অ্যাকাডেমিতে নাট্যমেলা
চল্লিশে সায়ক
ল্লিশ কি তারুণ্যের শেষ সীমা? এ শহরের নাট্যবৃত্ত জানে, না। ১৯৭৩-এর ২ ডিসেম্বর যে একাদশ নাট্যকর্মী একটি দল গঠন করেছিলেন তা-ই আজ চল্লিশে পৌঁছেও সমান সজীব। ‘সায়ক’ সেই দলের নাম। অভিধান বলছে, নামের মানে ‘বাণ’ কিংবা ‘খড়্গ’। থিয়েটারের মধ্য দিয়ে সমাজকে সত্যই বাণবিদ্ধ করেছিল সায়ক। সমাজসচেতনতার তথাকথিত প্রচার-আঙ্গিকে নয়, জনপ্রিয় নাটকের মাধ্যমেই। গ্রুপ থিয়েটারের জনপ্রিয়তা নিয়ে আজ তর্কবিতর্কের শেষ নেই, কিন্তু এই পুরনো নাট্যদলটির মুকুটে অনেক পালক। ১৯৯১-এর ‘দায়বদ্ধ’ চলেছে বহু দিন সাফল্যের সঙ্গে। দলের হিসেবে এখনও পর্যন্ত এ নাটকের শো-র সংখ্যা ৬৫৩। ‘বাসভূমি’ও সমান জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু সে ‘সায়ক’-এর মেঘনাদ ভট্টাচার্যের কাল। প্রথম পর্যায়ে ১৯৭৪-১৯৭৬ নির্দেশক ছিলেন শিশিরকুমার বসু। ১৯৭৪-এ ‘অভিশপ্ত’ দিয়ে শুরু।
তার পরে একে একে ল্যাম্পপোস্ট, ভ্যাম্পায়ার, দুই হুজুরের গপ্পো, সাধুসঙ্গ, অনুবীক্ষণ, সোনার মাথাওয়ালা মানুষ, জ্ঞানবৃক্ষের ফল, যদিও স্বপ্ন, বেওকুফ, দায়বদ্ধ, বাসভূমি, কর্ণাবতী, অন্ধগলি, দিলদার হয়ে সাম্প্রতিক পিঙ্কিবুলি, ধ্রুবতারা— বহু উল্লেখযোগ্য নাটক। মূল নাটক, অনুবাদ, রূপান্তর কাজ হয়েছে সব ক্ষেত্রেই। দু’দুটি নাটক ফিরিয়ে আনা হয়েছে মঞ্চে, ‘দুই হুজুরের গপ্পো’ আর ‘যদিও স্বপ্ন’। হাতিবাগান পাড়ার পুরনো সাধারণ রঙ্গমঞ্চের পুনরুজ্জীবনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে এই গ্রুপ থিয়েটার। বিজন থিয়েটারকে পুনরুজ্জীবিত করে নিয়মিত সেখানে অভিনয় করে গিয়েছে। ১৯৯২ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে ‘সায়ক নাট্যপত্র’। এ বার চল্লিশ বছর উপলক্ষে অ্যাকাডেমিতে ২৯ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর ইলাহাবাদের ‘রূপকথা’ ও ‘সায়ক’-এর উদ্যোগে বিশেষ ‘অনুকূল নাট্যমেলা’। উদ্বোধনে বিভাস চক্রবর্তী। নান্দীকার-এর ‘নাচনী’ দিয়ে শুরু করে ‘নাগমণ্ডলা’ (বালিগঞ্জ স্বপ্নসূচনা), ‘থানা থেকে আসছি’ (স্বপ্নসন্ধানী), ‘চাক ভাঙা মধু’ (রূপকথা), ‘অ্যান্টনি সৌদামিনী’ (পূর্ব পশ্চিম), ‘সিনেমার মতো’ (কালিন্দী ব্রাত্যজন) এবং সায়ক-এর ‘ধ্রুবতারা’র অভিনয়। সঙ্গে ‘দায়বদ্ধ’র দুটি মুহূর্ত, প্রথম দিকের অভিনয় থেকে।

