রাজা লিয়র, ম্যাকবেথ...
এ বার ওথেলো
বেনেটোলার কার্তিকচন্দ্র ভট্টাচার্যের বাড়িতে হাওড়ার ব্যাঁটরার এক নাট্যসম্প্রদায় অভিনয় করছে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’। অনুবাদে নাম হয়েছে ‘প্রভাবতী’। কলকাতা ১৮৭০, বাংলা থিয়েটার তখন শতক ছুঁইছুঁই। তার পরে ন্যাশনাল থিয়েটার, গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটার, ক্ল্যাসিক থিয়েটার ও গিরিশচন্দ্র ঘোষ... বঙ্গরঙ্গমঞ্চে শেক্সপিয়রের নাটক অভিনীত হয়েছে বহু বহু বার। এবং কখনও নিছক শেক্সপিয়রের নাটক অভিনয়ের চেয়েও জরুরি মাত্রা পেয়েছে সমসাময়িক রাজনীতির প্রেক্ষিতে। ২৬ জুন ১৯৭৫ দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষিত হয়, ২৭ সেপ্টেম্বর পিপলস লিটল থিয়েটার রবীন্দ্রসদনে উত্‌পল দত্তের নির্দেশনায় অভিনয় করল ম্যাকবেথ। এ প্রসঙ্গে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক সাক্ষাত্‌কারে উত্‌পল বলেছিলেন, ‘ম্যাকবেথ-এর চেয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বেটার প্লে হতে পারে না। ... কিন্তু আমরা জানতাম যে, এটা যে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী-র এমারজেন্সির বিরুদ্ধে নাটক সেটা ধরার মতো বুদ্ধি কংগ্রেসিদের নেই।’ সেই ধারা আজও অব্যাহত।
এই সে দিনও মিনার্ভা রেপার্টরি-র ‘রাজা লিয়র’ চলেছে রমরম করে। তার পরে কৌশিক সেনের ‘ম্যাকবেথ’। সে নাটকে সমসাময়িক রাজনীতির প্রসঙ্গ সরাসরি এসে পড়ায় বিতর্কও তৈরি হয়েছে। এ বার গৌতম হালদার করছেন ‘ওথেলো’। বললেন, ‘শেক্সপিয়ার প্রযোজনার তালিকায় এ বছরে আমার নির্দেশিত ওথেলো একদম শেষতম নাম। আমার ইচ্ছে ছিল ইয়েগোর চরিত্রে অভিনয় করার। কিন্তু শেষপর্যন্ত ওথেলো করছি।’ ইয়াগোর কথা ভেবেছিলেন কি বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ক্যালিগুলা’-য় নায়কের চরিত্রে অভিনয় করছেন বলে? গৌতম বলছেন, ‘তা হতে পারে। ইয়েগোর সঙ্গে ক্যালিগুলার বিনাশী ইচ্ছের কিছুটা হলেও সাদৃশ্য রয়েছে। পরে ভেবে দেখলাম ওথেলো দ্য মুরের মধ্যে যে একটা প্রিমিটিভ ফোর্স আছে সেইটাকে ধরাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জটা নিতে ইচ্ছে করল।’ ওথেলো-র প্রথম অভিনয় ২৮ তারিখ সন্ধে সাড়ে ছটায় গিরিশ মঞ্চে, নয়ে নাটুয়া-র প্রযোজনায়। সঙ্গে তারই একটি দৃশ্যে ওথেলো গৌতম হালদার ও ডেসডিমোনা দ্যুতি হালদার।

