|
|
|
|
পুরপ্রধান নিয়ে জল্পনা ঝাড়গ্রামে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
ভোটপর্ব মিটেছে। তিন দশকের ‘লাল দুর্গ’ গুঁড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু, জল্পনার অবসান হচ্ছে কই? এ বার অরণ্যশহরের পরবর্তী পুরপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই একাধিক নাম নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন ঝাড়গ্রাম পরিবারের উত্তরপুরুষ তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক দুর্গেশ মল্লদেব। সঙ্গে আরও দু’টি নাম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এক জন তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম শহর সভাপতি প্রশান্ত রায়। অন্য জন হলেন পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা আনন্দমোহন পণ্ডা। তিন নেতার অনুগামীরা ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তদ্বির শুরু করেছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
পুরভোটের আগে দুর্গেশবাবুকে পুরপ্রধান হিসেবে তুলে ধরে প্রচার করেছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীর একাংশ। দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশ ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন, পরবর্তী পুরপ্রধান হচ্ছেন দুর্গেশবাবু। এ বার পুরভোটের প্রার্থী-তালিকা থেকে শুরু করে প্রচার ও গণনার দিন পর্যন্ত সবেতেই দুর্গেশবাবুর একটা প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁকে সুনজরে দেখেন বলে অন্দরের খবর। পুরভোটের গোড়া থেকে দুর্গেশবাবু বলে আসছিলেন, দলনেত্রীকে তিনি বাম-শূন্য পুরবোর্ড উপহার দেবেন। |
|
মেদিনীপুর শহরে এখনও ভোটের সাজ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
অরণ্য শহর একেবারে বাম-শূন্য হয়নি ঠিকই, তবে ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টিই তৃণমূলের দখলে এসেছে। মাত্র ১টি ওয়ার্ড গিয়েছে বামেদের (সিপিআই) দখলে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী পুরপ্রধান সিপিএমের প্রদীপ সরকারকে পরাজিত করার ক্ষেত্রেও দুর্গেশবাবুর রাজনৈতিক বিচক্ষণতা কাজে লেগেছে বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি। কারণ, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী ঘনশ্যাম সিংহের মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে ঝাড়গ্রাম রাজ পরিবারের এই উত্তরসূরির ভূমিকা ছিল।
দীর্ঘ দিনের কাউন্সিলর, তৃণমূলের শহর সভাপতি প্রশান্ত রায়ের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিও বেশ উজ্জ্বল। পেশায় আইনজীবী আপাদমস্তক ভদ্রলোক প্রশান্তবাবুর রাজনীতির ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা রয়েছে। প্রশান্তবাবুর অনুগামীদের দাবি, প্রশান্তবাবুও পুরপ্রধান হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। অন্য দিকে, ৭৩ বছরের প্রবীণ আনন্দমোহন পণ্ডার পুরনো ওয়ার্ডটি এ বার মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় ওয়ার্ড বদল করে তিনি সিপিএমের শক্তি ঘাঁটিতে ঘাসফুল ফুটিয়েছেন। ফলে, এই দৌড়ে তিনিও রয়েছেন।
উপপুরপ্রধান কে হবেন, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। দুর্গেশবাবু যদি পুরপ্রধান হন, তাহলে তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী প্রার্থী ঘনশ্যাম সিংহ অথবা ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী প্রার্থী লক্ষ্মী সরেন উপপুরপ্রধান পদে বসতে পারেন। আবার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সিংহ সবচেয়ে বেশি ভোটের (১২৩২) ব্যবধানে বাম প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন। সেক্ষেত্রে শিউলিদেবী উপপুরপ্রধান হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধান কে হবেন, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। শীঘ্রই এ বিষয়ে রাজ্য ও জেলাস্তরে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|