|
|
|
|
|
|
আধার পেরিয়ে |
লাগবেই? না কি না-হলেও চলবে? এখনও ছবিই তো তোলা হয়নি। কী হবে সময়ে কার্ড না-পেলে?
তথ্য নেওয়া কবেই সারা। কিন্তু কার্ড কই? আধার আর তার হাত ধরে গ্যাস সিলিন্ডারে সরাসরি
ভর্তুকির এমন অজস্র প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বসলেন দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত |
গোড়াতেই বিষয়টা স্পষ্ট করে নেওয়া ভাল।
কেন্দ্র চাইছে, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির ফাঁক-ফোকর বন্ধ করতে। আর সে জন্য ভর্তুকি দিয়ে কম দামে সিলিন্ডার বিক্রির পদ্ধতি বন্ধ করতে চাইছে তারা। তার থেকে বরং সেই ভর্তুকির টাকা সরাসরি পৌঁছে দিতে চাইছে গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ইতিমধ্যেই এই ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার ফর এলপিজি কনজিউমার (ডিবিটিএল) পদ্ধতি চালু হয়েছে দেশের প্রায় দেড়শো জেলায়। ওই তালিকায় রয়েছে এ রাজ্যের চার জেলা— কলকাতা (শুধু কলকাতা পুলিশ কমিশনারের আওতাধীন এলাকা), হাওড়া, কোচবিহার ও হুগলি। গত ১ নভেম্বর থেকে ডিবিটিএল পদ্ধতি চালু হয়েছে প্রথম তিন জেলায়। হুগলিতে ১ ডিসেম্বর থেকে।
এই পদ্ধতির প্রথম ও প্রধান শর্তই হল গ্যাস সিলিন্ডারের গ্রাহক হিসেবে আধার কার্ড (বা নিদেনপক্ষে আধার নম্বর) থাকতেই হবে আপনার। থাকতে হবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। শুধু থাকলেই হবে না। নিজের আধার নম্বর-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিতে হবে গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কাছে। যাতে প্রথমে বাজার দরে কিনলেও পরে ওই আধার নম্বরের ভিত্তিতে প্রাপ্য ভর্তুকির টাকা পৌঁছে যায় আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
কিন্তু সমস্যা হল, আধার কার্ড বা নম্বর হাতে পাননি, এমন মানুষের সংখ্যা এই চার জেলায় এখনও প্রচুর। কারও ছবি তোলা হয়েছে, কিন্তু কার্ড পাননি। কেউ আবার বুঝে উঠতে পারেননি কোথায় ছবি তুলতে হবে। অথচ এখনও পর্যন্ত গ্যাস সংস্থাগুলির যা বক্তব্য, তাতে ৩১ জানুয়ারির পর প্রথম তিন জেলায় আধার ছাড়া গ্যাসে ভর্তুকি পাওয়া অসম্ভব। ফলে বিস্তর ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বিষয়টি নিয়ে।
|
|
এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি এক অন্তর্বর্তী রায়ে জানিয়েছে, গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকির মতো সামাজিক প্রকল্পে সুবিধা পেতে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক হতে পারে না। ফলে অনেকেই ভেবেছেন, তা হলে বোধহয় মাঝপথেই বন্ধ হয়ে গেল আধার ভিত্তিক ভর্তুকি। যে কারণে হাতে আধার নম্বর থাকা সত্ত্বেও এখনও তা ডিস্ট্রিবিউটর বা ব্যাঙ্কের কাছে জমা করেননি তাঁরা।
তার উপর ১ জানুয়ারি থেকে মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহেও সরাসরি ভর্তুকির এই প্রকল্প চালু হওয়ার কথা।
রায় চূড়ান্ত নয়
মনে রাখবেন, আধার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় কিন্তু চূড়ান্ত নয়। এ নিয়ে শুনানি এখনও চলছে। ফলে শীর্ষ আদালত চূড়ান্ত রায় দিলে, তবেই বোঝা যাবে যে, শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে তাদের অবস্থান কী দাঁড়াল।
