|
|
|
|
আনন্দplus এক্সক্লুসিভ
|
জীবনের মতো |
সত্তরের দশকের বিখ্যাত নাট্যাভিনেত্রী। শ্যুটিংয়ের সময় তাঁর জলে ডুবে মৃত্যু।
তাই নিয়েই এ বার সিনেমা! আর বিশাল আলোড়ন। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
প্রসাদ সেনগুপ্ত= শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়
খেয়া চক্রবর্তী= পাওলি
অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়= ব্রাত্য বসু |
সব চরিত্রের নাম কাল্পনিক। কিন্তু সত্যিই কি তাই?
শুরু হতে চলেছে বাংলা নাট্যজগতের পটভূমিতে তৈরি এক চাঞ্চল্যকর সিনেমা। নাম ‘নাটকের মতো’। পরিচালক নাট্যব্যক্তিত্ব দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। প্রায় দশ বছর ধরে তথ্যচিত্র বানাচ্ছেন দেবেশ। তিরিশটিরও বেশি নাটক পরিচালনা করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাজ হল ‘ফ্যাতারু’, ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’, ‘নিঃসঙ্গ সম্রাট’ ও ‘দেবী সর্পমস্তা’। ‘নাটকের মতো’ তাঁর প্রথম ফিচার ফিল্ম। অভিনয়ে ব্রাত্য বসু, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় আর পাওলি।
ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনের প্রযোজনায় তৈরি ছবিটির শ্যুটিং শুরু হতে হতে আগামী বছরের মে মাস। দেবেশ বলছেন, “সিনেমাটা শুরু হচ্ছে জলে ডুবে যাওয়া এক অভিনেত্রীর মৃত্যু দিয়ে। ‘নাটকের মতো’ নামে এক ছবির শ্যুটিং করতে গিয়ে তিনি মারা যান। সেটা আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হচ্ছে। তদন্ত যিনি করবেন, তিনি শ্যুটিং ইউনিটের লোক থেকে শুরু করে সেই অভিনেত্রীর স্বামী, মা এবং তাঁর নাটকের দলের নির্দেশক, বন্ধু সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন। দুর্ঘটনা ঘটলে শ্যুটিং ইউনিটের অবহেলার জন্য জেরা করা প্রয়োজন। আত্মহত্যা হলে তাঁর পরিবারের লোকজন, বন্ধুবান্ধব, নাটকের দলের নির্দেশকের জেরা হওয়াটা দরকার।”
পরিচালক আরও জানান যে, সিনেমায় এই তদন্ত করতে গিয়ে সেই অভিনেত্রীর জীবনের নানা অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে। কী ভাবে সেই অভিনেত্রী এক খেলোয়াড়ের প্রেমে পড়েন, কী ভাবে বিয়ের পর তিনি সেই খেলোয়াড়কে তাঁর নিজের নাটকের দলে নিয়ে আসেন, কী ভাবে সেই খেলোয়াড় নির্দেশক হন এ সবই থাকবে গল্পে। “এবং শেষে দেখা যায়, অভিনেত্রীর মৃত্যুর দু’বছর পরে সেই খেলোয়াড়ই দলের নির্দেশক হয়ে ওঠেন। দলটা ভেঙে যায়। এবং মূল যে নির্দেশক, তিনি দল ছেড়ে বেরিয়ে
যান। টুকরো শটের মধ্য দিয়ে এটাও দেখানো হবে যে এক অন্য অভিনেত্রী দলে আসেন। তাঁর আগের পক্ষের একটি ছোট বাচ্চাও আছে। আর
তার সঙ্গে দেখানো হবে যে, দলের রিহার্সাল রুম থেকে মৃত অভিনেত্রীর ছবিটি নামিয়ে ফেলা হচ্ছে,” জানাচ্ছেন পরিচালক। |
|
|
|
|
|
|
অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় |
কেয়া চক্রবর্তী |
রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত |
ব্রাত্য বসু |
পাওলি |
