নাসার টেলিস্কোপে আছড়ে পড়ছে একের পর এক গামা রশ্মির ঝড়। ভাল করে পরীক্ষা করতে গিয়ে চমকে উঠলেন বিজ্ঞানীরা। দৈত্যাকার এক বিস্ফোরণ ঘটেছে মহাকাশে। পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে সেই বিস্ফোরণেরই আঁচ।
নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাজাগতিক বিস্ফোরণটি ধরা পড়ে ২০১৩-র এপ্রিলে। বিজ্ঞানীদের মতে, বিস্ফোরণটা এতটাই জোরালো যে একমাত্র ‘বিগ ব্যাং’-এর সঙ্গেই তার তুলনা করা যেতে পারে। কিন্তু এত বড় বিস্ফোরণের জের পৃথিবীতে সে ভাবে পড়েনি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দূরত্বই বাঁচিয়ে দিয়েছে পৃথিবীকে।
নাসার প্রধান জোতিঃপদার্থবিদ পল হার্ৎজ বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৭০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে এই বিস্ফোরণ ঘটেছিল। অর্থাৎ এখন থেকে প্রায় ৩৭০ কোটি বছর আগে মহাকাশের অনেক দূরে কোথাও বিস্ফোরণটি ঘটেছিল। তার রশ্মি টেলিস্কোপে পৌঁছতেই লেগে গেল এতগুলো বছর। পলের মতে, এত দূরে ঘটার জন্যই মনুষ্যজগৎ রেহাই পেয়ে গেল। খালি চোখেও অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়েনি আকাশে। সাধারণত সূর্যের থেকে বড় কোনও নক্ষত্রের মৃত্যু হলে, বা মৃত তারা কৃষ্ণগহ্বরে ঝাঁপ দিলেই এ ধরনের গামা রশ্মি বিস্ফোরণ ঘটে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এ ক্ষেত্রে যে তারার বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেটা সূর্যের থেকে প্রায় ৩০ গুণ বেশি ভরের ছিল। পৃথিবী যদি এই বিস্ফোরণের মুখে পড়ত, নিমেষে অদৃশ্য হয়ে যেত তার বায়ুমণ্ডল। গ্রহের চেহারা হতো সেঁকা পাউরুটির মতো। জোতিঃপদার্থবিদ রব প্রিস বললেন, “আমি তো একে দৈত্য বলব। আমাদের যন্ত্রপাতিগুলো এই গামা রশ্মির ঝড় সহ্য করার শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছিল।” ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় খবরটি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকদলের অন্যতম চার্লস ডের্মারের আশ্বাস, “আমরা যে নক্ষত্রপুঞ্জে থাকি সেখানে অত বড় কোনও নক্ষত্র নেই। তাই গামা রশ্মির প্রভাবে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বেশ কম।” |