আচমকা কাজ হারানোয় বিক্ষোভে সিভিক পুলিশ
চমকা কাজ হারানোর প্রতিবাদে বর্ধমান ও গলসি দু’জায়গাতেই বিক্ষোভ দেখালেন সিভিক পুলিশের কর্মীরা। রবিবার গলসিতে শুধু থানার সামনে বিক্ষোভ দেখালেও বর্ধমানে টাউনহলের কাছে জিটি রোড অবরোধ করেন তাঁরা। এই ঘটনায় এক মহিলা-সহ ১০ জনকে আটক করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ।
সিভিক পুলিশের কর্মীরা জানান, গত ১১ অক্টোবর থেকে তাঁদের কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু রবিবার আচমকা জানানো হয়, আর তাঁদের কাজ নেই। এমনকী বিনা নোটিশে কাজ বন্ধ করিয়ে দেওয়ার পরে তাঁরা প্রাপ্য মজুরি কবে পাবেন তাও বলা হয়নি। ওই কর্মীদের দাবি, তাঁদের স্থায়ী করতে হবে, নয়তো মাসে ২৬ থেকে ২৮ দিন কাজ দিতে হবে। মাসের শেষে দৈনিক ১৪১ টাকা ৮১ পয়সা হিসেবে যে ভাতা স্থির হয়েছিল তা মিটিয়ে দেওয়ারও দাবি করেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, কাজে নেওয়ার সময়ে পদটি যে অস্থায়ী তা তাঁদের জানানো হয়নি। এ দিন গলসি থানার সামনে দাঁড়িয়ে সিভিক পুলিশের এক কর্মী তথা স্থানীয় কুলগড়িয়া চটির বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষের অভিযোগ, “গলসি ব্লকে সবমিলিয়ে ৪৯৩ জনকে কাজে নেওয়া হয়েছিল। কয়েকজনের মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছিল, বাকিদের হয়নি। বিনা প্রশিক্ষণেই শুধুমাত্র ব্যাচ সম্বল করে গভীর রাত পর্যন্ত দু’নম্বর জাতীয় সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় কাজ করানো হয়েছে। সঙ্গে লাঠিও দেওয়া হয়নি।” আরেক কর্মী আদ্রাহাটির মৃন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “দৈনিক ১৪১ টাকা ৮১ পয়সা মজুরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। টানা কাজ করানো হবে বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু সকালে গিয়ে শুনতে পাই, আর কাজ নেই। স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি। কিন্তু থানার কেউ আমাদের কথা শোনেননি।”
বর্ধমানে জিটি রোডে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সিভিক পুলিশের কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমানে প্রায় ৫০০ সিভিক পুলিশ নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ২৫০ কর্মী টাউনহলে জমা হয়ে এ দিন অভিযোগ জানান, নিয়োগের সময় তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থায়ী করা হবে। তার আগে নিয়মিত ভাতা ও কাজের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এ দিন আচমকা কাজে আসতে হবে না বলে জানানো হয়। ওই কর্মী সুশোভন পাল, প্লাবন রায়, রাজু দাসদের দাবি, “পথ অবরোধ করব। থানায় স্মারকলিপিও দেব। কাজে ফিরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” তবে দুপুর ১টা নাগাদ সিভিক পুলিশের কর্মীরা জিটি রোড অবরোধ করতেই এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ, বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায় বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে অবরোধ তুলতে আসেন। তারপরেই গোলমাল শুরু হয়। অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশ লাঠি চালায় বলেও সিভিক পুলিশ কর্মীদের দাবি।
তবে বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ রায় বলেন, “সিভিক পুলিশের কিছু লোক জিটি রোড অবরোধ করে। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে তাঁরা ঝামেলা শুরু করে, তর্কাতর্কি করে। এক মহিলা-সহ ১০ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।” তবে ওই অস্থায়ী পদে নিয়োগের শর্ত ঠিক কী ছিল, তা বলতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, “ওই পদে নিয়োগ সংক্রান্ত আদেশের নথি না দেখে কিছু বলা সম্ভব নয়।” বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “সিভিক পুলিশের পদে চুক্তিভিত্তিক কাজ হয়। যতদিন দরকার তত দিনই এঁদের কাজে রাখার কথা। গত ৯ তারিখ এঁদের ২৮ দিনের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। তারপরেই এঁদের রিলিজ করে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে সব থানাতেই সিভিক পুলিশকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বর্ধমানে এই নির্দেশের প্রতিবাদে কিছু সিভিক পুলিশ জিটি রোড অবরোধ করেন। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও করেন। তাই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.