মেগা ম্যাচে লড়াই হল সমানে সমানে। বুধবার কিরণচন্দ্র স্মৃতি নৈশ ফুটবলের হাইভোল্টেজ ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারেই। টাই ভেঙে জয়টা অভ্যাসে পরিণত করা মহানন্দা সেমিফাইনালের পর ফাইনালও জিতে নিল উল্কার ৩ এর পাল্টা ৪ গোল দিয়ে। সেমিফাইনালে শেষ মুহূর্তের গোলে সমতা ফিরিয়েছিল মহানন্দা। এ দিন শেষ মুহূর্তের গোলে সমতা ফেরায় উল্কা। যদিও তাদের সমর্থকদের উল্লাস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মহানন্দার টালিগঞ্জ অগ্রগামী থেকে আনা গোলরক্ষক রাজু গঙ্গোপাধ্যায় একক দক্ষতায় একাধিক গোল বাঁচিয়ে দেওয়ায় উল্কার জয়ের আশার সলিলসমাধি ঘটে। তাঁর গোলরক্ষায় মুগ্ধ টুর্নামেন্ট কমিটি তাঁকে টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক তো বটেই টুর্নমেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচন করেন।
মহানন্দার কোচ রঘু নন্দী ম্যাচের পর বলেন, “আমরাই জিততাম। কিন্তু শেষ মুহুর্তের ভুলে গোল হয়ে যাওয়ায় খেলা টাইব্রেকারে গড়ায়। যদিও আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আমাদের দলে টাইব্রেকার বিশেষজ্ঞ গোলরক্ষক রাজু রয়েছে। তাই আমরাই জিতব জানতাম।” অন্যদিকে উল্কা কোচ প্রবীর মণ্ডল নিজের সিদ্ধান্তের ভুলেই ম্যাচ হারতে বলে আক্ষেপ করেছেন। বললেন, “দুই স্থানীয় স্ট্রাইকার সুরজিত দাস ও রথীন থাপাকে আগে নামালে খেলা টাইব্রেকারেই গড়াত না।” |
জয়ী মহানন্দা স্পোর্টিং। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
এ দিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে খেলা জমে ওঠে। পুরো প্রতিযোগিতায় খেলা তেমন জমছে না বলে ম্যাচের আগে আক্ষেপ করছিলেন ক্রীড়া পরিষদের এক কর্তা। এমনকী সেমিফাইনালেও সেই লড়াই দেখা যায়নি। এ দিন কিন্তু গোটা সময় ধরে দু’দলই জমাটি ফুটবল উপহার দিল। গোল হয়ত বেশি হয়নি, কিন্তু একাধিক সুযোগ তৈরি হয়েছিল। বলা ভাল সুযোগ তৈরি করেছিলেন দু’দলের খেলোয়াড়রাই। প্রথামর্ধের ২৬ মিনিটে মহানন্দার হয়ে গোল করেন সেমিফাইনালে ইনজুরি টাইমে গোল করা উজ্জ্বল হাওলাদার। সেমিফাইনালে যেখান থেকে শেষ করেছিলেন এ দিন যেন সেখান থেকেই শুরু করেন তিনি। মাঠ জুড়ে দাপিয়ে খেললেন উজ্জ্বল। ম্যাচের সেরা হিসেবে তাঁকে বাছলেও কোনও আপত্তি উঠত বলে মনে হয় না। তবে গোলটির পিছনে সমান কৃতিত্ব দিতে হবে সহ খেলোয়াড়দের। ছোট ছোট পাসে পুরো উল্কা ডিফেন্সকে বোকা বানিয়ে গোলে ঠেলে দিতে কোনও ভুল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক সুযোগ তৈরি হলেও তা কাজে লাগাতা পারেনি দু’দলই। একেবারে শেষ মুহূর্তে খেলার বয়স তখন ৬৯ মিনিট। উল্কা হারছেই ধরে কিছু সমর্থক মাঠ ছাড়তে শুরু করেন। সেই সময়ই গোল করে ম্যাচের বয়স বাড়ান নাইজেরিয় ওকোরোকো। যদিও তা কাজে লাগেনি সতীর্থেরা পেনাল্টি মিস করায়। |
এক নজরে |
ফাইনালের সেরা |
জুয়েল সানডে (মহানন্দা) |
প্রতিযোগিতা সেরা |
রাজু গঙ্গোপাধ্যায় (মহানন্দা)। |
সর্বোচ্চ গোলদাতা |
ওকোরোকো (উল্কা), সত্যেন রায় (কিশোর সঙ্ঘ),
উজ্জ্বল হাওলাদার (মহানন্দা)। ২ টি করে গোল। |
সেরা গোলরক্ষক: |
রাজু গঙ্গোপাধ্যায় (মহানন্দা)। |
মহানন্দা স্পোর্টিং ক্লাব |
রাজু গঙ্গোপাধ্যায় (গোলরক্ষক), সুপ্রিয় ভগত (অনীশ জমাদার), ইমানুয়েল, চার্লস, প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী, উজ্জ্বল হাওলাদার, কল্লোল পাল (কার্তিক কিস্কু), গৌতম ঠাকুর, আশিস হাজরা, নুর উদ্দিন (অধিনায়ক) (বিশ্বরূপ দে), জুয়েল সানডে। |
শিলিগুড়ি উল্কা ক্লাব |
বিমান ঘোষ (গোলরক্ষক), রাজু মল্লিক, কৌশিক মজুমদার, স্যামসুং, অভিজিত দাস, নিলাদ্রি চক্রবর্তী (রথীন থাপা), ধনঞ্জয় যাদব, জ্যাকসন (অধিনায়ক), ওকোরেকো, রবি বসু (সুরজিত দাস), ইক্কে। |
|