ছোট, বড়, টিকালো, বোঁচা...নাকের রকমফের দিয়ে মানুষকে তো আলাদা করাই হয়। কিন্তু লিঙ্গভেদে নাকও যে বদলে যায়, এমনটা আগে জানা ছিল না। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি মেনে নিলে কিন্তু এমনটাই হয়। সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অব ফিজিকাল অ্যানথ্রোপলজিতে প্রকাশিত হয়েছে তাঁদের এই গবেষণা।
গবেষক দলের অন্যতম নাথান হল্টনের দাবি, পরিণত বয়স্ক পুরুষদের নাক মেয়েদের থেকে বেশ কিছুটা বড় হয়। এর কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অক্সিজেন লাগে অনেক বেশি। মানুষের পেশির মোট পরিমাণকে বলে ‘লিন মাসল মাস’ বা ‘লিন বডি মাস’ সংক্ষেপে এলবিএম। দৈহিক গঠন অনুযায়ী স্বাভাবিক ভাবেই ছেলেদের শরীরে এলবিএমের পরিমাণ মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি। এই পেশির শক্তি জোগানের জন্যই ছেলেদের অনেক বেশি অক্সিজেন লাগে। আর তাই নাকি অভিযোজনের ফলে ছেলেদের নাক বড় হয়ে গিয়েছে মেয়েদের থেকে।
এই গবেষণার জন্য নাথানরা ৩৮ জন ইউরোপীয়কে বেছে নিয়েছিলেন। তাঁদের তিন বছর বয়স থেকে মধ্য কুড়ি পর্যন্ত নাকের গঠনের কী পরিবর্তন হচ্ছে, তা নিয়মিত পরীক্ষা করা হত। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রথম দিকে ছেলে আর মেয়েদের নাকের গঠনে কোনও পার্থক্য নেই। কিন্তু ১১ বছর বয়সের পর থেকেই, অর্থাৎ বয়ঃসন্ধি থেকেই ছেলেদের নাকের আকার মেয়েদের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি বাড়তে থাকে।
নাথানের দাবি, প্রাগৈতিহাসিক মানুষের থেকে আধুনিক যুগের মানুষের নাক ছোট কেন, এই গবেষণা থেকে তারও প্রমাণ মেলে। তাঁর মতে, নিয়ানডারথাল বা গুহামানব অনেক বেশি পেশিবহুল ছিল। ফলে তাদের অক্সিজেন লাগতও অনেক বেশি। তাই নাকও ছিল বড়।
তবে নাথানদের এই গবেষণা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। মাত্র ৩৮ জনকে পরীক্ষা করে এমন কোনও সিদ্ধান্তে আসা যায় কি না তা নিয়েও সন্দিহান কেউ কেউ। তার উপরে ইউরোপীয়দের মধ্যে যে বৈশিষ্ট দেখা গিয়েছে সেটা অন্য মহাদেশের মানুষের মধ্যেও দেখা যাবে কি না সেটাও সন্দেহজনক। এ নিয়ে যে আরও গবেষণা দরকার তা মেনে নিয়েছেন নাথানও। তবে পেশিবহুল গুহামানবদের তুলনায় অনেক রোগাপাতলা মানুষদের নাকের আকার কমেছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি ছেলে-মেয়ে ভেদে নাকের আকারও যে বদলায় এটাও সব মানুষের ক্ষেত্রেই সত্যি বলে প্রমাণিত হবে একদিন, এমনটাই আশা নাথানের।
ততদিন নিজেদের লম্বা নাক যেখানে সেখানে গলানোর কাজে ব্যবহার করার কথা ভেবে দেখতে পারেন পুরুষরা! |