সীমান্তে কাঁটাতারের ও পারে ভারতীয় ভূখন্ডের জমির ধানের গোলায় আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সোমবার গভীর রাতে রায়গঞ্জ থানার বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কয়লাডাঙ্গি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ সীমান্ত পেরিয়ে আসা দুষ্কৃতীরাই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। কয়লাডাঙ্গি মৌজার ১৫ বিঘা জমির কেটে রাখা ধানের দুটি গোলা আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছে, ২০০ মন ধান আগুনে পুড়ে গিয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের নজরদারি থাকার পরেও কীভাবে ঘটনাটি ঘটল সে প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপ প্রধান মনসুর আলির নেতৃত্বে কৃষকদের একাংশ সীমান্ত লাগোয়া বিএসএফের ১৩৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের দফতরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। বিএসএফের ১৩৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কমান্ড্যান্ট বংশী লাল বলেন, “ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রুখতে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের জওয়ানদের সঙ্গে বৈঠক করে বেড়ার ও পারে থাকা ভারতীয় ভূখন্ডের জমিতে নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে। বিএসএফের নজরদারি তো থাকছেই।” সিপিএম পরিচালিত বিন্দোল পঞ্চায়েতের প্রধান চাঁদিমা রায় জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।
বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ১২ কিলোমিটার জুড়ে আর্ন্তজাতিক সীমান্ত রয়েছে। কয়লাডাঙ্গি, মননগর ও বহর সংসদের ১১ হাজার কৃষক সীমান্তের কাঁটা তারের ওপারে থাকা ভারতীয় ভূখন্ডের প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমিতে ধান, গম, ভুট্টা ও সর্ষের চাষ করেন। মূল সীমান্ত থেকে প্রায় ৭০০ মিটার আগে কাঁটাতারের বেড়া থাকায় ৫ হাজার বিঘা জমি কাঁটাতারের ও পারে থেকে গিয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমানা বরাবর কোনও কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় সীমান্ত পেরিয়ে দুষ্কৃতীদের ভারতীয় ভুখন্ডে চলে আসার ঘটনা প্রায়শই ঘটে বলে বিএসএফ সূত্রে অভিযোগ হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ধান কাটার পরে একসঙ্গে জড়ো করে নিয়ে আসা হয়। ধান কাটা শুরু হওয়ার পরে কিছুদিনের জন্য জমিতেই গোলা ঘর তৈরি করে ধান রাখা বয়। সোমবার রাতে ওই ধরনের দুটি গোলায় দুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। কয়লাডাঙ্গির বাসিন্দা মহম্মদ আলি ও মোক্তার হোসেন বলেন, “রবিবার ৭৫ মন আমন কাটার পর জমিতে গোলা তৈরি করে ধান রেখেছিলাম। আরও ধান কেটে একসঙ্গে নিয়ে আসার কথা ছিল। তার আগেই এই ঘটনা ঘটায় আমরা চরম ক্ষতির শিকার হলাম।” |