জয়-জয়ন্তী
শুরুতে ছিলেন জয়কৃষ্ণ গোস্বামী। অচিরেই কবিতায় ‘কৃষ্ণ’ বিনা জয়কে পাওয়া গেল। সূচনাতেই বাংলা কবিতার ধারায় একটা বড় বদল ঘটিয়েছিলেন তিনি। পরম্পরা-ঋদ্ধ, অথচ ভিন্ন এক কাব্যভাষা আর নতুন আঙ্গিকে রানাঘাটের জয় জয় করেছিলেন এ শহরের রাখালদের। তার পরে পৃথিবীর বয়স বেড়েছে ঢের, কবিরও। কিন্তু তাঁর কবিতা এবং গদ্যের সেই তারুণ্য আজও অটুট। নবীনদের উপর তাঁর প্রভাব অস্বীকার করার নয়। ষাট বছরে পড়লেন তিনি এ বছর। কিছু কাল আগে প্রকাশিত একান্নবর্তী-তে তাই লিখে ফেলতে পারেন এমন ক’লাইন: ‘এখন দু’মাত্রা করে বেশি-কম রাখি।
থাকুক না ছন্দে একটু ফাঁক।
আজকাল দেখতে পাই ওই ফাঁক দিয়ে
একটা গাছের ডাল বেরিয়ে এসেছে।
পাতাভরা মজবুত ডাল।

জয়কে ঘিরে জয়-জয়ন্তী-র আয়োজন করেছে ওরিয়ন এন্টারটেনমেন্ট, ২১ নভেম্বর সন্ধে ছ’টায়, শিশির মঞ্চে। জয়ের হাতে শুভেচ্ছার ফুল তুলে দেবেন শঙ্খ ঘোষ। জয়ের কবিতা আর রবীন্দ্রগান নিয়ে ‘থিয়েটার রিদম’ প্রযোজিত এক আলেখ্যে কবিতা ও গানে থাকবেন জয়, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, দেবশঙ্কর হালদার, নাতাশা দাশগুপ্ত। প্রকাশিত হবে শ্রুতি-সংকলন ‘অবেলায় যদি’।

শিল্প-সৃজন
ছেলেবেলাতেই দেওয়ালের ছাপ ছোপ, জলের দাগ, মেঘের গড়ন বা গাছ-পাথরের বিভিন্ন গঠন মন কেড়ে নিত, বলছিলেন ভাস্কর নিরঞ্জন প্রধান। জন্ম ১৯৪০, পূর্ব মেদিনীপুরের কালিন্দীতে। পাঠ শেষ করার পর নিরন্তর চর্চা। মাধ্যম পাথর, ব্রোঞ্জ, কাঠ, ফাইবার ইত্যাদি। শিল্পীর বহু ভাস্কর্য রয়েছে কলকাতায় ও বাইরে। উত্তমকুমার, সত্যজিৎ রায়, মাইকেল মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ এমনকী ব্রিস্টলের রামমোহন রায়ের মূর্তিটিও ওঁরই গড়া। বহু দিন পর শিল্পীর সমস্ত মাধ্যমের সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে আইসিসিআর-এ চলছে প্রদর্শনী ‘স্কাল্পচার্স ক্রিয়েশন’ (২২ নভেম্বর পর্যন্ত, ১১-৭টা)। এ দিকে ১২ নভেম্বর থেকে অ্যাকাডেমি-তে শুরু হয়েছে দেবব্রত চক্রবর্তীর একক প্রদর্শনী ‘ওয়ার্কস দেন অ্যান্ড নাউ’। রয়েছে যোদ্ধাদের নিয়ে একটি সিরিজ, যাতে উঠে এসেছে জীবনযুদ্ধের কথা। রয়েছে শিল্পীর আঁকা রামকিঙ্করের পোর্ট্রেট। অ্যাক্রিলিক দিয়ে ক্যানভাসে রামকিঙ্করের জীবনসংগ্রামকে তুলে ধরেছেন শিল্পী। প্রদর্শনী আজ সন্ধে ৬টা পর্যন্ত।

