বাবা ও ঠাকুর্দা ছিলেন গায়ক। কুষাণ গানে তাঁরা ছিলেন গিদাল অর্থাৎ মূল গায়ক। কামেশ্বর রায়ের সঙ্গীতশিক্ষার হাতে খড়ি বাবার হাতে। যখন বয়স ছয় কিংবা সাত তখন ঝুমুরযাত্রার দলে গান গেয়ে সঙ্গীত সরণিতে প্রবেশ। সেই সরণি সমৃদ্ধ হয়েছে ভাওয়াইয়া, যাত্রা, কুষাণ, পালটিয়া, চোর চুন্নীলোক সঙ্গীতের এমনই সব আঙ্গিকে। গান গাওয়ার পাশাপাশি সুর দিয়েছেন, গানও লিখেছেন। এখনকার প্রতিষ্ঠিত বহু গায়ক-গায়িকা তাঁর থেকে তালিম নিয়েছেন। গ্রামাফোন থেকে কমপ্যাক্ট ডিস্ক বন্দি করেছেন নিজের কণ্ঠস্বর। জলপাইগুড়ির লক্ষ্মীরহাটের সীমানা পেরিয়ে গিয়ে গান শুনিয়ে এসেছেন সিকিম, কলকাতা-দিল্লি-পটনা-অসমে। লোকসঙ্গীতের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় তিন ডেসিমেল জমি দান করেছেন তিনি। সেই জমিতে তৈরি হয়েছে মুক্তচিন্তা লোকসঙ্গীত অ্যাকাডেমি। কামেশ্বরবাবু বলেছেন, “সাধনাটাই হারিয়ে গেছে। স্বাভাবিক ভাবে লোকগান প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে। লোকসঙ্গীতের মূল চিন্তাধারা থেকে সরে যাচ্ছি। এ ভাবে চলতে থাকলে কালের বিবর্তনে মাটির গন্ধভরা সেই সঙ্গীত হয়তো এক দিন হারিয়ে যাবে। অ্যাকাডেমির উদ্দেশ্য, উত্তরবঙ্গের এ সম্পদ সংরক্ষণ করা। অর্থের অভাবে এ কাজ করা হচ্ছে না।” কামেশ্বরবাবুর আশা, সাধারণ মানুষ উদ্যোগী হলে এ সম্পদ সংরক্ষিত হবে। |