তবে অন্তত এই লেখা প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে কিন্তু আধার-ভিত্তিক ভর্তুকি প্রকল্প আদৌ বাতিল হয়নি। বরং কেন্দ্র এবং গ্যাস সংস্থাগুলি দেশ জুড়ে তা চালু করতে একবগ্গা। সারা দেশেই সরাসরি ভর্তুকির প্রকল্প দ্রুত চালু করতে চায় তারা। সুতরাং বিষয়টি আগাগোড়া জেনে রাখা ভাল।
শুরুর কথা
• আধার কী? আধার হল ১২-সংখ্যার একটি বিশেষ নম্বর। পাঁচ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রত্যেক নাগরিকের জন্য একটি করে আধার নম্বর তৈরি করছে যোজনা কমিশনের অধীন ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই)। এ জন্য ছবি তোলার পাশাপাশি চোখের মণি স্ক্যান করা হয়। নেওয়া হয় হাতের দশ আঙুলের ছাপ। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে এ রাজ্যে এই বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের মূল দায়িত্ব জাতীয় জনগণনা দফতরের। এই তথ্যের ভিত্তিতেই প্রত্যেকের জন্য আলাদা ১২ সংখ্যার নম্বর বরাদ্দ করা হয়। এবং ওই নম্বর দিয়েই তৈরি হয় আধার কার্ড। কেন্দ্রের দাবি, ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা মিলবে এই আধার নম্বরের ভিত্তিতে। যার প্রথম বড় পদক্ষেপ হিসেবে সরাসরি ভর্তুকির প্রকল্প চালু করেছে তারা।
• ভর্তুকির সিলিন্ডার: নিয়ম হল, বাড়িতে ব্যবহারের জন্য (ডোমেস্টিক) কোনও আর্থিক বছরে (ধরুন, ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত) গ্রাহক সর্বাধিক ৯টি সিলিন্ডারে ভর্তুকি পেতে পারেন। বর্তমানে কলকাতায় যার দাম ৪১২.৫০ টাকা। তার বেশি (দশম সিলিন্ডার থেকে) কিনতে গেলেই বাজার দর (কলকাতায় এখন যা ১,০৪৭ টাকা) গুনতে হবে। সাধারণত এই দর প্রতি মাসেই সংশোধন করে গ্যাস সংস্থাগুলি। এলাকার ভিত্তিতে সিলিন্ডারের বাজার দরও কিছুটা আলাদা।
• সরাসরি ভর্তুকি: গত ১ জুন থেকে ধাপে ধাপে সরাসরি ভর্তুকির প্রকল্প চালু করতে শুরু করেছে কেন্দ্র। এ রাজ্যের তিন জেলায় তা শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর থেকে। নতুন নিয়মে যেখানে ডিবিটিএল পদ্ধতি চালু হচ্ছে, সেখানে ভর্তুকির সিলিন্ডারও প্রথমে বাজার দরেই কিনতে হবে গ্রাহককে। তার পর আধার নম্বরের ভিত্তিতে ওই ভর্তুকির টাকা সরাসরি জমা পড়বে আপনার অ্যাকাউন্টে (নীচের চার্ট দেখুন)।
• আমি এর আওতায়?
মনে রাখবেন, এই প্রকল্প চালু হলে আপনি তার আওতায় আসবেন কি না, তা কিন্তু বাসস্থানের নিরিখে ঠিক হবে না। বরং তা নির্ভর করবে আপনার ডিস্ট্রিবিউটরের অবস্থানের উপর। যদি তাঁর দোকান প্রস্তাবিত এলাকার মধ্যে হয়, তা হলে আপনার জন্যও এই প্রকল্প চালু। ধরা যাক আপনি কলকাতা পুলিশের এলাকার বাইরে থাকেন (মনে করুন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা এলাকায়)। কিন্তু আপনার ডিস্ট্রিবিউটরের দোকান কলকাতা পুলিশের এলাকায়। সে ক্ষেত্রে কিন্তু ওই পরিষেবা আপনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আবার বাড়ি ও ডিস্ট্রিবিউটরের দোকান দুই-ই সল্টলেকে হলে, আপনি আপাতত এর বাইরে।
আধার আছে। এ বার?
• কনজিউমার নম্বরের সঙ্গে আপনার আধার নম্বর দু’জায়গায় জানান—
(১) গ্যাস সংস্থা।
(২) যে-ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে আপনার ভর্তুকির টাকা জমা পড়বে, তাদের। জেনে নিন, ওই শাখায় কোর ব্যাঙ্কিংয়ের সুবিধা আছে তো?
গ্যাস সংস্থাকে কী ভাবে?
