জমে উঠেছে থিমের লড়াই। পাড়ার মণ্ডপে মণ্ডপের এই লড়াইয়ে যেন সামিল হয়েছে সাধারণ মানুষ। রবিবার বিকেল থেকেই কৃষ্ণনগরের রাস্তায় ঢল নেমেছে মানুষের। সময় যত বেড়েছে ততই যেন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সেই ভিড়।
ইতিহাস বলে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে সূচনা হয়েছিল জগদ্ধাত্রী পুজোর। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমশ এই শহরের একটি বড় উৎসবের আকার নিতে থাকে। বারোয়ারিগুলি নিত্যনতুন ভাবনায় থিমের সাজে সেজে উঠতে থাকে। সেই লড়াইয়ের যাবতীয় আলো যেন দিন দিন কেড়ে নিতে থাকে ঘূর্ণি। শিল্পের কারণে কৃষ্ণনগরের এই প্রান্তিক এলাকা পৃথিবী বিখ্যাত। প্রতি বছর এই এলাকার বারোয়ারিগুলি তাদের সেই সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে শিল্পের উৎকর্ষ আর নতুন থিমের ভাবনায় যেন সাজিয়ে তোলেন
গোটা এলাকা।
এ বারও নজর কাড়ছে ঘুর্নির ভাই ভাই সঙ্ঘ। কাচ, ছবি, বিচুলি দিয়ে তৈরি করেছে মন্দিরের আকারে মন্ডপ। নাম ‘পুতুলের দেশ’। কুলুপাড়া সাধনা সঙ্ঘ তৈরি করেছে উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও তার উদ্ধার কাজ। ঘরামিপাড়া তুফান সঙ্ঘ তৈরি করেছে আস্ত চিড়িয়াখানা। আর ঘরামিপাড়া বারোয়ারির ‘ছোটা ভীম’ এবার শিশুদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। প্রয়াত মান্না দে-কে শ্রদ্ধা জানাতে ঘূর্ণি বারোয়ারির উপহার ‘কফি হাউস’।
এই লড়াই আর কিন্তু ঘূর্ণির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। অন্য বারের মত এ বারও কালীনগর এলাকার রেনবো ক্লাব মানুষের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু। তারা তৈরি করছে গোয়ার রাম সীতার মন্দির। আর এম এন বি ক্লাব মুম্বইয়ের শিবাজী টার্মিনাল স্টেশনের আদলে তৈরি সুবিশাল মণ্ডপ এবারের পুজোর বিশেষ আকর্ষণ। এছাড়া গোলাপোট্টি বারোয়ারি থিমের বিষয় ছবিতে সুকুমার রায়ের ‘আবোল তাবোল’-এর চরিত্ররা। ষষ্ঠীতলা বারোয়ারির বিষয় নবদুগা। রায়পাড়া-মালিপাড়া বারোয়ারি তৈরি করেছে জমিদার বাড়ি। এছাড়াও কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হাতার পাড়া বারোয়ারি,কলেজস্ট্রীট বারোয়ারি, জজ কোর্ট বারোয়ারি, পাত্রবাজার বারোয়ারি, নেদেরপাড়া বারোয়ারি, চকের পাড়া বারোয়ারি, মালোপাড়া বারোয়ারি, বউবাজার বারোয়ারি, কুর্চিপোতা বারোয়ারি। এ ছাড়াও শহরের বুকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অজস্র বারোয়ারিও পুজোর অন্যতম আকর্ষণ। তবে জনপ্রিয়তায় সকলকে ছাড়িয়ে চাষা পাড়ার প্রায় ‘পাঁচ শো’ ভরির সোনার গহনার মালিক ‘বুড়িমা’ তো ক্রমশ মিথ হয়ে উঠেছে। প্রতিবারের মত এবারও লক্ষ মানুষের ভিড়ে জমজমাট বুড়িমার মণ্ডপও। |