তোলাবাজকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ
তোলাবাজদের বিরুদ্ধে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। অত্যাচারের মাত্রা এক সময়ে অসহ্য হয়ে ওঠায় দল বেঁধে এক তোলাবাজকে মারধর করতে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, ওই তোলাবাজকে মারমুখী জনতার হাত থেকে উদ্ধার করতে এসে আক্রান্ত হয়েছেন খোদ পুলিশকর্মীরাও। বাঁশ, লাঠি, রড দিয়ে তাঁদেরও বেধড়ক মারধর করল উন্মত্ত জনতা। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন দুই পুলিশকর্মী। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার দাশনগর থানার শেঠপাড়ায়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সূত্রপাত এ দিন ভোরে। দাবি মতো দু’হাজার টাকা তোলা না পেয়ে স্থানীয় দুষ্কৃতী সুরজিৎ মালিক ওরফে পাঞ্জা ও তার দলবল শেঠপাড়ার এক চায়ের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। চায়ের দোকানের মালিক পরেশ ধাঁড়া বলেন, “ভোরে দোকান খুলতে এসে দেখি, দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। আর যে তিন যুবক তোলা চেয়েছিল, তারা পালাচ্ছে।” পরেশবাবুর চেঁচামেচিতে স্থানীয় লোকজন বেরিয়ে এসে ওই তিন যুবককে তাড়া করতে তারা তখনকার মতো পালিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই সুরজিৎ ও তার দলবলের অত্যাচারে এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। অভিযোগ, পুলিশকে অসংখ্যবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। ওই দুষ্কৃতী বালিটিকুরি এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুরে এলাকার লোকজন জানতে পারেন, ওই অঞ্চলেরই একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে দলবল নিয়ে বসে রয়েছে সুরজিৎ। পরেশবাবু-সহ এলাকার প্রায় তিনশো জন বাসিন্দা একজোট হয়ে সেখানে হানা দেন। তাঁরা সুরজিৎকে ধরে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে দাশনগর থানার দুই সাব-ইনস্পেক্টর শান্তনু চট্টোপাধ্যায় ও নয়ন চক্রবর্তী এবং এএসআই প্রসেনজিৎ সিংহ মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। গিয়ে দেখেন, একটি ঘরে জখম অবস্থায় পড়ে রয়েছে সুরজিৎ। ভিতরে ঢুকতে গেলে প্রথমে উন্মত্ত জনতা ওই তিন পুলিশকর্মীকে বাধা দেয়। তাঁদের সরিয়েই ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করার চেষ্টা করেন পুলিশকর্মীরা। এর পরেই জনতা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে বাঁশ, লাঠি, রড দিয়ে তিন পুলিশকর্মী-সহ সুরজিৎকে বেধড়ক পেটাতে থাকে।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ ঘটনাস্থলে যায়। তারাই তিন পুলিশকর্মী এবং ওই দুষ্কৃতীকে উদ্ধার করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে এসেই পুলিশ ব্যাপক লাঠি চালাতে শুরু করে। পরেশবাবুর মেয়ে অলকা মণ্ডল বলেন, “মহিলা-শিশু কাউকেই ছাড়েনি পুলিশ। সকলকে মেরেছে। আমার হাতেও খুব চোট লেগেছে।”
সুরজিৎকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শান্তনু চট্টোপাধ্যায় এবং নয়ন চক্রবর্তীর কাঁধে ও হাতে চোট লেগেছে। তাঁদেরও চিকিৎসার জন্য হাওড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ বলেন, “ওই দুষ্কৃতীকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশকর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মারধর করা হয়েছে। এই ঘটনায় এক জন আটক হয়েছেন। তবে লাঠি চালানো হয়নি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.