আলোচনাতেই মামলা-মুক্তি, সাড়া ফেলল লোক আদালত
ত অক্টোবরে হেলমেট ছাড়া মোটর বাইক চালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন খড়্গপুরের মালঞ্চর বাসিন্দা পার্থসারথি দে। সেই থেকে মামলা চলছিল। ভোগান্তির সঙ্গে চাপা আশঙ্কাও ছিল। কথায় যে বলে পুলিশে ছুঁলে আঠেরো ঘা! শনিবার অবশ্য রেহাই পেলেন পার্থসারথিবাবু। ‘ভুল হয়ে গিয়েছে’ বলে সামান্য টাকা জরিমানা দিয়ে মিটে গেল মামলা।
দেড় বছর ধরে ৭টি শুনানিতেও যে মামলার নিষ্পত্তি হয়নি, তা-ও এ দিন মিটেছে। ২০১২ সালের জুনে বেআইনি মদ মজুত করার অভিযোগে ধরা পড়েছিলেন গড়বেতার হীরেন মাণ্ডি। জামিন পেলেও মামলা চলছিল। শনিবার একটি শুনানিতেই ৬০০ টাকা জরিমানা দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।
বছর তিনেক আগে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে মোটর বাইক দুর্ঘটনায় জখম হন বাগনানের জয়দেব মুদলী। মারা যান তাঁর স্ত্রী। তারপর দুর্ঘটনা-বিমার টাকা চেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। শনিবার দ্রুত টাকা মেলার আশ্বাস পেয়েছেন জয়দেববাবু।
এমন অনেক সাধারণ মানুষই উকিল-আদালত-মোকদ্দমার চক্কর থেকে মুক্তি পেলেন শনিবার। সৌজন্যে, লোক আদালত। এ দিন দেশ জুড়ে লোক আদালতের আয়োজন করেছিল ‘ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিসেস্ অথরিটি’। একেবারে মহকুমা আদালত থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। পশ্চিমবঙ্গে ‘স্টেট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি’র রেজিস্ট্রার অঞ্জনকুমার সেনগুপ্ত বলেন, “মানুষ লোক আদালত ঘিরে যে উৎসাহ দেখিয়েছেন, তা অত্যন্ত আশাপ্রদ। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন হবে।”

মেদিনীপুর আদালতে।—নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুর শহরে জেলা আদালত চত্বর এ দিন সকাল থেকেই ভিড়ে ঠাসা। মেদিনীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুজিতকুমার ঝাঁ জানান, যে সব মামলায় সাজা ৭ বছরের কম বা মীমাংসাযোগ্য, সেগুলিই লোক আদালতে আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। সেই মতো দিনের শেষে অনেকেই মোকদ্দমার ঝঞ্ঝাট থেকে রেহাই পেয়েছেন। অনেকের মামলা আবার ঝুলেই রইল।
ঋণ সংক্রান্ত মামলা নিয়ে কিছুটা ক্ষোভ দেখা দেয়। যেমন, নারায়ণগড়ের বাসিন্দা শঙ্করপ্রসাদ শর্মা। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে চাষের জন্য ঋণ নিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের এপ্রিলে দুর্যোগে চাষে ক্ষতি হয়। তিনি ব্যাঙ্কে ঋণ মকুবের আবেদন জানান। ব্যাঙ্ক তাঁকে সমন পাঠায়। কিন্তু এ দিন সমস্যা মেটেনি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক সমর রায় বলেন, “লোক আদালতে ওঠা বেশিরভাগ মামলা ঋণ সংক্রান্ত ছিল। দুঃখের বিষয়, বিচারপ্রার্থীরা অনেক আশা করে এসেও হতাশ হলেন।” এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন আদালতে মোট ২৬টি লোক আদালতের বেঞ্চ বসেছিল। ডিস্ট্রিক্ট লিগাল সার্ভিসেস অথরিটির সচিব প্রকাশ বর্মন জানান, জেলা জুড়ে প্রায় দেড় হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।
কলকাতার বিধাননগর অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও এ দিন লোক আদালত বসেছিল। মোট ৬৫টি মামলার নিষ্পত্তি হয়। অন্য জেলাতেও লোক আদালতে ভাল সাড়া মিলেছে। শ্রীরামপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অমিত চট্টোপাধ্যায় জানান, লোক আদালতের ৪টি বেঞ্চে ৬৭৩টি মামলার শুনানি হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। লোক আদালতে আশানুরূপ সাড়া মিলেছে বলে জানিয়েছেন মালদহের জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথি সেন। এই জেলায় এ দিন ৫৭৭টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক মধুমতি মিত্র বলেন, “জেলা জুড়ে ২০৩৮টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.