রাজ্যের বিপিএল তালিকা সংস্কারে অপেক্ষা তথ্যের
শ্চিমবঙ্গে এখন গ্রামীণ জনসংখ্যার ২৮% মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে (বিলো পভার্টি লেভেল, সংক্ষেপে বিপিএল)। রাজ্য সরকার বিপিএল-তালিকায় নথিভুক্তির ওই হার বাড়িয়ে অন্তত ৫০ শতাংশ করতে চায় বলে শুক্রবার বিধানসভার বাইরে জানিয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
এ জন্য বিপিএল-তালিকা সংস্কার ও পরিমার্জন করতে হবে। প্রকৃত দরিদ্র যে বিপুল সংখ্যক মানুুষ তালিকার বাইরে রয়ে গিয়েছেন, আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার ভিত্তিতে তাঁদের নাম সেখানে তুলে আনতে হবে। তবে সরকার চাইলেও যে এটা করে ওঠা খুব সহজ হবে না, সুব্রতবাবু তা মেনে নিয়েছেন। মন্ত্রীর যুক্তি, দারিদ্র্য সীমারেখা নির্ধারণে কেন্দ্রীয় সরকার যে মাপকাঠির নিরিখে সমীক্ষা চালায়, তাতে বহু পরিবারকেই এর আওতায় আনতে বিলক্ষণ সমস্যা হবে।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী এ দিন বিধানসভায় এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, রাজ্যের সব জেলায় আর্থ-সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষার তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হলেও দিল্লির কাছ থেকে মাত্র আটটি জেলার (কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি ও বীরভূম) তথ্য প্রকাশের অনুমোদন মিলেছে। শিগগিরই তা প্রকাশ করা হবে। বাকি জেলাগুলোর তথ্য প্রকাশিত হবে কেন্দ্রীয় অনুমোদন আসার পরে। পশ্চিমবঙ্গের বিপিএল-তালিকা কবে প্রকাশিত হবে, এ দিন পঞ্চায়েতমন্ত্রীর কাছে তা জানতে চেয়েছিলেন এসইউসি বিধায়ক তরুণকান্তি নস্কর।
সুব্রতবাবুর জবাবের পরে তরুণবাবু বিপিএল কার্ড শুদ্ধিকরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর দাবি, “গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বহু গরিবের বিপিএল কার্ড নেই। অথচ দোতলা-তিনতলা বাড়ি, এমন বহু পরিবারের বিপিএল কার্ড রয়েছে!”
এবং এ প্রসঙ্গে তরুণবাবুকে সমর্থন করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বিধানসভায় জানান, তরুণবাবুর সঙ্গে তিনি একমত। “এপিএল (দারিদ্রসীমার উপরের) পরিবারগুলোকে বিপিএল দিয়েছে, আর বিপিএল পরিবারদের কিছু দেয়নি।” অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর আক্ষেপ, “বিপিএল কার্ড বিলিতে পুরোটাই বৈষম্য হয়েছে।” বিষয়টিকে ‘ভয়ঙ্কর’ হিসেবে অভিহিত করে মমতা বলেন, গরিব মানুষ বিপিএল কার্ড দেখালে নিখরচায় চিকিৎসা পায়। “রাজ্যের বহু গরিব মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না, কারণ তাঁদের বিপিএল কার্ড নেই। যার সব আছে সে সব পাবে, আর যার কিছু নেই সে কিছু পাবে না! এটাই কি হ্যাভস আর হ্যাভস নট নীতি?” অধ্যক্ষের দিকে তাকিয়ে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এবং এ সবের জন্য রাজনৈতিক সংকীর্ণতাকে দায়ী করেছেন মমতা। ক্ষোভ প্রকাশ করে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এ রাজ্যের জঞ্জাল সাফ করতে গেলে পঞ্চাশ বছর লেগে যাবে! খাদ্য দফতরকে লাখ লাখ ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করতে হচ্ছে।” তাঁর হিসেবে, এ যাবৎ সওয়া ৭৭ লক্ষ রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে, আরও হবে। “রেশন দোকান থেকে গরিবের চাল-ডাল-চিনি-তেল বেরিয়ে গিয়েছে। কোথায় গিয়েছে? কে পেল?” প্রশ্ন মমতার। বামফ্রন্টকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, “এর পরেও ওরা বড় বড় কথা বলে! ওদের উচিত ছিল, দশ বছর মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে চুপ করে থাকা। বলা উচিত ছিল, অন্যায় করেছি, অন্যায় করেছি, মুখ দেখাব না।”
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়ে দেন, বিপিএল কার্ড না-পাওয়া পর্যন্ত গরিবেরা যাতে চিকিৎসার সুযোগ পান, গ্রামোন্নয়ন দফতর সে দিকে নজর রাখবে। “গরিব মানুষ যাতে কোনও ভাবে বঞ্চিত না হয়, তা দেখা সরকারের দায়িত্ব। রাজ্য সরকার সেই কাজ করবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.