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় |
|
নাট্যজগতের অনেকেই অবশ্য দেবেশের এই ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’ যুক্তিটা বিশ্বাস করছেন না। তাঁদের
এক অংশের ধারণা যে ‘নাটকের মতো’-র অভিনেত্রীর চরিত্রটি লেখা হয়েছে কেয়া চক্রবর্তীর জীবনকে
ভিত্তি করেই। “আমার কাছে গল্পটা একদম জীবন্ত মনে হচ্ছে। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত আমি নান্দীকার-য়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ‘ফুটবল’ নাটকের তিরিশ নম্বর শো অবধি আমি দলে ছিলাম। দেবেশের গল্পটা শুনে আমার কেয়াদির কথা মনে পড়ছে,” বলছেন অভিনেতা রণজিৎ চক্রবর্তী।
১৯৭৬ সালে নান্দীকারে যোগ দেন অভিনেত্রী সন্ধ্যা দে। সতেরো বছর বয়সে ‘পাপ-পুণ্য’ নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। সেই থেকে টানা সাত বছর ধরে তিনি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। বলছেন, “কেয়াদি আমার থেকে অনেক সিনিয়র ছিলেন। কিন্তু কেয়াদির সঙ্গে সখ্য হয়েছিল। যার ফলে গভীর ভাবে কেয়াদির সঙ্গ পেয়েছিলাম।” আরও জানান, “একদিন ঠিক হল, সিনেমার শ্যুটিং সেরে কেয়াদি নান্দীকারে আসবেন। আমি বসে আছি নান্দীকারের রিহার্সাল রুমে। আমাদের দলের একজনের বৌভাতে আমার আর কেয়াদির যাওয়ার কথা ছিল। হঠাৎ খবর এল যে, কেয়াদি নেই! দেবেশের সিনেমার গল্পটা আমাকে আবার পুরনো দিনে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। কিছু মিল খুঁজে পাচ্ছি।”
১৯৯৩ সাল থেকে দেবেশ গবেষণা করেছেন কেয়া চক্রবর্তীকে নিয়ে। ‘সংসৃতি’ থেকে ১৯৯৫-য়ে একটি বই প্রকাশ হয়। সম্পাদক ছিলেন দেবেশ নিজেই। নাম ছিল ‘কেয়া চক্রবর্তী বিশেষ সংখ্যা’। সেখানে কেয়া চক্রবর্তীর মৃত্যু নিয়ে অনেকের লেখা রয়েছে। বার বার সেই লেখাগুলোতে প্রশ্ন উঠেছে ১৯৭৭ সালে সাঁকরাইলে গঙ্গার ওপর ‘জীবন যে রকম’য়ের শ্যুটিং চলাকালীন কেয়া চক্রবর্তীর জলে পড়ে মৃত্যু কি শুধু মাত্র একটি দুর্ঘটনা ছিল?
গত বুধবার বাংলা অকাদেমিতে নাট্য স্বজন-য়ের একটা সেমিনারে দেবেশ তাঁর বক্তব্যে সেই বিশেষ সংখ্যায় পুনর্মুদ্রিত কেয়া চক্রবর্তীর ১৯৭৫-এ লেখা একটি রম্যরচনারও উল্লেখ করেন। সে দিন সেমিনারে ওই লেখাটির কথা উল্লেখ করে দেবেশ বলেন, “কেয়াদি লিখেছিলেন: ‘আজ সন্ধ্যায় ফিল্ম সোসাইটির একটা ছবি দেখতে যাব ভেবেছিলাম। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আটর্স-এ। উনি মানা করছেন। সন্ধ্যায় ওঁর মিটিং আছে, নিয়ে আসতে পারবেন না। শো শেষ হতে ন’টা অত রাতে ও পাড়া থেকে একা আসা ঠিক নয়। আমি জানি আমার চেয়ে বয়সে ছোট , বুদ্ধিতে কাঁচা, বহু ছেলে ওখানে যাবে। কোনও বাধা থাকবে না তাদের... সুতরাং আমি মিসেস্ আর. পি. সেনগুপ্ত এঁটো পেড়ে, চায়ের বাসন ধুয়ে, সোজা স্টেজে চলে যাব।’”
