|
|
|
|
লোকসভা ভোটে জঙ্গি হানার ভয় প্রধানমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদন |
আসন্ন লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে জঙ্গি হানার আশঙ্কা করছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
আজ দিল্লিতে রাজ্য পুলিশের ডিজি-দের সম্মেলনে নিজের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি, বিশেষ করে লস্কর-ই-তইবা মাথাচাড়া দিয়েছে। বেড়েছে অনুপ্রবেশ। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর উচিত নজরদারি ও সমন্বয় বাড়ানো। আসন্ন লোকসভা ও বিধানসভা ভোট বানচাল করারও চেষ্টা হতে পারে। জঙ্গি হানা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে।” পুঞ্চ সীমান্তে পাক সেনার সাম্প্রতিক সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের প্রসঙ্গও তুলেছেন মনমোহন। তবে জঙ্গি হানার প্রসঙ্গ (যার মধ্যে রয়েছে মাওবাদী হামলাও) এবং সন্ত্রাস মোকাবিলায় নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান একাধিক বার ঘুরেফিরে এসেছে তাঁর দীর্ঘ বক্তৃতায়।
সেই সূত্রেই চলতি বছরে হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, বুদ্ধগয়া ও পটনার বিস্ফোরণের কথা তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, “ধৃত জঙ্গিদের থেকে কাছ থেকে নিশ্চিত ভাবে জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় ভূখণ্ডে এই ধরনের সংগঠনগুলি সক্রিয়। আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ‘মাল্টি এজেন্সি সেন্টার’-এর মতো তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রগুলি যেন এই জঙ্গিদের টেক্কা দিতে পারে।” |
দিল্লিতে ডিজি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে। ছবি: পিটিআই |
এক দিকে ভোটে জঙ্গি হানার আশঙ্কার কথা খোলাখুলি জানানো, অন্য দিকে সন্ত্রাস মোকাবিলায় কড়া বার্তা। জাতীয় রাজনীতির আঙিনার কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তৃতার বিশেষ তাৎপর্য দেখছেন।
তাঁরা মনে করছেন, আজকের বক্তৃতায় বারবার সন্ত্রাস প্রসঙ্গ তুলে ভোটের আগে সুকৌশলে বিরোধী বিজেপির একটি প্রিয় তাস তাদের দিকেই ফিরিয়ে দিয়েছেন মনমোহন। সেই তাস হল জাতীয়তাবাদ। ২০১৪-র ভোটের লড়াইয়ে সন্ত্রাস ইতিমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। নরেন্দ্র মোদী তাঁর পটনার সভায় বিস্ফোরণের কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরাসরি ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনকে মদত জোগানোর অভিযোগও তুলেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই অভিযোগেরই আজ জবাব দিলেন মনমোহন। বার্তা দিতে চাইলেন, সন্ত্রাসের কোনও কংগ্রেস-বিজেপি হয় না। সন্ত্রাসবাদে দেশ আক্রান্ত। এটা আন্তর্জাতিক সমস্যা। এখন একজোট হওয়ার সময়। যদিও প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তৃতার জের টেনেও তাঁকে আক্রমণ জারি রেখেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। অরুণ জেটলির কটাক্ষ, “মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী হয়ে কী করে ভোটে জঙ্গি হানার আশঙ্কা করছেন? তা হলে তাঁর গোয়েন্দাবাহিনী কী করছে? প্রধানমন্ত্রী নিজেই যদি ভরসা না পান, তা হলে দেশবাসী ভরসা করবে কাকে? কাকে তিনি নিরাপত্তা দেবেন?” সম্প্রতি রাহুল গাঁধী প্রকাশ্যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, তাঁকে হয়তো মেরে ফেলা হতে পারে। মনমোহনকে বিঁধতে সেই প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন জেটলিরা। ঘটনা হল, কার্গিল যুদ্ধের পরে বাজপেয়ী সরকারকে ঠিক এই সুরেই কাঠগড়ায় তুলতে চেয়েছিল বিরোধী কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য ছিল, কার্গিলে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটল কী করে? সীমান্তে নিরাপত্তার নজরদারির এই গাফিলতির দায় তো এনডিএ সরকারের পরেই বর্তায়!
উত্তরে বাজপেয়ী সরকার বলেছিল, কার দায়, তা বিচারের সময় এটা নয়। এখন জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার সময়। বিশেষজ্ঞদের মতে, আজ দু’পক্ষের ভূমিকা অদল-বদল হয়ে গিয়েছে। যার ফলে আজ দেখা দিয়েছেন ‘রাজনীতিক’ মনমোহন। |
|
|
|
|
|