|
|
|
|
|
|
|
আইন আদালত |
|
আমার ঠাকুরদার মোট তিন ছেলে। বাবা ছাড়াও আরও এক কাকা ও এক জ্যাঠা। আমার জ্যাঠা গত হয়েছেন। আমার বাবা লক্ষ্মীনারায়ণ অধিকারী ১৯৭২ সালে আমাদের ছেড়ে নিরুদ্দেশ হন। এই অবস্থায় যে জ্যাঠামশাই গত হয়েছেন তিনি এবং কাকা ঠাকুরদাকে মারধর করে জোর করে তাঁর সম্পত্তি ‘দানপত্র’ করে লিখিয়ে নেন। এখন আমি কী ভাবে ‘বাবার সম্পত্তি’ আইন অনুযায়ী ফেরত পেতে পারি?
রঞ্জিৎ অধিকারী
উত্তর দেওয়ার আগে আপনার প্রশ্নটা আমি একটু সাজিয়ে নিচ্ছি।
আপনার মূলত তিনটি বক্তব্য রয়েছে\
১) আপনার বাবা লক্ষ্মীনারায়ণ অধিকারী ১৯৭২ সালে আপনাদের ছেড়ে নিরুদ্দেশ হন।
২) আপনার ঠাকুরদার মোট তিন ছেলে। আপনার বাবা ছাড়াও আরও দু’জন। অর্থাৎ আপনার এক কাকা ও এক জ্যাঠা। সেই জ্যাঠা মারা গিয়েছেন।
৩) এই অবস্থায় আপনার অভিযোগ, আপনার যে জ্যাঠামশাই গত হয়েছেন, তিনি এবং আপনার কাকা আপনার ঠাকুরদাকে মারধর করে তাঁকে দিয়ে জোর করে তাঁর সম্পত্তি লিখিয়ে নেয়। অর্থাৎ ‘দানপত্র’ করিয়ে নেন।
এখন আপনি জানতে চাইছেন যে, কী করে ‘বাবার সম্পত্তি’ আইন অনুযায়ী ফেরত পাবেন।
আপনাকে জানাই, সম্পত্তিটা কিন্তু আপনার বাবার নয়। আপনার ঠাকুরদার। কোনও অবস্থাতেই আপনার ঠাকুরদার সম্পত্তি আপনার বাবা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হননি। আপনার বাবা ১৯৭২ সাল থেকে নিরুদ্দেশ। তা ছাড়া, আপনার ঠাকুরদা ‘দানপত্র’-র মাধ্যমে তাঁর সম্পত্তি আপনার কাকা ও জ্যাঠাকে দান করে দেন। অর্থাৎ আইন অনুযায়ী আপনার ঠাকুরদার সম্পত্তি পেয়ে গেলেন আপনার কাকা ও জ্যাঠা।
একটা কথা আপনি বলেননি যে, আপনার ঠাকুরদা বর্তমানে জীবিত কি না? বা গত হয়ে থাকলে কত দিন আগে গত হয়েছেন।
দ্বিতীয় কথা, কত দিন আগে দানপত্রটা করা হয়েছে? একটা কথা মনে রাখবেন, সম্পত্তিটা যদি আপনার ঠাকুরদার হয়, তা হলে তিনি তাঁর ইচ্ছামতো কাউকে দান করতেই পারেন। তবে আপনি বলছেন যে, আপনার ঠাকুরদাকে দিয়ে জোর করে দানপত্র লেখানো হয়েছে। কিন্তু ‘জোর করে, মারধর করে’ সই করানো হয়েছে, এমন কী প্রমাণ আপনার কাছে আছে?
তা ছাড়া, জোর করে দানপত্র করানো হয়ে থাকলে আপনার ঠাকুরদা পরে অভিযোগ দায়ের করেননি কেন? আর কত দিন আগে দানপত্র করানো হয়েছে সেটাও আপনি বলেননি। যদি অনেক দিন আগে হয়ে গিয়ে থাকে, এবং ঠাকুরদা বর্তমানে বেঁচে না-থাকেন, তা হলে কিন্তু এত দিন বাদে ‘আপনার ঠাকুরদাকে দিয়ে জোর করে, মারধর করে দানপত্র করানো হয়েছে’ এই অভিযোগ টেকানো মুশকিল। আর আপনার ঠাকুরদা বেঁচে থাকলে তিনি কোনও অভিযোগ করছেন না, অথচ আপনারা অভিযোগ করছেন! এই ব্যাপারটাও আদালতে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। কাজেই, এই পরিস্থিতিতে ঠাকুরদার সম্পত্তি আপনারা পাচ্ছেন না বলেই ধরে নিতে হবে।
|
(আইনি পরামর্শ জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়) |
|
|
 |
|
|