সই-মেলা
আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহের যামিনী রায় গ্যালারিতে গত কাল সই-মেলা বই-মেলা ২০১৩ উদ্বোধন করলেন অমলাশংকর। তিন দিনের এই উত্‌সবের আয়োজক ‘সই’, নবনীতা দেবসেন যার সভানেত্রী, যেখানে বন্ধুত্বের বাঁধনে জড়িয়ে আছেন সারা ভারতের মহিলা লেখকরা। মেয়েদের লেখা, সম্পাদিত, প্রকাশিত বই ছাড়াও মেলায় কেনা ও দেখার জন্য রয়েছে বাংলার মেয়েদের হাতে আঁকা ও ক্যামেরায় তোলা ছবি, তাঁদের তৈরি ভাস্কর্য। ২০০০ সালের ৩০ নভেম্বর জন্ম নিয়েছিল সই। টিনএজার হওয়ার আনন্দ ভাগ করে নিতে এ বার শুরু হল একটি সাহিত্য পুরস্কার: ‘সই সম্মান’। প্রথম বারের পুরস্কার মরাঠি সাহিত্যিক ঊর্মিলা পওয়ার এবং ইংরেজি ভাষার লেখিকা শশী দেশপান্ডে-র হাতে তুলে দিলেন মহাশ্বেতা দেবী। ভারতের নানা প্রান্তের ১১ জন লেখিকার উপস্থিতিতে ‘সই সাবুদ’ পত্রিকার ২০১৩-র সই সম্মান সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। জমজমাট মেলায় গল্প-কবিতা-নাটক পড়ছেন মহিলা কবি, শিল্পী, অভিনেতা। পরস্পরকে জানাচ্ছেন আপন জীবনের বিচিত্র সব কাহিনি। বলছেন, কেন লেখেন। বলছেন মেয়েবেলার ভয়েদের কথা। আলোচনা চলছে একক মাতৃত্বের সুখদুঃখ নিয়ে। আগামী কাল বিশেষ বিতর্ক: ‘সই’-এর প্রয়োজন নেই। থাকবেন সাহিত্য, প্রকাশনা ও সংবাদজগতের বিশিষ্টরা।

সুররসিক
বাবা চণ্ডীচরণ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন একাধারে ক্রীড়াসম্পাদক ও সঙ্গীত সমালোচক। আট বছর বয়স থেকে তাঁরই হাত ধরে সঙ্গীতের আসরে যাওয়া শুরু আশিস চট্টোপাধ্যায়ের। বাড়িতে বাবার কাছে আসতেন ভীমসেন জোশী, বিলায়েত খানের মতো শিল্পী। গানের এই আবহাওয়ায় শুনে শুনেই তৈরি হল গানের কান, হয়ে উঠলেন ‘সুররসিক’ সঙ্গীত সমালোচক। চার দশকেরও বেশি আনন্দবাজার পত্রিকা ও দেশ-এ মূলত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সমালোচনা করেছেন। বহু শিল্পীর জীবনীও লিখেছেন। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের বহু প্রথিতযশা শিল্পীর ঘনিষ্ঠ আশিসবাবু চলে গেলেন ৭৩ বছর বয়সে। রয়ে গেল তাঁর লেখালিখি, সঙ্গীতের দীক্ষিত মেধা বিরল হয়ে আসা এই শহরে।

ঐতিহ্য
কলকাতার ঐতিহ্য রক্ষার আন্দোলনে ঐতিহাসিক নিশীথরঞ্জন রায়ের নাম ওতপ্রোত। অনেক ঐতিহ্য হারিয়েও যা টিকে রয়েছে, তার পিছনে তাঁর ভূমিকা বড় কম নয়। এই উদ্দেশ্যেই তিনি গড়ে তোলেন ‘সোসাইটি ফর প্রিজারভেশন অব আর্কাইভ্যাল মেটিরিয়ালস অ্যান্ড মনুমেন্টস অব ক্যালকাটা’। ১৯৯৪-এ নিশীথরঞ্জনের প্রয়াণের পর থেকেই সোসাইটি প্রতি বছর আয়োজন করে স্মারক বক্তৃতার। এ বার ২৬ নভেম্বর সাড়ে ছটায় অবনীন্দ্র সভাগৃহে ঐতিহাসিক বিনয়ভূষণ চৌধুরী বলবেন ‘নিউ রিলিজিয়াস সেক্টস অ্যাজ এক্সপোনেন্টস অব র্যাডিক্যাল পলিটিক্যাল অ্যান্ড সোশ্যাল আইডিয়াজ: ফোর কেস স্টাডিজ ফ্রম ইস্টার্ন ইন্ডিয়া ১৭৬৯-১৯৩০’ শীর্ষকে। অন্য দিকে বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ উদযাপনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এক সান্ধ্য আলোচনায় রাজ্য পরিবহণ ও আবাসন দফতরের প্রধান সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ধরিয়ে দিলেন কলকাতার ঐতিহ্য রক্ষার উদ্যোগের মূল সূত্রগুলি উসকে দিলেন এমন কিছু ভাবনা যা গড্ডলিকা প্রবাহের বাইরে অন্য পথের ঠিকানা দেয়। ঐতিহ্য কি কেবল ইমারতে? পরিবেশ, জলাভূমি, নিকাশি ব্যবস্থা, এমনকী কসাইখানাও তার বাইরে নয়। এ শহরের ইসলামি ঐতিহ্যের গুরুত্বের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। এমন আড্ডার মেজাজে শহর-চর্চা হোক না আরও।

