যাত্রাপথে চ্যালেঞ্জের সামনে মঙ্গলযান। একই সঙ্গে সুযোগ বিরল কৃতিত্ব অর্জনেরও। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, আজ, শনিবার গভীর রাতে পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে পাঠানো হবে মঙ্গলযানকে। পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের টান ছাড়িয়ে মহাকাশযানকে বাইরে পাঠানোটা কঠিন বলেই বিজ্ঞানীরা জানান। তাঁরা বলছেন, এর আগে পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে পাঠানোর সময় চিন ও জাপানের মহাকাশযান ভেঙে পড়েছিল। ব্যর্থ হয়েছিল তাদের মঙ্গল অভিযান। তাই শনিবার রাতের অভিযান সফল হলে, বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হবেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা।
গত ৫ নভেম্বর শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে পিএসএলভি রকেট দিয়ে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল মঙ্গলযানকে। তার পর থেকে ২৫ দিন পৃথিবীর চারপাশে পাক খেয়েছে সে। এই সময়েই পাঁচ বার ধাপে ধাপে পৃথিবী থেকে দূরত্বও বাড়ানো হয়েছে তার। কাটিয়েছে অনেক বাধা-বিপত্তি। পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের মধ্যেই, পৃথিবীকে ঘিরে রয়েছে তেজস্ক্রিয় কণার ফিতে ‘ভ্যান আলেন রেডিয়েশন বেল্ট’। সেই সুদীর্ঘ পথ পেরোতে গিয়ে কী পরিণতি হবে মঙ্গলযানের, তা নিয়েও দুশ্চিন্তা ছিল নানা মহলে। ইসরো অবশ্য বরাবরই আশ্বাস দিয়েছিল, ভ্যান অ্যালেন বেল্টকে সামলাতে বর্ম পরিয়েই তারা মঙ্গলযানকে অভিযানে পাঠিয়েছে। আজ সে প্রসঙ্গে ইসরো জানিয়েছে, মঙ্গলযান সফল ভাবেই ওই তেজস্ক্রিয় কণার পথ পেরিয়েছে।
শুক্রবার ইসরোর মুখপাত্র বি আর গুরুপ্রসাদ বলেন, “শনিবার রাত ১২টা ৪৯ মিনিটে মহাকাশযানের ইঞ্জিন চালু করা হবে। ২৩ মিনিট ধরে চালু থাকবে সেটি। তাতেই গতিবেগ বাড়িয়ে পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে চলে যাবে মঙ্গলযান।
একটি উপবৃত্তাকার পথ ধরে সে রওনা দেবে লাল গ্রহের উদ্দেশে।” বিজ্ঞানীরা জানান, ২৩ মিনিট ধরে ইঞ্জিন চালু থাকার পর মঙ্গলযানের গতিবেগ দাঁড়াবে ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটারের কাছাকাছি। এই গতিবেগের ফলেই পৃথিবীর ‘মায়া’ কাটিয়ে মহাকাশে বেরোতে পারবে সে।
ইসরো জানিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে মঙ্গলের দিকে রওনা দেওয়ার পর আরও প্রায় ৩০০ দিন লাগবে মহাকাশযানের। ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর লাল গ্রহের কক্ষপথে পৌঁছনোর কথা তার। মঙ্গলের কক্ষপথে মহাকাশযানকে ঠিকঠাক প্রতিস্থাপন করানোটাও কঠিন কাজ বলে বিজ্ঞানীরা জানান।
|