|
|
|
|
পুরপ্রধান পদে প্রণবেই আস্থা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সব ঠিকঠাক থাকলে মেদিনীপুর পুরসভার পরবর্তী পুরপ্রধান প্রণব বসু।
শুক্রবার কলকাতায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে মেদিনীপুর পুরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে দলের এক সভা হয়। জানা গিয়েছে, সেখানে দলনেত্রীই মেদিনীপুরের পুরপ্রধান হিসেবে প্রণববাবুর নাম ঘোষণা করেন। প্রণববাবু বলেন, “দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি কৃতজ্ঞ।” তাঁর সংযোজন, “আগামী দিনে আরও উন্নত পুর-পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করব। শহরকে আরও সুন্দর ভাবে সাজাব।”
|
প্রণব বসু। —নিজস্ব চিত্র। |
বস্তুত, মেদিনীপুরে এ বার তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে ‘নতুন মুখ’ই বেশি। দলের জয়ী ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনের পুর-প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। এঁরা হলেন প্রণব বসু, শিপ্রা মণ্ডল, শ্যামল ভকত এবং রাধারানি বেরা। বাকি ৯ জনই নতুন। পুরনোদের মধ্যে প্রণববাবু আবার দীর্ঘ দিনের কাউন্সিলর। প্রথম ভোটে দাঁড়ান ১৯৮৮ সালে। এই নিয়ে তিনবার পুরভোটে জয়ী হলেন। বাকি তিনজন ২০০৮ সালের পুরভোটে প্রথম দাঁড়ান। জয়ীও হন। বিগত পুরবোর্ড ছিল কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের দখলে। ২০০৮ থেকে ’১৩ টানা পাঁচ বছর জোট পরিচালিত পুরবোর্ডের পুরপ্রধান ছিলেন প্রণববাবু। মাঝে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এসেছে। তবে, তাও তিনি পদচ্যুত হননি। অনাস্থার ভোটাভুটিতে পরাজিত হলেও পুরপ্রধান নির্বাচনের ভোটাভুটিতে নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করেছেন।
খুব স্বাভাবিক ভাবেই এ বার ভোটের ফল প্রকাশের পর শহরের পরবর্তী পুরপ্রধান কে হবেন, সেই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন বিদায়ী পুরপ্রধানই। তবে, জল্পনা তৈরি হয়েছিল অন্য জায়গায়। সামনে এসেছিল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। কেমন? জেলা রাজনীতিতে মুকুল রায়-শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের মধ্যে ‘মতবিরোধ’ রয়েছে। তা আর গোপনও নেই। প্রণববাবু শুভেন্দু-অনুগামী বলেই পরিচিত। অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, জেলা সভাপতি দীনেন রায় মুকুল-অনুগামী বলেই পরিচিত। |
|
ঝাড়গ্রামের ভাবী পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব। |
এ বার দলের যাঁরা পুর-সদস্য হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মুকুল-অনুগামীই বেশি। পুরভোটের আগে তৃণমূল যেমন দলের কোনও ইস্তেহার প্রকাশ করেনি, তেমন কে পুরপ্রধান পদপ্রার্থী হবে, তা-ও খোলসা করেনি। এক জেলা নেতার কথায়, “এ বার যেহেতু কোনও মতে শেষ রক্ষা হয়েছে, বোর্ড গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় আসন সংখ্যা জুটেছে (২৫টির মধ্যে ১৩টি), সেহেতু প্রণববাবুর কপাল খুললেও খুলতে পারে। সে ক্ষেত্রে সমস্ত ‘মতবিরোধ’ দূরে সরিয়ে রেখে বিদায়ী পুরপ্রধানকেই পরবর্তী পুরপ্রধান করা হতে পারে। যাতে বিরোধীদের কাছে কোনও সুযোগের দরজা না-খুলে যায়!”
শুক্রবারের সভার পর দেখা যাচ্ছে, ওই নেতার মতই ঠিক। সমস্ত ‘মতবিরোধ’ দূরে সরিয়ে রেখে বিদায়ী পুরপ্রধানকেই পরবর্তী পুরপ্রধান হিসেবে মনোনীত করল তৃণমূল। আর সেই নামটা ঘোষণা করলেন
স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
শুক্রবারের সভার পর প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা সদ্য নির্বাচিত প্রার্থী নাজিম আহমেদকে প্রশ্ন করা হয়, বিরোধী শিবির থেকে কী কারও নাম পুরপ্রধান হিসেবে প্রস্তাব করা হবে? নাজিমবাবুর মন্তব্য, “অনেক সময় পড়ে রয়েছে। এত তাড়াতাড়ি কিছু বলা সম্ভব নয়। আমরা পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করছি।” সদ্য নির্বাচিত অন্য এক বিরোধী প্রার্থী আবার বলছেন, “দ্য বল হ্যাজ স্টার্টেড রোলিং!”
এ দিনের সভায় উপ-পুরপ্রধান এবং পুরপ্রধান-পারিষদের (সিআইসি) নাম ঘোষণা হয়নি। |
|
|
|
|
|