উত্তরের চিঠি

স্টেশন-ময় ‘অবহেলিত’রা
নিউজলপাইগুড়ি (এন জে পি) স্টেশন উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে পৌঁছবার গেটওয়ে হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার কারণে এটা উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে তো বটেই, ভারতীয় রেলের মানচিত্রে ব্যস্ত স্টেশনের স্বীকৃতি লাভ করেছে। দার্জিলিং, মিরিক, প্রতিবেশী নেপাল ভুটানের অসংখ্য পর্যটক এবং নাগরিক এ স্টেশনের মারফতই পৌঁছন তাদের গন্তব্যে। স্টেশনটিতে ভবঘুরে, শিশু ঝাড়ুদার, ছিন্ন কাপড়ের উন্মাদ, আধা ভারসাম্যহীন নানা বয়সী মহিলা, পুরুষ আর ভিখারি সংখ্যা উৎকট ভাবে বেড়ে চলেছে। নানা বিলাসী পর্যটকদের পাশে নোংরা খালি গায়ের শিশুর প্রকট উপস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বৈষম্যর চেহারা। এন জে পি স্টেশনের কলেবর যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, অসংখ্য নিয়ন লাইটের মার্কারি ভেপার ল্যাম্পে এন জে পি স্টেশন চকচকে হচ্ছে, ৮-১০ থেকে ১৪-১৫ বছরের শিশু কিশোর ভিখারির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ট্রেনের ভিতর পড়ে থাকা খাবার, প্ল্যাটফর্মে পড়ে থাকা পাউরুটি লুচি এরা নির্দ্বিধায় খাচ্ছে। সরকার বা এন জি ও এদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিলে এরা হয়তো বাঁচতে পারে।
মাদকাসক্ত কিশোর। এনজেপি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে তোলা ছবি।
সমাজের বাকি মানুষরা এদের সম্পর্কে এক নির্মোহ মানসিকতা পোষণ করছে। এদের দূর দূর ছাই ছাই করা হচ্ছে। চোখ বুজে থাকলেই কি এই সামাজিক সমস্যা ও ব্যাধি দূর করা যাবে। তা ছাড়া এই স্টেশনটিতে খাবারের দাম অস্বাভাবিক বেশি। শিশু ঝাড়ুদারের পচা খাবারই ভবিতব্য।
২০-২৫ বছর ধরে এদের দেখে চলেছি। এরা কি বড় হয় না? বড় হওয়ার পর কোথায় যায়? কী ভাবে এদের চলে? অদ্ভুত ঘটনা হল, ঠিক একই বয়সী, প্রায় একই চেহারার শিশু ঝাড়ুদাররা পূর্বজদের রিপ্লেস করছে! অমর্ত্য সেন তার আলোচনায় মিসিং উওম্যান শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেছেন। এটা কি মিসিং চিল্ড্রেন-এর কেন্দ্রভূমি?
সেই রাত ১১টা-সাড়ে ১১টা নাগাদযয় বছর উনিশ কুড়ির জিনস পরিহিতা অথচ খালি পায়ের এক মানসিক ভারসাম্যহীনাকে দেখা গেল স্টেশনের ওভারব্রিজ দিয়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে ইতস্তত দৌড়াদৌড়ি করতে। মুখে বিড়বিড়ানির শব্দ। কখন সিঁড়িতে সে বসে পড়ছে। শুনলাম স্টেশনের কর্তব্যরত পুলিশকর্মী লাঠি দিয়ে তাকে বেদম প্রহার করে। স্টেশনের ওয়েটিং রুম, ডর্মিটরি সব স্থানেই মেয়েটি ঢুকে যাচ্ছে। এদের নিয়ে কত দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সামাজিক ভাবে এরা ভীষণই vulnerable। এদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা না হলে যে অবস্থার সৃষ্টি হবে। সেটা এক কথায় হবে নারকীয়।
পরিষেবার মান দ্রুত নামছে
মোবাইল পরিষেবা নিয়ে অনেক বিএসএনএল গ্রাহকের যেমন বিস্তর নালিশ আছে, তেমনই ক্ষোভ রয়েছে আমার। আমার ভাবতেও বিস্ময় লাগে যে বিএসএনএল মোবাইল পরিষেবার মান যেন দিন দিন নীচের দিকেই নেমে যাচ্ছে। আমরা যখন বিএসএনএল-এর মোবাইলে জরুরি কথা বলতে যাই, তখন দেখি যে হয় বারবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিবারই সংযোগের জন্য ৭০ পয়সা চার্জ কেটে নেওয়া হচ্ছে। নতুবা দেখা যায় যে মোবাইলে নেটওয়ার্ক নেই। শুধু তাই নয়, আবার কখনও বারবার সংযোগের চেষ্টা করার সময় পর্দায় ভেসে উঠছে ‘কল ফেইল্ড’ অথবা নারী কণ্ঠে শোনা যায় এ রুটের সব লাইন ব্যস্ত আছে।
অথচ অন্য মোবাইলে ফোন করে লাইন পাওয়া যায়। কিন্তু বিএসএনএল ফোনে ‘অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পরে ডায়াল করুন’, শুনে শুনে অনেকটাই বিরক্ত হয়ে আমাদের ভাবতে হয় যে আগামী দিনে এই সংস্থার গ্রাহক আর থাকব কি না। তাই বিএসএনএল-এর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের প্রশ্ন যে যখন বেসরকারি মোবাইল সংস্থাগুলি গ্রাহক টানার জন্য নিত্যনতুন প্রযুক্তি, প্যাকেজ ব্যবহার করে তাদের পরিষেবার প্রতি আকর্ষণ করার জন্য টানা চেষ্টা চালাচ্ছে, বিএসএনএল-এর মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল পরিষেবায় তাদের গ্রাহকদের এত অভিযোগ উঠছে কেন? আর কেনই বা তাদের মোবাইল পরিষেবার দৈন্যদশ্যর চিত্রটি তাদের গ্রাহকদের কাছে লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে? তা হলে আজ এটাই কি প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে না যে দেশের বেসকরারি মোবাইল সংস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে সংস্থাটিকে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে নিয়ে যেতে চাইছেন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, যা সংস্থার কর্মীদের অন্ধকারের দিকে ঠেলে নিয়ে যেতে পারে আগামী দিনে। তাই নয় কী?





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.