একশো দিনের প্রকল্পে নদী সংস্কার, উঠছে প্রশ্ন
কশো দিনের কাজের প্রকল্পে নদী সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছে নদিয়া জেলা প্রশাসন। তাতে প্রায় ২৫ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি হবে। বরাদ্দ করা হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। কিন্তু এতে নদীর নাব্যতা বাড়বে কি না তা নিয়ে সংশয়ে বিশেষজ্ঞ মহল।
প্রাথমিক পর্যায়ে অঞ্জনা ও যমুনা নদী সংস্কারের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ৫১৭টি জলাশয়ও সংস্কার করা হবে। প্রকল্পের নাম ‘সুজলা নদিয়া’। প্রশাসন সূত্রের খবর, শুধু অঞ্জনা নদী সংস্কারের জন্য প্রতি ২ হাজার ৩ শো ৭৩ মিটার খনন করতে খরচ হবে প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা। শ্রমদিবস তৈরি হবে প্রায় ২৫ লক্ষ। আর ৫১৭টি জলাশয় খনন করার জন্য খরচ হবে প্রায় ৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। প্রায় ৪ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি হবে। জল থাকার কারণে যমুনা নদীতে মাটি কাটার কাজ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে।
অঞ্জনা নদীতে কাজ চলছে। সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।
জেলাশাসক পি বি সালিম বলেন, “একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার গুরুত্বপূর্ণ নদী ও জলাশয়গুলোকে সংস্কার করা হবে। তাতে কর্মদিবসের পাশাপাশি সম্পদও সৃষ্টিও হবে। সেচ ও জলপথ পরিবহণ উন্নয়ন দফতর এবং নদী গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগিতায় এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করা হচ্ছে।”
তবে ১০০ দিনের কাজে নদী ও জলাশয় সংস্কার করা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অঞ্জনা নদী নিয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করছেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সঞ্জিত দত্ত। তিনি বলেন, “দেখতে হবে প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্যটা কী? নদী সংস্কার, নাকি ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মানুষকে কাজের সুযোগ করে দেওয়া। আমার মনে হয়েছে, নদীটি সামগ্রিক ভাবে সংস্কার না করলে কোনও লাভ হবে না। বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে কিছু শ্রমদিবস তৈরি হবে ঠিকই। কিন্তু নদীর বহমানতা ফিরবে না।” সঞ্জিতবাবু বলেন, “শহরের ভিতরে উৎসমুখ আগে দখল মুক্ত করে সংস্কার করতে হবে।”
অঞ্জনা ও যমুনা ওই দুটি নদীরই উৎস মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অঞ্জনা নদীর বিভিন্ন এলাকা জবর দখল হয়ে গিয়েছে। খোদ কৃষ্ণনগর পুরসভা এলাকাতে সেই জবর দখলের পরিমাণ সব থেকে বেশি। শহরের ভিতরে ৬ কিলোমিটার এই নদী কোথাও সরু খাল আবার কোথাও বা নর্দমার চেহারা নিয়েছে। সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার যিশু দত্ত বলেন, “২০০০ সালের বন্যার সময় জল সরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে অঞ্জনা। এই নদীর জবর দখল হয়ে থাকা এলাকাগুলোও দখলমুক্ত করা দরকার।”
নদী বিশেষঞ্জ কল্যাণ রুদ্র বলেন, “অঞ্জনা নদীর বহু জায়গা জবর দখল হয়ে রয়েছে। অথচ বন্যার জল বহন করার জন্য এই ধরনের নদীগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা নদীর আংশিক সংস্কার করে বিশেষ লাভ হবে না। তাছাড়া দেখতে হবে ওই বিপুল পরিমান মাটি কাটার পর সেই মাটি কোথায় রাখা হচ্ছে। নদীর পাড়ে রাখলে সেই মাটি বৃষ্টির জলে ধুয়ে আবার নদীতেই নেমে আসবে।”
প্রশ্ন উঠছে, যাঁরা এই নদী দখল করে বাড়ি-ঘর তৈরি করেছেন কিংবা চাষআবাদ করছেন তাঁদের সরিয়ে নদী সংস্কার করা কী আদৌ সম্ভব? জেলাশাসক পি বি সালিম বলেন, “নদীকে দখল মুক্ত করার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।”
রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সারা রাজ্যের পঞ্চায়েত এলাকায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে সেচ দফতর যেখানে যেখানে সম্ভব নদী ও খাল সংস্কার করবে। সারা রাজ্যে এরকম প্রায় ৫০টি নদী ও খাল চিহ্নিত করা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.