সংস্থাকে আধার নম্বর জানানোর উপায়:
• ডিস্ট্রিবিউটরের দোকান থেকে আবেদনপত্র নিয়ে ভর্তি করে তা সেখানে কিংবা সংশ্লিষ্ট সংস্থার এরিয়া অফিসে জমা দিন। আবেদনপত্র ডাউনলোড করতে পারেন সংস্থার ওয়েবসাইট থেকেও।
• মোবাইল থেকে আইভিআরএস পদ্ধতিতে যে-নম্বরে গ্যাস বুক করেন, সেখানে আধার-নম্বর নথিভুক্তিরও ‘অপশন’ রয়েছে। ফোনে দেওয়া নির্দেশ মেনে নিজের কনজিউমার নম্বরের সঙ্গে তা নথিভুক্ত করতে পারেন।
• ফোন করতে পারেন ১৮০০-২৩৩৩-৫৫৫ টোল-ফ্রি নম্বরে। সেখানে আধার নম্বর জানান কল সেন্টার কর্মীর মাধ্যমে।
• সংস্থার নম্বরে পাঠাতে পারেন এসএমএস-ও।
• অনলাইনেও দু’ভাবে আধার নম্বর জানানো সম্ভব:—
(১) সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওয়েবসাইটে যান। নাম নথিভুক্ত (রেজিস্টার) করুন। তার পর নির্দেশ মেনে এগোন।
(২) http://rasf.uidai.gov.in ওয়েবসাইটে যান। ‘start now’ (স্টার্ট নাউ) বোতাম টিপে নির্দেশ মেনে এগোতে থাকুন। |
|
আর ব্যাঙ্ক?
• আধার নম্বর জানাতে গ্যাস সংস্থার মতো ব্যাঙ্কেরও নির্দিষ্ট ফর্ম রয়েছে। তা পূরণ করে ব্যাঙ্কের কাছে জমা দিন। দিতে পারেন ডিস্ট্রিবিউটরের কাছেও।
• মনে রাখবেন, আপনার সেভিংস-অ্যাকাউন্ট (যেখানে ভর্তুকি জমা পড়বে) যে কোনও ব্যাঙ্কের যে কোনও শাখাতেই থাকতে পারে। কিন্তু প্রতি জেলায় এই আধার নম্বর নথিভুক্তির বিষয়টি দেখতে একটি ব্যাঙ্ককে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যাকে বলা হচ্ছে লিড ব্যাঙ্ক। অর্থাৎ, আপনি ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে আধার সংক্রান্ত তথ্য জমা দিলে, তা প্রথমে লিড ব্যাঙ্কের কাছে জমা পড়বে। তার পর (আলাদা হলে) তা যাবে আপনার ব্যাঙ্কে।
• যে চার জেলায় ডিবিটিএল পদ্ধতি চালু হয়েছে, সেখানকার লিড ব্যাঙ্ক হল:
কলকাতা: স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া
হাওড়া: ইউকো ব্যাঙ্ক
কোচবিহার: সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া
হুগলি: ইউকো ব্যাঙ্ক
• যদি একাধিক অ্যাকাউন্টে আধার নম্বর দেওয়া থাকে, তা হলে তাদের মধ্যে শেষ যে অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়েছে, ভর্তুকি আসবে সেখানেই।
সময়সীমা
কোনও এলাকায় সরাসরি ভর্তুকির পদ্ধতি যে দিন থেকে চালু হবে, তার তিন মাসের মধ্যে নিজের আধার নম্বর ডিস্ট্রিবিউটর ও ব্যাঙ্কের কাছে নথিভুক্ত করতে হবে গ্রাহককে। অর্থাৎ, ১ নভেম্বর থেকে ডিবিটিএল প্রকল্প চালু হওয়া কলকাতা, হাওড়া ও কোচবিহারে এই সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। হুগলিতে ২৮ ফেব্রুয়ারি।
শুধু নম্বর জানালেই হবে না। তা সংস্থা ও ব্যাঙ্কের রেকর্ডে নথিভুক্তও হতে হবে। তবেই এই সুবিধা মিলবে।
বুঝব কী করে?
