|
|
|
|
|
|
আইন আদালত |
|
আমার পৌনে তিন কাঠা জমিতে ফ্ল্যাট তৈরি করতে ২০০৭-এর শেষে স্থানীয় এক প্রোমোটারের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার এগ্রিমেন্ট করি। ওই কাজের জন্য তাঁকে জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নিও দিই। লিখিত শর্ত অনুযায়ী, সর্বাধিক দু’বছর সময়ের মধ্যে আমার প্রাপ্য অংশ (ফ্ল্যাট) হস্তান্তরিত করার কথা তাঁর। চুক্তি সই হওয়ার সময়ে ‘শিফটিং’ (নতুন ফ্ল্যাট না-দেওয়া পর্যন্ত অন্যত্র যাওয়া এবং সেখানে থাকার বাড়ি ভাড়া ইত্যাদি) বাবদ আমাকে মাত্র এক লাখ টাকা দেওয়া হয়। বিগত বছরগুলিতে আমি বহুবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেছি ও ফোনে তাগাদা দিয়েছি। তিনি ‘হয়ে যাবে, আর কিছু দিন অপেক্ষা করুন’— বলে আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন। এ ভাবে সাড়ে ৫ বছর কেটে গিয়েছে। ১০% কাজও হয়নি। বরাবারই আমি তাঁর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে আসছি।
আমি বয়সে প্রবীণ ও আইনি পথে যেতে চাই না। কী করলে আমি ওই জমি প্রোমোটারের হাত থেকে মুক্ত করতে পারব?
শংকর দাস, কলকাতা
শংকরবাবু, আপনি আইনের পথে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। কিন্তু আমি আইনের সাহায্যই নিতে বলব।
মনে হচ্ছে আপনি যে জয়েন্ট ভেঞ্চার এগ্রিমেন্ট করেছেন সেটা সম্ভবত দশ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে। আর একটা জিনিস জানা গেল না, আপনারা যে জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নিটা করেছেন, সেটা কি রেজিস্টার্ড? মানে ওই পাওয়ার অফ অ্যাটর্নিটা কি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে?
যাই হোক, জয়েন্ট ভেঞ্চার চুক্তি বা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দুই ক্ষেত্রেই আপনি কাজের সর্বোচ্চ সময়সীমা (২ বছর) বেঁধে দিয়েছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী যার মধ্যে কাজ শেষ করতে হত। প্রোমোটার নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি। অর্থাৎ সে চুক্তিভঙ্গ করেছে। আবার শিফটিং বাবদ এই দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছরের টাকা আপনাকে দেওয়া উচিত ছিল। তা-ও সে দেয়নি। মাত্র এক লাখ টাকা দিয়েছে। অর্থাৎ আবারও সে চুক্তিভঙ্গ করল।
আপনি পরিষ্কার প্রোমোটারকে লিগাল নোটিস দিয়ে চুক্তিপত্রটি বাতিল ঘোষণা করুন। জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নিটি রেজিস্টার্ড হলে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে সেটি বাতিল করুন। সেটিকে রেজিস্ট্রি করেই বাতিল ঘোষণা করতে হবে।
ফৌজদারি আদালতে গিয়ে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনতে পারেন। সেক্ষেত্রে যে ‘ব্রিচ অব ট্রাস্ট বা বিশ্বাসভঙ্গ হয়েছে, সে কারণটি দর্শাতে হবে।
এ ছাড়াও আপনি কনজিউমার্স ফোরামে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে পারেন। ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন।
আপনি প্রথমে আগের চুক্তি এবং পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বাতিল করে অন্য কাউকে বা অন্য কোনও প্রোমোটারকে দিয়ে বাকি কাজ করাবার চেষ্টা করুন বা জমির দখল নিন। যদিও আপনি বলছেন যে, আপনি প্রবীণ এবং আদালতে আসতে ভয় পাচ্ছেন। তবুও আমি কিন্তু আপনাকে আদালতে আসার পরামর্শই দেব। |
(আইনি পরামর্শ জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়) |
|
|
|
|
|