দেবেশের এ কথা শুনে দর্শকদের মধ্যে এক অস্বস্তিকর নিস্তব্ধতা তৈরি হয় সে দিন। পরিচালক আরও বলে চলেন: “এই গবেষণার কাজটা করতে গিয়ে আমি নান্দীকারে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি যে কেয়া চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর নান্দীকার ‘কেয়ার বই’ নামে যে সংকলনটি প্রকাশ করে তার একটি সংখ্যাও নেই। নান্দীকার আর থিয়েটারের প্রতি কেয়াদির যে ডেডিকেশন, তা রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত ভুলে গিয়েছেন। কেয়াদি নিজের গয়না বিক্রি করে, বেনারসি শাড়ি বিক্রি করে নান্দীকারে অর্থ জোগান দিয়েছিলেন এক সময়। নান্দীকারের জন্য এক কথায় নিশ্চিত অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে দিয়ে অনিশ্চিত জীবনে পুরো সময়ের নাট্যকর্মী হয়েছিলেন। এ সব শুধু মাত্র থিয়েটারকে ভালবেসে। কিন্তু আজ নান্দীকারের রিহার্সাল রুমে কেয়াদির একটা ছবিও নেই।” আরও বলছিলেন, “কেয়াদির মরদেহ নিয়ে যে দিন শোকমিছিল বের হয়, সে দিন নান্দীকারের ছেলেমেয়েরা চোখের জল ফেলে বলেছিল, ‘তুমি কাজ করতে করতে চলে গেলে। আমরা তোমায় কাজ করতে করতে মনে রাখব।’ রুদ্রবাবু তথা নান্দীকার সে কথা রাখেনি।” |
কাউকে আঘাত করে ছবি বানাচ্ছি না। কোনও বিতর্ক তৈরি করব বলেও ছবিটা পরিচালনা করছি না।
দেবেশ চট্টোপাধ্যায় |
আমাকে একজন থিয়েটারের অভিনেত্রীর চরিত্র করতে হবে... সিনেমার কাস্টিংও খুব ইন্টারেস্টিং।
পাওলি |
গোটা তিনেক প্রধান চরিত্র রয়েছে। তাদের মধ্যে বাস্তব জীবনের ছায়া থাকতে পারে।
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় |
|
তা হলে কি রণজিৎ চক্রবর্তী বা সন্ধ্যা দে-র কথা অনুযায়ী কেয়া চক্রবর্তীর জীবনকে কেন্দ্র করেই দেবেশ তাঁর সিনেমার চিত্রনাট্যটি লিখেছেন? উত্তরে পরিচালক জানান, “এটা নির্দিষ্ট কারও জীবনের সঙ্গে মিলতেই পারে। ‘অসুখ’ বলে একটি নাটক সাম্প্রতিক কালে হয়েছে। সেখানেও নাকি অনেকে নান্দীকার এবং গৌতম হালদারের বিরোধের গল্প খুঁজে পেয়েছেন। সেটা সম্পূর্ণ দর্শকদের ব্যাপার। আপনারা খুঁজে বের করতেই পারেন যে আমার সিনেমাটা কেয়াদির জীবনের ওপর ভিত্তি করে করা কি না।”
নাটকের জগৎটা খুব ছোট। দেবেশ কি এটা ভেবে দেখেছেন যে, এমন একটা ছবি পরিচালনা করে তিনি কিছু মানুষকে আঘাত করতে পারেন? যাঁদের সঙ্গে তাঁর বহু দিনের পেশাগত এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে? কেউ কেউ এটাও বলতে পারেন যে, দেবেশের হঠাৎ করে এমন একটি ছবি পরিচালনার পিছনে কোনও অন্য রকমের উদ্দেশ্য থাকতে পারে। বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। উত্তরে দেবেশ এটুকু বলছেন যে, তিনি জোর করে কোনও মিল তৈরি করেননি। “বিতর্ক সৃষ্টি করার জন্য আমি সিনেমাটা পরিচালনা করছি না। এর আগেও ভারতীয় চলচ্চিত্রে বাস্তবের ছায়া থাকা ঘটনা অবলম্বনে সিনেমা তৈরি হয়েছে। ইন্দিরা গাঁধীর জীবদ্দশায় তাঁর চরিত্র অবলম্বনে তো ‘আঁধি’ তৈরি হয়েছিল। সুচিত্রা সেন অভিনয় করেছিলেন,” বলছেন দেবেশ। আরও জানান, ‘‘কেয়াদি প্রসঙ্গে একটা কথাই বলব। উনি কারও একার সম্পত্তি নন। তিনি নাট্যজগতের সম্পদ। আমি কাউকে সিনেমার মাধ্যমে আঘাত করতে চাই না। অনেক বছর আগে থেকেই আমি এই বিষয় নিয়ে সিনেমা পরিচালনা করব বলে ঠিক করেছিলাম। এমনটা নয় যে হঠাৎ করে এই কাজটা শুরু করেছি। আমার সিনেমাটা হল এক লড়াকু মেয়ের জীবনের কথা। তা ছাড়া আমি এই সিনেমার মধ্য দিয়ে একটা সময়কে ধরার চেষ্টা করেছি। সেই সময়ের প্রেক্ষিতে এক অভিনেত্রীর ব্যক্তিজীবনকে দেখা, তাঁর নাট্যজীবনকে দেখা। থিয়েটার নির্দেশক হিসেবে আমি নাটকের পটভূমিকাই বেছে নিয়েছি।” |
