ফিল্মসিটির জন্য উত্তরপাড়ার জমি নিজেদের দখলে আনার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল কলকাতা পুরসভা। বুধবার রাতে পুরসভার তরফে উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে পুলিশ রাতেই স্থানীয় কোতরং এলাকায় একটি ইটভাটার যন্ত্রাংশ বাজেয়াপ্ত করে।
১৬ নভেম্বর কলকাতা পুরসভায় বৈঠকে স্থির হয়েছিল, জমি নিজেদের দখলে নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ করা হবে। পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ হুগলির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) আয়েশা আলিকে ‘মাইনস অ্যান্ড মিনারেলস অ্যাক্ট’ অনুযায়ী মামলা করতে নির্দেশ দেন। দ্রুত কাজ শুরু করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে অধিকাংশ ইটভাটা মালিকই প্রাথমিক ভাবে ক্ষতিপূরণের শর্তে প্রস্তাবিত ফিল্মসিটির জমি ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ তাঁরা বেঁকে বসায় কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই হুগলির উত্তরপাড়ায় গঙ্গার ধারে কলকাতা পুরসভার ৪০০ বিঘা জমিতে ফিল্মসিটি গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই জমিতে ছড়িয়ে থাকা ইটভাটার মালিকেরা প্রাথমিক ভাবে ক্ষতিপূরণের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানান। একটি বৈঠকে ১৪টি ইটভাটার মধ্যে ১১টির মালিকই জমি ছাড়তে সম্মত হন। দু’টি ইটভাটার মালিক অবশ্য দাবি করেন, জমির মালিকানা তাঁদের। কলকাতা পুরসভার তরফে তাঁদের উত্তরপাড়া পুরসভায় প্রামাণ্য নথিপত্র জমা দিতে বলা হয়। ইতিমধ্যে তাঁরা নথি জমা দিয়েছেন। সেগুলি কলকাতা পুরসভার আইন বিভাগ খতিয়ে দেখছে।
কিন্তু যে ইটভাটা মালিকেরা প্রাথমিক ভাবে জমি ছাড়তে হন, তাঁরা পরে বেঁকে বসেন। সব ইটভাটা মালিকের তরফে কলকাতা পুরসভাকে আইনি চিঠি দিয়ে জানানো হয়, জমির মালিকানা তাঁদেরই এবং তা তাঁরা ছাড়বেন না। গোটা বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরসভা ঠিক করেছে, যে সব অংশে দখলদারি নিয়ে সমস্যা নেই, সেই সব জায়গাতেই প্রথমে কাজ শুরু হবে। পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, “ইটভাটার মালিকেরা জমি ছাড়লে রাজ্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেবে। কিন্তু কেউ অনৈতিক ভাবে জমি আটকালে তা মানা হবে না। যে জমি নিয়ে সমস্যা নেই, সেই অংশে দ্রুত কাজ শুরু হবে।” |