পেয়ারা বাঁচাতে বিষ মাখিয়ে পাখি খুন
পাকা পেয়ারার লোভে দিনভর বাগানে ভিড় করত পাখির ঝাঁক। খেয়ে যেত ঠুকরে। তা রুখতে বহরমপুরের বেশ কয়েকটি পেয়ারা বাগানের মালিকেরা যে পন্থা নিয়েছেন, তা জেনে সরকারি কর্তাদের চক্ষু চড়কগাছ।
ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁদের অভিযোগ, পেয়ারায় বিষ মিশিয়ে ইতিমধ্যেই বুলবুলি, শালিক, বসন্তবৌরি বা ঘুঘুর মতো অন্তত শ’খানেক পাখি মেরে ফেলা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে বাদুড়ও ভিড় করে বাগানে। বিষাক্ত পেয়েরা খেয়ে মারা গিয়েছে বেশ কিছু বাদুড়ও। বাগান মালিকদের অনেকেরই নির্বিকার যুক্তি, “খরচ করে চাষ করছি, পাখিতে ঠোকরানো ফল তো বাজারে বিক্রি হয় না। মারা ছাড়া আর উপায় কী?”
বিষফল খেয়ে মৃত বসন্তবৌরি, বুলবুলি, বাদুড়। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
বহরমপুরের বলরামপুর এলাকায় কোথাও দেড় বিঘে, কোথাও বা প্রায় পাঁচ বিঘে জমিতে পেয়ারা চাষ হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই সব বাগানগুলিতে পাখি-বাদুড়ে ঠুকরে যাওয়া পেয়ারায় বিষ মাখিয়ে প্রতি দিন পনেরো-কুড়িটি পাখি মারা হচ্ছে। আজ, বৃহস্পতিবার ওই বাগানগুলিতে সরজেমিন তদন্তে যাচ্ছেন বনকর্তারা। স্থানীয় বন বিভাগের এক কর্তা বলেন, “পাখিতে ক’টা আর পেয়েরা খায়, যে তার জন্য এ ভাবে পাখি মারতে হবে? এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।”
ঘটনাটি জেনে উদ্বিগ্ন উদ্যান পালন দফতরের উদ্যানবিদ শুভদীপ নাথ। তিনি বলেন, “এ তো খুনের সামিল! চাষিদের বোঝানোর জন্য সচেতনতা শিবির করার কথাও ভাবা হচ্ছে।” তাঁর আশঙ্কা, বাগানে পেয়ারা পাড়তে ঢোকা শিশুরাও ওই পেয়ারা খেতে পারে, তাদের কী হবে?
পাখি নিধনের ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না এক শ্রেণির পেয়ারা চাষিও। মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লকের বাগান মালিক হায়াতন নবি, বহরমপুরের এক নার্সারির মালিক বিপদভঞ্জন ঘোষেরা বলেন, “পাখিদের হাত থেকে ফলন বাঁচানোর এটা কোনও পদ্ধতি হতে পারে না। গাছের উপর দিকে মশারির জাল দিয়ে ঘিরে দিলেই ফলন রক্ষা পাবে।” শুভদীপবাবুও বলেন, “বাগানের চার কোণে পেয়ারা গাছের চেয়ে অপেক্ষাকৃত লম্বা উচ্চতায় বাঁশের ডগায় পেরেক পুঁতে বেশ কয়েকটি ঝুড়ি বেঁধে তাতে গাছের ওই পাকা পেয়ারা রেখে দিলে সমস্যা এড়ানো যাবে অনেকটাই। সহজে খাবার পেলে গাছের পেয়ারা খুঁটে খাওয়ার রেওয়াজ তাদের চলে যাবে।”
মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর মহকুমা এলাকার বিভিন্ন ব্লকে, বেলডাঙা-১ ও ২, মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লকে পেয়ারা চাষ হয়। সম্প্রতি নবগ্রামেও বেশ কয়েক বিঘা জমিতে পেয়ারা বাগান গড়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে জেলার ২৬০০ হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়। শুভদীপবাবু বলেন, “গাছের বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে ফলনের উৎপাদন। উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে পেয়ারার প্রতি পাখির আকর্ষণও বেড়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.