সচেতন
‘বিরুদ্ধতার চাবুক ওঠাও হাতে’ এই উদ্দেশ্যেই শুরু হয়েছিল ‘গণবিষাণ’। সেটা ১৯৭৭। তখন তারা বন্দিমুক্তি আন্দোলনের শরিক। সঙ্গী বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নবারুণ ভট্টাচার্য, বাদল সরকার, গৌতম ঘোষ, আরও অনেকে। গত ৩৬ বছরে তৈরি হয়েছে দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে এমন আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক ঘটনার ওপর শ’খানেক গান। গেয়েছেন ভূপেন হাজরিকা, অলোকনাথ দে, দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, কবীর সুমন-এর মতো শিল্পী। ২৪ নভেম্বর সন্ধে ছ’টায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন অডিটোরিয়ামে তার গণসঙ্গীতের সম্ভার ‘পায়ে পায়ে ৩৬ বছর’ নিয়ে হাজির হবে গণবিষাণ। এ দিকে বিভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত কিছু মানুষজন ব্যস্ততার মাঝেও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা মনে রেখে তিন বছর আগে গড়ে তোলেন ‘হৃদকমল’। দুঃস্থ-মেধাবী ছাত্রদের বইখাতা-ওষুধ-পোশাক বিতরণ করে কাজ শুরু। এডস নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে বিশ্ব এডস দিবসের প্রাক্কালে ২৯ নভেম্বর রবীন্দ্র সদনে, সন্ধে ৬ টায় হৃদকমল-এর নিবেদন ‘জীবনকে ভালোবেসে...’। পাশে আছে সহজিয়া, ওই দিন বাংলার লোকগানকে বিশ্বসংগীতের ধারায় পরিবেশন করবে তারা।

বিপ্লবী ও শিল্পী
হেমচন্দ্র কানুনগো ছিলেন একাধারে চিত্রশিল্পী, বিজ্ঞান-অনুসন্ধিত্‌সু ও বিপ্লবী। ফ্রান্স থেকে বোমা বানানো শিখে এসে বাংলার বিপ্লবীদের হাতে তুলে দেওয়ার অন্যতম কারিগর তিনিই। তাঁর বাংলায় বিপ্লব প্রচেষ্টা বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসের একটি ক্লাসিক। তাঁর ব্যক্তিজীবন আদর্শ আর বাস্তবের সংঘাতের তীব্র মন্থনের চিত্র। অথচ এমন একটি মানুষ প্রয়াত হয়েছেন নিতান্ত নির্জনে। এতদিনে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হচ্ছে বিতর্কিত নানা মন্তব্যে সমৃদ্ধ হেম কানুনগো রচনাবলী। থাকছে তাঁর চিঠি, নাড়াজোলের রাজপ্রাসাদ ও শ্রীরামপুরের গোস্বামী পরিবার থেকে সংগৃহীত তাঁর আঁকা দুর্লভ চিত্র ও তাঁর জীবনী। বিপুল পরিশ্রমে এ কাজ করেছেন ইতিহাসের প্রবীণ অধ্যাপক স্বদেশরঞ্জন মণ্ডল। এগিয়ে এসেছে নতুন প্রকাশক ‘শিরোপা’। এই উপলক্ষে কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের তিন তলায় বই-চিত্র সভাঘরে ৩০ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৩ টেয় একটি আলোচনাসভা, সেখানে বইটি উদ্বোধন করবেন হিমাচল চক্রবর্তী।

আকাশবাণীতে ক্যামেরন
সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ঘুরে গেলেন কলকাতা। এই সফরে তাঁর প্রথম ঘোষিত কর্মসূচি ছিল দেশের অন্যতম প্রাচীন সম্প্রচারমাধ্যম আকাশবাণীকে একান্ত সাক্ষাত্‌কার দেওয়া। আকাশবাণীতে গিয়ে ক্যামেরন জানালেন, ব্রিটেনে তাঁর অনেক বাঙালি বন্ধুর কাছে আকাশবাণীর কথা শুনেছেন। সাক্ষাত্‌কার পর্বের পর ছাদে গিয়ে দেখলেন কলকাতাকে। সেখানে দাঁড়িয়েই সাক্ষাত্‌কার দিলেন ব্রিটেনের কয়েকটি টেলিমিডিয়াকে। তার পর লিফ্ট নয়, সটান সিঁড়ি দিয়েই নেমে এলেন নীচে। প্রায় পঞ্চাশ মিনিট আকাশবাণীতে কাটালেন ক্যামেরন।