জ্যোতিরিন্দ্র স্মরণে
দুর্ভিক্ষে, বা শ্রমিক হরতালে গানের ডালি নিয়ে হাজির হতেন। প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরুদ্ধে একরোখা, আবার দুর্জয় আশাবাদীও। ‘নবজীবনের গান’-এর সেই অফুরান সৃষ্টিশীল জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র (১৯১১-১৯৭৭) সম্পর্কে অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত লিখেছেন ‘তিনি যে সমস্ত বিক্ষুব্ধ ও দৃপ্ত গান লিখে গেছেন, সেগুলি নিপীড়িত মানুষের মজ্জায় মজ্জায় মিশে আছে, যাদের রচয়িতার খোঁজখবরও অনেকেই রাখে না।’ তাঁর শতবর্ষ পেরনোর সময় নানা উদ্যোগের সঙ্গে গত বছর থেকে পরিবারের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে ‘জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র স্মারক বক্তৃতা’ও। এ বার ১৮ নভেম্বর তাঁর জন্মদিনে সে বক্তৃতা দেবেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অমিয় বাগচী। বিষয়: ‘মুক্তির দিশা: সবুজ সমীকৃত সমাজের দিঙনির্ণয়’। সন্ধে সাড়ে ছ’টায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ ত্রিগুণা সেন প্রেক্ষাগৃহে।

দোহারবিশ্বে
দোহার আর একা নয়। ১৪ বছরের অনেক অভিজ্ঞতা পেরিয়ে এ বার তারা স্প্যানিশ সালসা নাচের সঙ্গেও দোহারকি দিতে চলেছে। ২৩ নভেম্বর রবীন্দ্রসদনে সন্ধ্যা ৬টায় ‘দোহারবিশ্বে’ অনুষ্ঠানে কালিকাপ্রসাদ, রাজীবের পাশাপাশি মঞ্চে থাকার জন্য দিল্লি থেকে উড়ে আসছেন ডোমিনিকান রিপাবলিকের কালচারাল অ্যাটাচে সোরায়া ফ্রাঙ্কো। থাকবেন ইন্দো-হিস্পানিক সোসাইটির ছাত্রছাত্রীরাও। লালন, ভাটিয়ালি এবং রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি বাচেতা এবং হরেক স্প্যানিশ লোকসঙ্গীতে জমে উঠতে চলেছে সেই সন্ধ্যা। আর স্প্যানিশ গানের সেই সঙ্গতই ঘুচিয়ে দিল দলের একাকীত্ব। দোহার একক নামের বার্ষিক অনুষ্ঠানটিই এ বার দোহারবিশ্বে রূপান্তরিত।

জলছবি
কলকাতা পুরসভা প্রতি দিন একজন নাগরিকের জন্যে ২২৫ লিটার জল সরবরাহ করে। আবার প্রতি দিন এ শহরে খোলা কলের মুখ দিয়ে যে জল পড়ে যায় তাতে ১৫ লক্ষ লোকের দৈনন্দিন জলের চাহিদা মেটানো যায়। শহরের ৩৩ শতাংশ লোকের বাড়িতে নিরাপদ পানীয় জলের সরবরাহ নেই, রাস্তার কল থেকে তাঁরা জল সংগ্রহ করেন। জলের সমস্যা ক্রমশই বাড়ছে কলকাতায়, বহুতল বাড়ি ও শপিং মল-এর কল্যাণে কংক্রিটের চাদরে আস্তে আস্তে মুখ ঢেকে ফেলছে এ-শহর, বৃষ্টির জল আর মাটিতে প্রবেশ করার কোনও উপায় নেই। অদূর ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর জলকষ্টের মুখোমুখি হতে চলেছে কলকাতা। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর থেকে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরি করা হয়েছে— ‘জলছবি’। উপদেষ্টা হিসেবে আছেন দফতরের মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এবং পরিবেশবিদ কল্যাণ রুদ্র। ছবিটি নির্মাণের দায়িত্বে রঙ্গমঞ্চ, নির্দেশনায় রুম্পা গুঁই ও শুভব্রত দে। দেখানো হবে আজ ১৮ নভেম্বর নন্দনে বেলা ৩টেয়।

