বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের সুলভ শৌচাগার ও প্রতীক্ষালয় থেকে। মঙ্গলবার কান্দি মহকুমা হাসপাতালের ওই ঘটনার পর চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন রোগীর আত্মীয়রা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২০০১ সালে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল চত্বরে রোগীর আত্মীয়দের রাতে থাকার জন্য প্রতীক্ষালয় ও একটি সুলভ শৌচাগার তৈরী করে। তারপর থেকে ওই দু’টি জায়গায় বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া হয়নি। হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরের একটি শৌচাগার থেকে ‘অবৈধভাবে’ বিদ্যুত্ সংযোগ নিয়ে এতদিন ওই শৌচাগার ও প্রতীক্ষালয় চালাচ্ছিল জেলা পরিষদ। বছর খানেক আগে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে ওই দুটি ভবনে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন করে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল।
কান্দির মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা ওই হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ভাস্কর বৈষ্ণব বলেন, “জেলা পরিষদ যে আমাদের হাসপাতালে শৌচাগার ও প্রতীক্ষালয় তৈরী করেছে লিখিতভাবে সেটাই এখনও পর্যন্ত আমাদেরকে জানায়নি। ওরা এতদিন অবৈধভাবে বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে চালাচ্ছিল। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েই বিদ্যুত্ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।”
টানা বারো বছর ‘অবৈধভাবে’ এটা চলার পর তারপর স্বাস্থ্য দফতরের টনক নড়ল? ভাস্করবাবু বলেন, “আগে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন তাঁরায় বিষয়টি বলতে পারবেন।”
কিন্তু জেলা পরিষদই বা নিয়ম মেনে বিদ্যুত্ সংযোগ না নিয়ে কীভাবে চালু করল শৌচাগার ও প্রতীক্ষালয়? জেলা পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, সেই সময় জেলা পরিষদ ছিল বামেদের দখলে। সভাধিপতি ছিলেন সিপিএমের সচ্চিদানন্দ কান্ডারী। জেলা পরিষদের তত্কালীন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কার্তিক মণ্ডল বলেন, “সে সময় রাজ্য জুড়ে বিদ্যুতের একটা বড় সম্যসা ছিল। রোগীর আত্মীয়দের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমঝোতা করেই তখন ওভাবে বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া হয়েছিল। তারপর বারো বছর কেটে যাওয়ার পরেও যে বিদ্যুত্ সংযোগ নেওয়া হয়নি সেটা জানতাম না।” মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের বর্তমান সভাধিপতি কংগ্রেসের শিলাদিত্য হালদার বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। দ্রুত যাতে বৈধভাবে শৌচাগার ও প্রতীক্ষালয়ে বিদ্যুত্ সংযোগ চালু করা যায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
কান্দি মহকুমার মোট পাঁচটি ব্লকের বাসিন্দা ছাড়াও বীরভূম ও বর্ধমান জেলার একটা অংশের বাসিন্দারা ওই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। ২৫০টি শয্যা বিশিষ্ট ওই মহকুমা হাসপাতালে রোগীর চাপও থাকে যথেষ্ট। আচমকা হাসপাতালের ওই শৌচাগার ও প্রতীক্ষালয়ে বিদ্যুত্ না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে দূরদুরান্ত থেকে আসা রোগীর আত্মীয়দের। তাঁদের ক্ষোভ, “শৌচাগার ও প্রতীক্ষালয় দু’টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নীচে শৌচকর্ম সারতে হচ্ছে। হাসপাতালের সামনে খোলা বারান্দায় রাত কাটাতে হচ্ছে। এর থেকে নরকও বোধহয় অনেক ভাল!”
|
পেটের অসুখ ১৮ পড়ুয়ার
নিজস্ব সংবাদদাতা • বুদবুদ |
পেটের অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হল ১৮ জন পড়ুয়াকে। ঘটনাটি ঘটেছে বুদবুদের দেবশালা পঞ্চায়েতের কাঁকড়া গ্রামে। অসুস্থ পড়ুয়াদের প্রথমে কাঁকসা ব্লক চিকিৎসাকেন্দ্র ও পরে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ কাঁকড়া গ্রামের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই পড়ুয়ারা রাস্তার পাশে থাকা ভ্যারেন্ডা গাছের শুকনো ফল বাদাম ভেবে খেয়ে ফেলে। এর পর বাড়ি ফিরেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন তাদের মায়েরা। |
দুর্গাপুর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র। |
একজনের মা সুক্তি হেমব্রম জানান, ঘটনার সময় তাঁরা মাঠে কাজ করছিলেন। বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর দুই শিশু বমি ও পায়খানা করছে। আশপাশের বাড়ি থেকেও আরও শিশুদের অসুস্থ হওয়ার খবর মেলে। অন্য এক গ্রামবাসী রুক্মিনী বেসরা জানান, তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়েও ভ্যারেন্ডা গাছের ফল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। রুক্মিনীদেবী বলেন, “শিশুদের এই অবস্থা দেখে আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এখন ডাক্তারবাবুদের ভরসায় আছি।” দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ কৃষ্ণেন্দু ভট্টাচার্য প্রাথমিক চিকিৎসার পর জানান, ভয়ের কোনও কারণ নেই। অসুস্থ শিশুদের স্যালাইন ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে। |