নথিভুক্তি হয়েছে কি না বোঝার সহজ উপায় হল—
• সংস্থার ওয়েবসাইটে যান। সেখানে রয়েছে ‘ট্রান্সপারেন্সি পোর্টাল’। সেখানে কনজিউমার নম্বর দিন। নির্দেশ মতো এগোতে থাকুন।
• দেখুন দু’টি বিভাগ রয়েছে। একটি গ্যাস সংস্থার। অন্যটি ব্যাঙ্কের। প্রতিটিতেই একটি করে গোল বোতামের মতো চিহ্ন আছে। তার রং সবুজ মানে, নথিভুক্তি সারা। আর লাল মানে তা এখনও হয়নি। তার মানে, দুই বোতামেরই রং সবুজ হলে তবেই ভর্তুকি অ্যাকাউন্টে পৌঁছবে।
• তবে সরাসরি ব্যাঙ্কের শাখা ও ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে গিয়েও খোঁজ নিতে পারেন। |
অগ্রিম আর ভর্তুকির ফারাক জানেন তো? |
• নিয়ম অনুযায়ী, একটি আর্থিক বছরে সর্বাধিক ৯টি সিলিন্ডারে ভর্তুকি পেতে পারেন আপনি।
• প্রথম সিলিন্ডার বুকিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে অগ্রিম হিসেবে ৪৩৫ টাকা জমা পড়বে আপনার অ্যাকাউন্টে। যাতে বাজার দরে সিলিন্ডার ডেলিভারি নেওয়ার সময়ে পুরো টাকা আপনাকে পকেট থেকে গুনতে না-হয়।
• মনে রাখবেন, ওই টাকা কিন্তু ভর্তুকি নয়। ফলে তার অঙ্ক প্রাপ্য ভর্তুকির (বর্তমান হিসাব অনুযায়ী কলকাতায় যা প্রায় ৬৩৩ টাকা) সঙ্গে না-মিললে ঘাবড়াবেন না। একই সঙ্গে জেনে রাখুন, ওই টাকা কিন্তু অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে এক বারই। আধার পদ্ধতিতে প্রথম বার গ্যাস বুকিংয়ের পর।
• এ ছাড়া, প্রতি বারই সাধারণত সিলিন্ডারের দাম মেটানোর দিন কয়েকের মধ্যে ভর্তুকির টাকা জমা পড়বে অ্যাকাউন্টে।
• সুতরাং প্রথমে যে-অগ্রিম (৪৩৫ টাকা) জমা পড়েছিল, তা আসলে থেকেই যাচ্ছে আপনার অ্যাকাউন্টে। অন্তত যতদিন আপনি সংস্থা বা সংযোগ না-বদলাচ্ছেন। আর ভর্তুকির টাকা প্রতিবার সিলিন্ডারের দাম মেটানোর পর হাতে পাচ্ছেন আপনি। |
|
|
যদি নম্বরই না-থাকে?
অনেকেরই এই সমস্যা রয়েছে। মনে রাখবেন, যদি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আধার নম্বর আপনার হাতে না-আসে কিংবা তা নথিভুক্ত করা না-হয়, তা হলেও সিলিন্ডার মিলবে। কিন্তু তা কিনতে হবে বাজার দরে।
এরপর যখন আধার নম্বর সংস্থা ও ব্যাঙ্কের খাতায় নথিভুক্ত হবে, তখন ন’টির কোটার মধ্যে বাকিগুলির জন্য ভর্তুকির টাকা অ্যাকাউন্টে পাবেন। কিন্তু সময়ে নম্বর জমা না-পড়ায় যে ক’টি গ্যাস বাজারদরে কিনেছেন, তার ভর্তুকি আর পাওয়া যাবে না।
আধার নিয়ে আঁধারে
যদি আধার কার্ড এখনও না-করিয়ে কিংবা না-পেয়ে থাকেন, তা হলে এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন—
• বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের শিবির চালুর মূল দায়িত্ব জাতীয় জনগণনা দফতরের। কোথায় কবে এই শিবির হবে, তা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জানানোর কথা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনেরই।
• এ ছাড়া শিবিরে নাম নথিভুক্তির জন্য খোঁজ নিতে পারেন—
(১) জেলার ক্ষেত্রে: ডিএম, এসডিও, বিডিও বা গ্রাম পঞ্চায়েতের সহায়ক /এগ্জিকিউটিভ অ্যাসিট্যান্টের দফতরে।
(২) কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার জন্য: কমিশনারের দফতর, বরো অফিসে।
(৩) অন্যান্য পুরসভায়: এগ্জিকিউটিভ অফিসারের দফতরে।
• তা ছাড়া গ্যাসের দোকানেই শুধুমাত্র গ্রাহকদের জন্য এই শিবির চালুর চেষ্টা চলছে। কলকাতায় তা আপাতত পিছোলেও মাঝ ডিসেম্বরে কোচবিহারে তা চালু হওয়ার কথা। তবে পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
