পাক সীমান্তের চেয়েও দিল্লির বড় চিন্তা বাংলাদেশ সীমান্তই
পূর্ব থেকে পশ্চিম দেশের সীমান্ত নিয়ে দুশ্চিন্তায় মনমোহন-সরকার।
পূর্বে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই অশান্ত হয়ে উঠছে সেখানকার পরিস্থিতি। স্বভাবতই পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বের বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে দিল্লির কর্তাদের কপালে ভাঁজ। আবার পশ্চিমের পাক সীমান্তে প্রধান চিন্তা জঙ্গি অনুপ্রবেশ ও পাক সেনার অতিসক্রিয়তা। আসন্ন লোকসভা ভোট ও চলতি বিধানসভা ভোট বানচাল করতে জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে রাজ্য পুলিশের ডিজি-দের ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তবে মোটের ওপর পাক সীমান্তের চেয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষার কাজটাই আপাতত বেশি কঠিন বলে মনে করছেন বিএসএফ কর্তারা।
এর একটা কারণ অবশ্যই কাঁটাতারের বেড়ার অভাব। পাকিস্তান লাগোয়া পশ্চিম সীমান্তের ৯৫ শতাংশ অংশেই কাঁটাতার রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার রয়েছে মাত্র ৭৫ শতাংশ অংশে। বিএসএফের ডিজি সুভাষ জোশীর বক্তব্য, “বাংলাদেশে জানুয়ারিতে নির্বাচন আসছে। তাই পূর্ব সীমান্ত নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।” স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশের ভোটের আগে দেশ জুড়ে নাশকতা ও হিংসার পরিকল্পনা নিয়েছে জামাতে ইসলামি। বিভিন্ন ভাবে তার আঁচ এসে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের মতো বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্যগুলিতে। অনুপ্রবেশ বাড়বে, ভারতে সন্ত্রাস আমদানির ঘটনাও বাড়বে। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশি সেনাবাহিনী নেমে দুষ্কৃতীদের কড়া হাতে দমন শুরু করলে তারাও অনেকে পালিয়ে এসে ভারতে গা ঢাকা দিতে চাইবে।
বিএসএফ-কর্তারা তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বাংলাদেশ সীমান্তে ৫ থেকে ১০ শতাংশ বাড়তি জওয়ান মোতায়েন করা হবে। বিএসএফ শীর্ষ সূত্রের খবর, পূর্ব সীমান্তে এখন প্রায় ৮০ হাজার জওয়ান মোতায়েন রয়েছেন। আরও অন্তত ৫ হাজার জওয়ান মোতায়েন করা হচ্ছে। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন মিটে গেলেই সেখানে মোতায়েন জওয়ানদের সীমান্তে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বিএসএফের এডিজি (পূর্বাঞ্চল) বংশীধর শর্মা বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভাল। কাজেই যা করার, তা দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একসঙ্গে মিলেই করবে। আমরা সমন্বয় রেখে নজরদারির মাত্রা বাড়াচ্ছি। সীমান্তে বিজিবি-র সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকও হচ্ছে।”
বাংলাদেশের বিজিবি-র ওপর ভরসা রাখলেও পাক ভূখণ্ডে যারা সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে, সেই রেঞ্জার্সের উপর এতটা ভরসা নেই এ দেশের কর্তাদের। পাক কর্তৃপক্ষ মুখে যে অন্তত সীমান্তে শান্তি রাখার কথা বলছেন, আপাতত তাতেই আস্থা রাখছেন তাঁরা। রেঞ্জার্সদের সঙ্গে বৈঠক করতে বিএসএফের ডিজি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল আগামী মাসে পাকিস্তানে যাচ্ছে।
সীমান্ত লাগোয়া কাশ্মীরের গ্রামগুলিতে বারবার পাক সেনার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন সাম্প্রতিক কালে চিন্তা বাড়িয়েছে দিল্লির। এই পরিস্থিতিতে জম্মু-কাশ্মীরের পাক সীমান্তে কাঁটাতারের পিছনে পাকা বাঁধ তৈরির প্রস্তাবে সায় দিয়েছে মনমোহন সরকার। পাঁচ বছর ধরে ঝুলে ছিল এই প্রস্তাবটি। বিএসএফের ডিজি বলেন, “অক্টোবর মাসে পাকিস্তানের দিক থেকে বহু বার ভারী গোলাবর্ষণ হয়েছে। এক জওয়ান নিহত হয়েছেন। আমরা তার যোগ্য জবাবও দিয়েছি। পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করার জন্য কাঁটাতারের পিছনে ১৭৯ কিলোমিটার দীর্ঘ উঁচু বাঁধ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।” এত দিন কিছু কিছু অংশে মাটির কাঁচা বাঁধ ছিল। পাকিস্তানের দিক থেকে গোলা বা রকেট ছোড়া হলে তাতেই আটকে যেত। কিন্তু এখন যে ভাবে বেশি ওজনের গোলা ছোড়া হচ্ছে, তার জন্য কোনও ফাঁক না রেখে একটানা পাকা বাঁধ তৈরি হবে। আপাতত জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। বাঁধ তৈরির জন্য সীমান্ত লাগোয়া কয়েকটি গ্রামকেও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। জোশী জানান, অনুপ্রবেশ রুখতে আরও বেশি প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। নজরদারির জন্য এ দেশেই তৈরি চালকবিহীন বিমান ‘নেত্র’-কে কাজে লাগানো হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.