|
|
|
|
স্কুলে টিচার-ইন-চার্জ নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভ শিক্ষিকাদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • জয়পুর |
পুরুলিয়ার জয়পুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগ নিয়ে ক্ষুব্ধ স্কুলের স্টাফ কাউন্সিলের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, অভিজ্ঞতা অনুযায়ী যে শিক্ষিকার ওই পদে বসার কথা, তাঁর বদলে জুনিয়র এক জনকে বসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে। তাঁরা কোথাও লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে, জেলা স্কুল পরিদর্শককের কাছে মৌখিক ভাবে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছেন।
গত ৩১ অক্টোবর অবসর নেন ওই স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ চিত্রা সিংহ। তাঁর জায়গায় কোন শিক্ষিকা আসবেন, বিধি মোতাবেক তা ঠিক করার কথা স্কুলের পরিচালন সমিতির। জয়পুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে কোনও পরিচালন সমিতি নেই। একজন প্রশাসক দায়িত্বে রয়েছেন। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যিনি প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন, তিনিও দায়িত্ব থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি নিয়েছেন। স্কুলটির শিক্ষিকা সুমনা দে দালাল, বর্ণালি মণ্ডল, নীলাঞ্জনা পট্টনায়ক, অর্চনা চৌধুরীরা জানিয়েছেন, চিত্রা সিংহ অবসর নেওয়ার আগে বিদ্যালয়ের সিংহভাগ শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের উপস্থিতিতে বৈঠক করে পরবর্তী টিচার-ইন-চার্জ হিসেবে অর্চনা চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন। উপস্থিত সকলে তা মেনেও নেন।
স্কুল সূত্রের খবর, সম্প্রতি স্কুলটিতে জেলা বিদ্যালয়ে পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাধারানি মুখোপাধ্যায়ের একটি চিঠি পৌঁছয়। চিঠিতে বলা হয়, জেলা পরিষদের সভাধিপতির নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমান টিচার-ইন-চার্জের অবসরের পরে ওই স্কুলেরই শিক্ষিকা রুমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই পদে স্থলাভিষিক্ত করতে হবে। বিতর্ক বেঁধেছে সেই চিঠিটিকে ঘিরেই। স্কুলটির শিক্ষিকাদের একাংশের প্রশ্ন, কী ভাবে স্টাফ কাউন্সিলের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। জেলা শিক্ষা দফতর কী ভাবে ওই নির্দেশ দিল, তা জানতে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুলটির শিক্ষিকাদের একটি বড় অংশ পুরুলিয়ায় জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে আসেন। রাধারানিদেবীর তাঁদের প্রশ্নের সদুত্তর না পেয়ে অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়েই তাঁদের প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বলেন, “সভাধিপতির নির্দেশ মোতাবেকই আমি জয়পুর বিদ্যালয়ের তৎকালীন টিচার-ইন-চার্জকে এ রকম একটি নির্দেশ পাঠিয়েছিলাম। বেশ কয়েক জন শিক্ষিকা আমার কাছে এসে এই নির্দেশ নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন।” শিক্ষিকা অর্চনা চৌধুরী বলেন, “আমার নাম বেশির ভাগ মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি সেই সিদ্ধান্ত মেনেছি। কিন্তু, আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।” আর রুমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশ মেনে দায়িত্ব নিয়েছি।” স্কুলের কাজকর্ম যাতে ভাল ভাবে না চলে, সে জন্য তাই কেউ কেউ সমস্যার সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রুমাদেবীর।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, “এই নিয়ে আবার বিতর্ক কীসের? ওই স্কুলে কে টিচার-ইন-চার্জ হবেন, সেটা কি অন্য শিক্ষিকারা ঠিক করবেন? তাঁদের কাজ পড়ানো। তাঁরা সেটা করলেই ভালো। যিনি বিদ্যালযের কাজ সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে পারবেন, তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।” জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, “স্কুলটিতে প্রশাসক না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত প্রশাসক নিয়োগ করার ব্যাপারে আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হবে।” |
|
|
|
|
|