রোয়েরিখদের ছবি
রবীন্দ্রনাথকে এক বার এঁকেছিলেন সেই রুশ শিল্পী। হিমালয়ের কোলে চৈনিক এক দার্শনিকের আদলে। ছবির নাম দিয়েছিলেন ‘পোয়েট’। নিজেও মগ্ন ছিলেন হিমালয়ে। বিশ্বখ্যাত সেই শিল্পী নিকোলাস রোয়েরিখের পেন্টিং এ শহরে বিশেষ দেখার সুযোগ হয় না। এ বার তাঁর ও তাঁর পুত্র স্বেতোস্লাভ রোয়েরিখের হিমালয়-চিত্রের প্রতিরূপ নিয়ে একটি প্রদর্শনী গোর্কি সদনে, ২৫-৩০ নভেম্বর, ৪-৭টা। আজ প্রদর্শনীর সূচনা করবেন বিশ্বভারতী কলাভবনের কিউরেটর সুশোভন অধিকারী। প্রদর্শনীর আয়োজক ‘রাশিয়ান সেন্টার অব সায়েন্স অ্যান্ড কালচার ইন কলকাতা’ ও ‘হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অব গুডউইল অ্যান্ড লিভিং এথিক্স’। সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে।

অসময়ে
‘কতদিন সারাদিন আড্ডা হয় না/
অন্তর্বাসে ঘুণ, মলাটে গয়না/
আয়লার ঝড়ে উপড়ানো গাছে গাছে/
বন্ধুরা জেগে জেগে ঘুমিয়ে আছে।’
লিখেছিলেন স্বপ্নাভ। কর্মসূত্রে সরকারি আধিকারিক ছিলেন, কিন্তু অনেকই বড় ছিল কবি-গীতিকার-সুরকার হিসেবে তাঁর পরিচয়। গায়িকা স্ত্রী সায়ন্তনীর সঙ্গে তাঁর সেই পরিচয় ছড়িয়ে রয়েছে ‘কলকাতার বৃষ্টি’ ও ‘সিন্ডারেলা’ ক্যাসেট-সিডি-তে, অমলতাসের মনখারাপ-এর মতো তিনটি কবিতার বইয়ে। আড্ডাবাজ, ফিল্ম-পাগল স্বপ্নাভ গিটার বাজাতেন। দুরারোগ্য ব্যাধি বাসা বেঁধেছিল কয়েক বছর ধরেই। কিন্তু তাতে কাজে ছেদ পড়েনি। মাত্র ৫৫ বছর বয়সেই চলে গেলেন স্বপ্নাভ। তাঁরই স্মরণসভা ১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায়, শহিদ সূর্য সেন ভবনে।

অজানা বাতাস
জয় গোস্বামীর উপন্যাস পড়ে প্রথমেই মেয়েটির নিঃসঙ্গতা, আর তার বেঁচে থাকার কষ্ট নাড়িয়ে দিয়েছিল অঞ্জন দাশকে। অঞ্জন আবার ছবি করেছেন জয়ের উপন্যাস থেকে। তাঁর ‘সাঁঝবাতির রূপকথারা’ আর ‘যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল’ বাঙালির স্মৃতিতে উজ্জ্বল। এ বারের ছবি ‘অজানা বাতাস’। অঞ্জন ছবি করা শুরু করেন সত্তর দশকে, মাঝখানে সরে গেলেও ফিরে আসেন দুই শতকের সন্ধিক্ষণে। তার পর একের পর এক ছবি ইতি শ্রীকান্ত, ফালতু, স্বর্গের নীচে মানুষ, অচিন পাখি, বাঁশিওয়ালা, বেদেনি। ‘অজানা বাতাস-এ মেয়েটির যে বেদনার কথা বলতে চেয়েছি তা ছবিতে তুলে ধরা বেশ শক্ত। মেয়েটি বিষাদগ্রস্ত, গুটিয়ে থাকা মানুষ, কাউকে নিজের যন্ত্রণার কথা কমিউনিকেট করতে পারে না। এই নীরবতা ছবিতে বাঙ্ময় করা বেশ মুশকিল...’ বলছিলেন অঞ্জন। তাই এক পরাবাস্তব মুহূর্ত বারে বারে ফিরিয়ে আনেন, ধুয়োর মতো ‘এক অজানা বাতাস মেয়েটির মনের অব্যক্ত কথাগুলিকে উড়িয়ে নিয়ে যায় জঙ্গলে’। মেয়েটির চরিত্রে অভিনয় করছেন পাওলি দাম। বললেন, ‘মেয়েটি নিসর্গের সঙ্গে কথা বলে, গাছের সঙ্গে কথা বলে। চরিত্রটা চ্যালেঞ্জিং’। কৌশিক সেনের কথায় ‘আমার চরিত্রটা কবির, আপাত সংবেদনশীল, কিন্তু আদতে দ্বিচারিতায় ভরা’। গোয়ার পানাজিতে আন্তর্জাতিক ফিল্মোত্‌সব ‘ইফি’র ইন্ডিয়ান প্যানোরামা-য় ২২ নভেম্বর দেখানো হল ছবিটি। কলকাতায় ফেব্রুয়ারির শেষে মুক্তি পাচ্ছে ‘অজানা বাতাস’। সঙ্গে ছবির এক দৃশ্যে পাওলি দাম ও শঙ্কর চক্রবর্তী।