ছবি তুলেও কার্ড পাইনি
আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য সংগৃহীত হয়েছে। অথচ আধার কার্ড পাননি। কিংবা হয়তো জানেনই না সেই আধার নম্বর তৈরি হয়েছে কি না। সে ক্ষেত্রে—
• আধার কর্তৃপক্ষের দফতরে ১৮০০-৩০০-১৯৪৭ টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করতে পারেন। রাঁচিতে এদের আঞ্চলিক দফতরও রয়েছে।
নম্বর: ০৬৫১-৬৪৫০৪৮৪
ই-মেল: roranchi.helpdesk@gmail.com
• এ ছাড়া, কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট http://uidai.gov.in- এ গিয়েও নিজের আধার স্টেটাস দেখতে পারেন। সেখানে জানতে পারবেন আধার নম্বর তৈরি হয়েছে কি না। সরাসরি http://resident.uidai.net.in-এ গিয়েও তা দেখতে পারেন।
নম্বর তৈরি, কার্ড নেই
এলাকায় সরাসরি ভর্তুকি চালু হয়ে গিয়েছে। অথচ আধার কার্ড পাননি। এই অবস্থায় হয়তো ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখলেন যে, আপনার আধার নম্বর তৈরি। সে ক্ষেত্রে ওই ই-আধার কার্ড ডাউনলোড করুন। সরকার তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ডাউনলোডের জন্য www.uidai.gov.in ওয়েবসাইটের রেসিডেন্ট পোর্টালে (resident portal) যান। ই-আধার অপশনে ক্লিক করুন। যে-সব তথ্য সেখানে চাওয়া হবে, তা পূরণ করে নির্দেশ মেনে এগোলেই ই-আধার ডাউনলোড করে প্রিন্ট নিতে পারেন।
আরও তিন
আরও তিনটি বিষয় অনেকেই জিজ্ঞাসা করছেন। সেগুলিও এখানে খোলসা করে নেওয়া ভাল—
• ধরুন, আপনি এখন যেখানে আছেন, সেটি ডিবিটিএল এলাকাভুক্ত। ফলে আধারের মাধ্যমে সরাসরি ভর্তুকির সুবিধা পাচ্ছেন। কিন্তু কর্মসূত্রে বা বাড়ি বদলে এমন জায়গায় গেলেন, যেখানে ওই পরিষেবা এখনও চালু হয়নি। তখন সেখানে প্রাপ্য ভর্তুকির সিলিন্ডার পুরনো নিয়মেই পাবেন।
• ডিবিটিএল প্রকল্প এলাকায় গ্রাহকের মৃত্যু হলে, পরিবারের অন্য কোনও সদস্যের নামে সংযোগ হস্তান্তরের বন্দোবস্ত করতে হবে। সরাসরি ভর্তুকির সুবিধা পেতে তাঁর আধার নম্বরও কিন্তু গ্যাস সংস্থা ও ব্যাঙ্কের কাছে নথিভুক্ত থাকা জরুরি।
• অনেকে আবার জানতে চান পুরনো আধার কার্ড থাকলেও সরাসরি ভর্তুকির সুবিধা মিলবে কি না। এ প্রসঙ্গে বলি, ২০১১ থেকে ২০১২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আধার কর্তৃপক্ষ (ইউআইডিএআই) নিজেরাই পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, ডাকঘর ও জীবন বিমা অফিসে শিবির করে অনেকের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করেছিল। সেই ভিত্তিতে তাঁদের আধার নম্বর এবং কার্ডও ইস্যু করে তারা। পরে তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব বর্তায় জনগণনা দফতরের উপর। ফলে এখন রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি পেতে সেই কার্ড বা নম্বর চলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে গ্যাস সংস্থা এবং ইউআইডিএআই স্পষ্ট জানাচ্ছে, ওই আধার নম্বর বা কার্ড দিয়েও এখন গ্যাসে সরাসরি ভর্তুকির সুবিধা মিলবে।
তবে একই সঙ্গে জনগণনা দফতর জানিয়েছে, তাদের তথ্যভাণ্ডারেও আলাদা করে নাগরিকদের বায়োমেট্রিক তথ্য থাকা জরুরি। তাই পুরনো কার্ড বা নথিভুক্তির রসিদ নিয়ে শিবিরে আসতে বলছে তারা। অবশ্য রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির সঙ্গে এই প্রক্রিয়ার কোনও যোগ নেই। |
|
|
|
|
|