প্রথম চলচ্চিত্র
৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরা নিয়েই কাজ করতে চেয়েছিলেন, এবং করেছেনও অজিতা সুচিত্রা ভীরা— মূলত হায়দরাবাদের চলচ্চিত্রকার, নিবাস মুম্বই। সেই নেগেটিভ-এ সাদাকালো বা রঙের অনুপুঙ্খ গভীরতা, সব মিলিয়ে সিনেমার যে আদত সৌন্দর্য তা খুঁজে পান অজিতা। তাঁর প্রথম কাহিনিচিত্র ‘ব্যালাড অব রুস্তম’-এ দেশের এক প্রত্যন্ত ছোট্ট শহরতলির গল্প, তাতে এক ‘অ্যামবিশন’হীন সরকারি কর্মী জড়িয়ে পড়েন এক চিত্রকরের সঙ্গে। সাদামাটা জীবনেও যে অলৌকিক মুহূর্ত তৈরি হতে পারে তার খণ্ড খণ্ড চিত্ররূপ নিয়েই এ-ছবি। ইতিমধ্যেই ছবিটি দিল্লির ওসিয়ান ফিল্মোৎসবে ‘সেরা পরিচালক’-এর শিরোপা পেয়েছে। দেখানো হয়েছে এবং আমন্ত্রণ পেয়েছে দেশ-বিদেশের নানা উৎসবে। সিনে সেন্ট্রালের এ বারের ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অব নিউ সিনেমা-য় সমাপ্তি-ছবি, দেখানো হবে আজ ১৮ নভেম্বর মেট্রোয় সন্ধে ৬টায়, অজিতার হাতে সিনে সেন্ট্রালের পক্ষ থেকে ‘ইন্দীবর বসু পুরস্কার’ তুলে দেবেন গৌতম ঘোষ। অন্য দিকে সুমনা মুখোপাধ্যায়েরও প্রথম ছবি ‘ড্রিমস’ দেখানো হল নন্দনে, কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবে। সারা দুনিয়ায় মেয়েদের ওপর নানা ধরনের পীড়ন-অত্যাচার নিয়ে, আবার এ সব সত্ত্বেও মেয়েদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে ছবি করেছেন সুমনা।

হাঙ্গেরি থেকে
এ দেশের মাটিতে পা দিয়েই ভালবেসে ফেলেছিলেন ভারতীয় সংস্কৃতিকে। অতঃপর নানা জায়গা ঘুরে চলে যান তিব্বতে। হাঙ্গেরির বিখ্যাত গবেষক-পর্যটক আলেকজান্ডার চোমা ডি কোরস (১৭৮৪-১৮৪২) অবশেষে থিতু হন কলকাতায়। কাজ শুরু করেন এশিয়াটিক সোসাইটিতে। তাঁর উদ্যোগেই প্রথম প্রকাশ পায় তিব্বতি-ইংরেজি অভিধান। অন্য দিকে, ১৯২৬-এ হাঙ্গেরি গিয়ে অভিভূত হন রবীন্দ্রনাথ। কবির নোবেল প্রাপ্তির শতবর্ষ এবং কোরস-এর কাজকে স্মরণে রেখে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে আয়োজিত হয়েছে প্রদর্শনী ‘গেটস অব চোমা’, হাঙ্গেরির বস্ত্রশিল্পী অ্যানা কুবিনির শিল্পকর্ম নিয়ে। এসেছেন শিল্পীও। প্রদর্শনী চলবে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ১০-৫টা, সঙ্গের ছবি রবীন্দ্রনাথকে মনে রেখে ‘মেডিটেশন অ্যাট ডন’, প্রদর্শনী থেকে।