চিত্র চর্চা
ভারতশিল্পের মধ্যেই যেন লুকিয়ে রয়েছে আমার হৃদ্‌স্পন্দন, এমনটাই মনে করেন শিল্পী ও শিল্প-ঐতিহাসিক রতন পারিমু। জন্ম ১৯৩৬-এ শ্রীনগরে, কাশ্মীরের ভরপুর প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেটেছে ছেলেবেলা। চিত্রকলা শিক্ষার সঙ্গে পাঠ নিয়েছেন শিল্প-ইতিহাসের, রকফেলার বৃত্তি নিয়ে গিয়েছেন লন্ডনে। এ সময়েই বিয়ে শিল্পী নয়না দলালের সঙ্গে। ‘ওই সময়টা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়’, বলছিলেন শিল্পী। ভারতীয় ভাস্কর্য নিয়ে গবেষণা করেছেন স্টেলা
ছবি: গোপী দে সরকার।
ক্রামরিশের কাছে, আবার ঠাকুর পরিবারের চিত্র চর্চা নিয়ে নীহাররঞ্জন রায়ের কাছেও। এই সব চর্চার ফসল পেন্টিংস অব থ্রি টেগোর্স (১৯৭৩), স্টাডিজ ইন মডার্ন ইন্ডিয়ান আর্ট (১৯৭৫), লাইফ অব বুদ্ধ ইন ইন্ডিয়ান স্কালপচার (১৯৮২), দ্য পেন্টিংস অব রবীন্দ্রনাথ টেগোর (১৯৮৯), দ্য পিকটোরিয়াল ওয়ার্লড অব গগনেন্দ্রনাথ টেগোর (১৯৯৫) ইত্যাদি বই। ১৯৬৬-’৯১ শিল্প ইতিহাস পড়িয়েছেন ভাদোদরার এম এস ইউনিভার্সিটিতে। বর্তমানে নির্দেশক হিসাবে যুক্ত রয়েছেন আমদাবাদের লালভাই দলপতভাই মিউজিয়ম ও এন সি মেটা গ্যালারির সঙ্গে। ছবি আঁকার সঙ্গে সঙ্গে গবেষণা অব্যাহত, এন সি মেটা সংগ্রহের বিখ্যাত জৈন পুথিচিত্রগুলি নিয়ে তাঁর গুজরাতি স্কুল অ্যান্ড জৈন ম্যানাসক্রিপ্ট পেন্টিংস বইটি প্রকাশিত হয় ২০১০-এ, আর সদ্য প্রকাশিত হয়েছে এই সংগ্রহের অন্যান্য শিল্পকলা নিয়ে দ্বিতীয় খণ্ড রাজস্থানি, সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান, পাহাড়ি অ্যান্ড মুঘল পেন্টিংস। অন্য দিকে, দেশবিদেশের বহু সংগ্রহে স্থান পেয়েছে ওঁর আঁকা ছবি। সম্প্রতি ঘুরে গেলেন কলকাতায়, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল-এ বললেন জৈন চিত্রকলা নিয়ে, আর গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট-এ ‘স্পিরিচুয়ালিটি ইন আর্ট’ শীর্ষক আলোচনাচক্রে। ‘টেগোরের শহর যেন আমার কাছে দ্বিতীয় ঘর’, যাওয়ার আগে বলে গেলেন রতন পারিমু।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.