বর্জ্য মিশে নদীর জল লাল জামুড়িয়ায়
কারখানার বর্জ্য মিশে লাল হয়ে যাচ্ছে নদীর জল। জামুড়িয়ার ইকড়া শিল্পতালুকের চারটি গ্রামের বাসিন্দারা এই অভিযোগ তুলেছেন স্পঞ্জ আয়রন কারখানার বিরুদ্ধে। এর ফলে ওই নদীর জল ব্যবহার করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
জামুড়িয়ায় সিঙ্গারন নদীর পাড়ে রয়েছে দশটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা। সেই সব কারখানার বিরুদ্ধে বহু দিন ধরেই দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ জানিয়ে আসছেন ইকড়া, শেখপুর ইত্যাদি এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, কিছু দিন ধরে কারখানার বর্জ্য মেশায় নদীর জল লাল হয়ে যাচ্ছে। ওই দু’কিলোমিটারের মধ্যে নদীর এক পাড়ে রয়েছে মাউথপুর ও মহিষাবুরি গ্রাম। অন্য পাড়ে ধসল-চৌকিডাঙা ও হুগডুবি। সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি, কারখানার দূষিত জিনিসপত্র জলে মেশায় এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আগে বর্জ্য মেশার ফলে নদীর জল কালো হয়ে যেত। কিন্তু এখন তা লাল হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপলাইন থাকলেও তাতে নিয়মিত জল মেলে না। ফলে, নদীর জলের উপরেই অনেকটা নির্ভরশীল গ্রামের মানুষজন।
লাল জল থেকেই মরা মাছ তুলছেন বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, নদীতে লাল জল বইতে শুরু করার পরপরই একটি ইটভাটায় কর্মরত কয়েকটি পরিবারের শিশু-সহ পাঁচ জন হাত-মুখ ধুয়েছিলেন সেই জলে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের স্থানীয় বাহাদুরপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছরের একটি শিশু-সহ দু’জন এখনও চিকিৎসাধীন। বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকার মানুষজন জানান, ওই ঘটনার পরে নদীতে মরা মাছ ভেসে উঠতে শুরু করে। তাঁরা ভয়ে নদীতে স্নান করতে পারছেন না।
ইকরা, শেখপুর-সহ নানা এলাকার লোকজনের অভিযোগ, কোনও স্পঞ্জ আয়রন কারখানাই দূষণের বিধি মানছেন না। কারখানার ধোঁয়া থেকে কালো গুঁড়ো উড়ছে। বাড়ির জানালা খুলে রাখলেই আসবাব থেকে শুরু করে সমস্ত জিনিসপত্রে আস্তরণ জমে যাচ্ছে। গাছের পাতা থেকে পুকুরের জল, সব কালো হয়ে গিয়েছে। পেটের রোগের প্রকোপ বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। দূষণের ফলে অসুবিধায় পড়ছে পুকুরের মাছ চাষও। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে জানানো হলে বারবার প্রতিকারের প্রতিশ্রুতি মিলেছে, কিন্তু কোনও সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আকরিক লোহা ধোয়া জল লাল রঙের হয়ে যায়। তাতে মাছ মরে যাওয়া বা রোগ ছড়ানোর কথা নয়। তবে সেই জল খেলে পেটের রোগের সম্ভাবনা থাকে। অন্য কোনও পদার্থ জলে মিশে অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দিচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস পর্ষদের। ওই এলাকার পাইপলাইনে নিয়মিত জল সরবরাহ না হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জানায়, এই সমস্যার বিষয়টি তারা জানে। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। এক স্পঞ্জ আয়রন কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, নানা যন্ত্রাংশ ধোয়ার পরে সেই জল নদীতে ফেলা হয়। কী কারণে নদীর জল লাল হয়ে যাচ্ছে, তা দেখা হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.