স্পর্ধাবর্ণ
সোভিয়েত-শাসিত চেকোস্লোভাকিয়ায় যে গণতন্ত্র চাপা পড়ে গিয়েছিল, তার বিরুদ্ধেই সাধারণ মানুষ আর তাঁদের নাগরিক সমাজকে সমবেত করে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন ভাচলাভ হাভেল ও তাঁর সহযোদ্ধারা। হাভেল স্যামুয়েল বেকেটের শিষ্য, তাঁর ছোট একটি নাটক ‘প্রোটেস্ট’ বা ‘প্রতিবাদ’ প্রায় সর্বকালের দর্পণ। প্রাতিষ্ঠানিকতা, ক্ষমতার আস্ফালন ও বিপন্ন গণতন্ত্র মূল বিষয় নাটকটির। তার প্রেরণাতেই দেশজ সৃষ্টি চন্দন সেনের— ‘স্পর্ধাবর্ণ’। ২৩ নভেম্বর মধুসূদন মঞ্চে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় নাটকটি অভিনয় করবে সংস্তব নাট্যগোষ্ঠী, নির্দেশনা ও অভিনয়ে দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে পিছিয়ে নেই শহরতলিও। মধ্যমগ্রামের নজরুল শতবার্ষিকী সদনে ২০-২৪ নভেম্বর জাতীয় নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে ‘অল্টারনেটিভ লিভিং থিয়েটার’। ‘নান্দীকার’-এর ‘হৃদমাঝারে’ দিয়ে উৎসবের সূচনা। থাকছে পঞ্জাবের ‘মঞ্চ রঙ্গ মঞ্চ’-এর ‘এক সি মান্টো’, কেরলের ‘লোকধর্মী’-র ‘দ্রৌপদী— দি ওম্যানহুড’ এবং ‘অল্টারনেটিভ লিভিং থিয়েটার’-এর ‘লং মাচর্’। কানহাইয়ালাল-এর নির্দেশনায় মণিপুরের ‘কলাক্ষেত্র’-এর ‘দ্রৌপদী’র অভিনয় দিয়ে উৎসব শেষ।

নান্নুরি
সারা দিন কম্পিউটারে মুখ ডুবিয়ে বসে থাকে। সেটাই জগৎ। আর তাই দিয়েই একটা আস্ত রহস্যের সমাধান করে ফেলেছিল ‘নান্নুরি’। সে আসলে গৌরব পাণ্ডের সাম্প্রতিক ছবি হনুমান ডট কমের অন্যতম চরিত্র। অভিনয়ে সালোনি পাণ্ডে, গৌরবেরই মেয়ে। ক্লাস নাইনের সালোনির এটাই প্রথম ছবি। তবে অভিনয় করবে, ভাবেইনি সালোনি। হাতে ছিল মাত্র একটা সপ্তাহ। “রোলটা আসলে ছিল একটা ছেলের। কিছু অসুবিধে হওয়ায় মাত্র এক সপ্তাহ আগে বাবা স্ক্রিপ্ট পাঠিয়ে দিয়ে চরিত্রটা করব কি না ভাবতে বলে। নার্ভাস হয়ে পড়লাম। আমার পিসি টেলিফিল্ম বানায়। ও ভরসা দিল। বলল এটা তেমন কোনও ব্যাপার নয়। তার পরই আইসল্যান্ডে রওনা দিলাম।” প্লেন-যাত্রায় সঙ্গী ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাতেই বন্ধুত্ব। “এক সঙ্গে স্ক্রিপ্ট পড়তাম। কী ভাবে বললে স্বাভাবিক হবে, উনি শিখিয়ে দিতেন।” তবে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে নার্ভাস হওয়ার সুযোগই মেলেনি। “এত ঠান্ডা যে ক্যামেরার সামনে কেমন লাগছে, ভাবার সময়ই পেতাম না। হি হি করে কাঁপতে কাঁপতে শট শেষ করতাম। এক বার গাড়ির দরজাটাই উড়ে গেল। আমি সব সময় বুম্বা আঙ্কেলের হাত ধরে রাখতাম, যেন উড়ে না যাই!” তুমিও কি নান্নুরির মতো কম্পিউটারের পোকা? “আমি একেবারেই টেক-স্যাভি নই। বন্ধুদের সঙ্গে মাঝে সাঝে চ্যাট, ওই পর্যন্ত।” আবার অভিনয় করবে? “বাবা যদি আবার এক সপ্তাহ আগে ডাক দেয়, তখন করতে হবে।” ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে ছবিটা।


