অধীনে দিয়ে যান। মূল ট্রাস্ট দলিলটির ইংরেজি অনুবাদ হুগলি ইমামবারার পেছনে দেওয়ালে উৎকীর্ণ করা আছে। এই অর্থে হুগলি, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহিতে গড়ে ওঠে স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ। সম্প্রতি হাজি মহম্মদ মহসিন মেমোরিয়াল কমিটির উদ্যোগে কলকাতার ফেডারেশন হলে তাঁর মৃত্যুর দুশো বছর উদ্যাপন করা হল। |
|
|
|
|
|
|