সদ্য বিখ্যাত ছেলের ধাত্রীভূমিতে ম্যাচ। বুধবার গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে ছেলে নামছেনও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। কিন্তু টিম হোটেলে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মহম্মদ শামির বাবাকে যে এমন বিপাকে পড়তে হবে, কে জানত!
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাঁকে হোটেলের বাইরে ঠায় দাঁড় করিয়ে রাখল বেশ কিছুক্ষণ, টিম ম্যানেজার সতীশ বিভ্রান্ত হয়ে ম্যাচ অবজার্ভারকে অনুরোধ করলেন পুলিশের এসপি-র সঙ্গে কথা বলতে এবং শেষ পর্যন্ত বাবা তৌসিফ আহমেদকে ‘উদ্ধার’ করতে নেমে আসতে হল স্বয়ং শামিকে। যা নিয়ে রাতে যত না বিরক্ত, তার চেয়ে বেশি অবাক শোনাল তৌসিফের গলা।
ঠিক কী হয়েছিল?
মঙ্গলবার ছেলের সঙ্গে দেখা করবেন বলে শামির (যাঁর জন্ম আদতে উত্তরপ্রদেশের সহসপুরে) ছোটবেলার কোচ বদরুদ্দিন এবং আরও দু’তিন জনকে নিয়ে কানপুর আসেন তৌসিফ। দুপুর তিনটে নাগাদ টিম হোটেলে ঢুকতে গেলে বিপত্তিটা বাঁধে। ততক্ষণে প্র্যাকটিস শেষ করে টিম ইন্ডিয়া হোটেলে ঢুকে পড়েছে। ওই অবস্থায় শামির বাবা হোটেলে ঢুকতে গেলে তাঁকে আটকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে দেয় পুলিশ। প্রায় আধঘণ্টা। রাতে কানপুর থেকে ফেরার পথে তৌসিফ ফোনে বলছিলেন, “বারবার বলছিলাম যে শামি আমার ছেলে। ওর ছোটবেলার কোচ এখানে আছেন, আমরা ওর সঙ্গে দেখা করব। কিন্তু কেউ কোনও কথাই শুনছিল না। যত বলছিলাম, পুলিশ তত পাল্টা বলছে ও সব জানি না। ঢোকা যাবে না। শামি এসে পরে নিয়ে গেল।”
শোনা গেল, উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ‘অত্যাচারে’ শুধু শামির বাবা নন, টিম ইন্ডিয়াকেও নাকি সমান ভুগতে হচ্ছে! অভিযোগ উঠেছে, যত্রতত্র ধোনিদের ছবি তোলার হুড়োহুড়ি নিয়ে। হোটেলের লবিতে তো বটেই এমনকী ড্রেসিংরুমে ক্রিকেটারদের দাঁড় করিয়েও নাকি ছবি তুলে যাচ্ছে পুলিশ। যা নিয়ে ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুন পর্যন্ত বিরক্ত। সংগঠকদের নাকি বলেও দিয়েছেন যে পুলিশ অর্ধেক করে দিতে হবে। ক্রিকেটের পরিকাঠামোর খবরও যা পাওয়া যাচ্ছে, আতঙ্কতি হওয়ার মতো। একে তো সোম ও মঙ্গল পরপর দু’দিন টিকিট কাউন্টারে দর্শকদের ভিড় সামলাতে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে পুলিশকে। এ দিন আবার উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার অফিস পর্যন্ত তাড়া করেছিল কিছু টিকিট-প্রত্যাশী দর্শক। যে কারণে সেখানেও একপ্রস্ত লাঠি চালানো হয়। কানপুরের ম্যাচ অবজার্ভার তথা সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে ফোনে বলছিলেন, “এত দিন পরে ম্যাচ হচ্ছে বলে এত সমস্যা। পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা লেগে যাচ্ছে দর্শকদের। ছবি তোলার হুড়োহুড়িতে ক্রিকেটারদের অসুবিধাও হচ্ছে।”
আরও আছে। গত চার বছরে কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ পায়নি কানপুর। শেষ টেস্ট ২০০৯ সালে। শেষ ওয়ান ডে তারও এক বছর আগে। এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ ওয়ান ডে ম্যাচের সূচি ঘোষণার পরেও কোনও পিচ কিউরেটর ঠিক করা যায়নি। স্থানীয় কিউরেটর দিয়ে নাকি কাজ চালানো হচ্ছিল। শেষে দিন পাঁচেক আগে উড়িয়ে আনা হয়েছে রাজস্থানের পিচ কিউরেটর তাপস চট্টোপাধ্যায়কে। ঘনিষ্ঠমহলে তাপসবাবু বলে দিয়েছেন, পিচ মোটামুটি একটা দাঁড় করিয়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু আউটফিল্ড নিয়ে গ্যারান্টি নেই। রাত পর্যন্ত যা খবর, মাঠের বিভিন্ন জায়গা এবড়ো-খেবড়ো হয়ে আছে। ড্রেসিংরুমের অবস্থা যা শোনা গেল, মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়।
প্লেয়ারদের বসার ব্যবস্থা বলতে ডেকরেটরের চেয়ার। থার্ড আম্পায়ারের ঘরে এখনও ঠিভি বসেনি। ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে যাওয়ার করিডোরের কাজ এখনও অসম্পূর্ণ।
কে বলবে, বুধবার এখানেই ম্যাচ শুরু, সকাল ন’টা থেকে!
|
আজ টিভিতে
তৃতীয় এবং শেষ ওয়ান ডে তে মুখোমুখি ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
(স্টার স্পোর্টস ১, সকাল ৯টা) |