শতবর্ষে
তাঁর আশি বছরের জন্মোৎসবে স্বামী লোকেশ্বরানন্দ বলেছিলেন, ‘এমন মানুষ দেখিনি। উনি সকলের অনুকরণযোগ্য, কিন্তু অননুকরণীয়।’ তিনি বাংলার প্রাণিবিদ্যার জনক, বঙ্গবাসী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সুদেবভূষণ ঘোষ। ১৯৪৭-এ বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে স্নাতক স্তরে পাঠ্য হিসেবে প্রাণিবিদ্যার অনুমোদন করিয়ে প্রথম বঙ্গবাসী কলেজে তা পড়ানোর ব্যবস্থা করেন। গবেষণার সুবিধার্থে ’৫২-তে গিরিশচন্দ্র বসুর নামে ‘জি সি বোস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইউনিট’ স্থাপন করেন। ’৫৫-তে প্রাণিবিদ্যায় প্রথম সাম্মানিক পাঠ্যক্রম চালু করেন বঙ্গবাসীতে। মাধ্যমিকে জীববিজ্ঞানের ১০০ নম্বরের পত্র শুরু করার মুখ্য কারিগর তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক না হয়েও দীর্ঘদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যার আন্ডারগ্র্যাজুয়েট বোর্ড অব স্টাডিজ-এর সভাপতি ও বিজ্ঞান ও কৃষিবিদ্যার ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। স্কুলগুলোতে বিজ্ঞান শাখা স্থাপনে সচেষ্ট ছিলেন। অনেক কলেজ স্থাপন করেন। তাঁর কথায়, ‘কলেজ তৈরি করার যেন একটা নেশা ধরে গিয়েছিল।’ দক্ষিণবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রাম ও সুন্দরবনে বহু স্কুল স্থাপনেও অগ্রণী ভূমিকা নেন। শরণার্থী-পুনর্বাসনে তাঁর প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে প্রথম উদ্বাস্তু উপনিবেশ আচার্য প্রফুল্লনগর। রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির সদস্য ছিলেন দীর্ঘদিন, ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০০-এর ২৫ ডিসেম্বর তিনি প্রয়াত হন। তাঁর স্মরণে তরুণ বিজ্ঞানীদের জন্য বার্ষিক পুরস্কার চালু করেছে দ্য জুলজিকাল সোসাইটি, কলকাতা। গত ১৪ নভেম্বর জুট টেকনোলজির কেনেডি হলে তাঁর জন্মশতবর্ষ পালন করল ছাত্রছাত্রীরা। স্মারক বক্তৃতা দিলেন পবিত্র সরকার।

সঙ্গের ছবির শিল্পী: নির্মলেন্দু মণ্ডল।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.