কোটশিলায় ফের তাণ্ডবে অভিযুক্ত নাগা জওয়ানেরা
ফের সাধারণ নাগরিকদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ায় মাওবাদী দমনের জন্য মোতায়েন নাগা বাহিনীর বিরুদ্ধে।
এ বার ঘটনার সূত্রপাত কোটশিলা থানার বেগুনকোদরে বাজারের ভিড়ে গাড়ি আটকে যাওয়ায়। অভিযোগ, তাতেই খেপে উঠে জওয়ানেরা অটোচালক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মারধর করেন। আক্রান্তেরা প্রতিবাদ করলে ক্যাম্প থেকে আরও নাগা জওয়ান গিয়ে এলাকায় তাণ্ডব চালান। এর প্রতিবাদে আজ, রবিবার এলাকায় ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
কয়েক মাস আগেই চায়ের দাম মেটানো নিয়ে আড়শার শিরকাবাদে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল নাগা জওয়ানদের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়া বাজারে কুকুরকে গুলি করে মারা নিয়েও গোলমাল কম হয়নি। শনিবার বেগুনকোদরের ঘটনার পরে রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “নাগা জওয়ানরা সাধারণ মানুষকে মারধর করেছেন শুনেছি। এটা কাম্য নয়। পুলিশ সুপারকে দেখতে বলেছি।” পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “নাগাবাহিনীর কিছু জওয়ানের সঙ্গে কিছু লোকজনের গণ্ডগোল হয়েছে শুনেছি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ঠিক কী ঘটেছে, দেখছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কয়েক কিলোমিটার দূরের মুরগুমা ক্যাম্প থেকে একটি গাড়িতে জনা পাঁচেক নাগা জওয়ান বেগুনকোদর বাজারে আসছিলেন। চৌমাথায় অটো ও সাইকেলের ভিড় ছিল। জওয়ানেরা রাস্তা ফাঁকা করতে বলায় বচসা বাধে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক জন জওয়ান এক অটোচালককে মারধর করেন। অন্য কিছু অটোচালক ও বাসিন্দা প্রতিবাদ জানালে তাঁদেরও মারধর করা হয়। বাজারের লোকজন জওয়ানদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে তাঁরা ফোন করে ক্যাম্পে খবর দেন। সেখান থেকে আরও জনা কুড়ি জওয়ান এসে তাণ্ডব শুরু করেন।
বেগুনকোদরের পঞ্চায়েত প্রধান সিদ্ধেশ্বর মাহাতোর অভিযোগ, “জওয়ানেরা আশপাশের বাড়ির দরজা ভাঙচুর করে। রাস্তার পাশে থাকা মোটরবাইক-সাইকেল ভেঙে দেয়। তাদের মারে অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছেন।” ওই সময়ে বাজারে এসেছিলেন ঝালদার রমেশ মাহাতো, আড়শার গুগুই গ্রামের রাজকিশোর মাহাতোরা। তাঁদের কথায়, “আমরা পড়ি-মরি করে যে দিকে পারি দৌড় দিই। তাই মার খেতে হয়নি।” রাতে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে আনা হয় সূর্যকান্ত কুইরি নামে এক আহতকে। তাঁর অভিযোগ, “বাজারে সব্জি বিক্রি করছিলাম। হঠাৎ এক জওয়ান এসে বন্দুকের কুঁদো দিয়ে মুখে মারে।”
কোটশিলা থানা থেকে পুলিশ পৌঁছনোর আগেই অবশ্য জওয়ানেরা বাজার থেকে চলে যান। পরে ডিএসপি (আইনশৃঙ্খলা) পিনাকী দত্ত গেলে জওয়ানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হতে থাকে। এলাকার বহু মানুষের আক্ষেপই উঠে আসে বেগুনকোদর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান অজয় কর্মকারের কথায় “জওয়ানেরা আমাদের নিরাপত্তা দিতে এসেছেন। কিন্তু উল্টে আমাদের গায়েই হাত তুলছেন। সমস্ত মানুষ আতঙ্কিত।” নাগা জওয়ানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে রাতে এলাকায় মিছিলও বের করা হয়। রাজ্য পুলিশের আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। নাগা বাহিনীর অফিসারদের সঙ্গে কথা বলছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.