নাটকের মতো
কেয়া চক্রবর্তী |
ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনের তরফ থেকে ফিরদৌসুল হাসান জানাচ্ছেন, “ভাল সিনেমা বানাব বলেই প্রযোজনায় এসেছি। তাই এই ছবিটি করতে রাজি হয়েছি।” ইতিমধ্যে জি বাংলা সিনেমা-র সঙ্গে ‘নাটকের মতো’ ছবির স্যাটেলাইট রাইটস কেনা নিয়েও কথা হয়েছে। রাজর্ষি দে, প্রোগ্রামিং হেড, জি বাংলা সিনেমা, বলছেন, “এই সিনেমার বিষয়টা সেন্সিটিভ আর নস্ট্যালজিক। বাংলা আর বাঙালির ইতিহাসকে নিয়ে যে কোনও কাজে দর্শকের উৎসাহ রয়েছে। তা সে ‘রুদ্ধসংগীত’য়ের মতো নাটক হোক বা ‘মেঘে ঢাকা তারা’র মতো সিনেমা। ঠিক হয়েছে যে, ‘নাটকের মতো’র স্যাটেলাইট রাইটস আমরা কিনব। তা ছাড়া ছবির আর যা লজিস্টিক সাহায্য দরকার তা-ও দেব।”
শাশ্বত এর আগেও জীবনীমূলক সিনেমা করেছেন। ‘মেঘে ঢাকা তারা’তে তাঁর চরিত্রের নাম ছিল নীলকণ্ঠ বাগচি। অনেকেরই ধারণা যে, তা ছিল ঋত্বিক ঘটকের জীবনের আদলে লেখা। ‘নাটকের মতো’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে শাশ্বত বলেন, “এ হল থিয়েটারের ব্যাকগ্রাউন্ডে তৈরি একটা ছবি। গোটা তিনেক প্রধান চরিত্র রয়েছে। তাদের মধ্যে বাস্তব জীবনের ছায়া থাকতে পারে।” আরও জানান, “দেবেশ নাটকের মানুষ। উনি নাটকের যে কোনও অভিনেতাকেই নিতে পারতেন এই চরিত্রের জন্য। কিন্তু তা না-নিয়ে আমাকে বেছে নিলেন। এটা আমার কাছে একটা বড় প্রাপ্তি। হয়তো এই সিনেমা করে আমার আবার নাটকে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছেটা হবে। তবে একটা কথা বলি, নামকরা চরিত্রদের নিয়ে সিনেমা করার ঝুঁকি থাকে। দর্শক সেই সব কাজের মূল্যায়ন করতে সময় নেন। বব বিশ্বাসের মতো চরিত্র মানুষকে সঙ্গে সঙ্গে আকৃষ্ট করে। কিন্তু এই ধরনের চরিত্র করা আমার কাছে ‘লং টার্ম ডিপোজিট’। হয়তো কুড়ি বছর পরে দর্শক এর সঠিক মূল্যায়ন করবেন।” |
|
সোহিনি সেনগুপ্ত |
আমার আফশোস যে আমি কেয়ামাসির অভিনয় নিজে দেখিনি। বাবার কাছে শুনেছি, ওঁর মধ্যে যে আগুনটা ছিল সেটা প্রত্যেক নাট্যশিল্পীর মধ্যে থাকা উচিত। মা-ও সে কথা বলেন। এ-ও শুনেছি মায়ের মুখে যে, কেয়ামাসি ওয়াজ অ্যান এক্সেপশনাল অ্যাক্ট্রেস।
অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি সিনেমাতে দেখেছি। যেহেতু আমিও ওঁর মতো লম্বা-চওড়া, আমি চেষ্টা করি ওঁকে কপি করতে। দেবুদার (দেবশঙ্কর হালদার) অভিনয়ে আমি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাপটটা দেখতে পাই। আর আমার বাবা (রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত)? শুধু একটাই কথা বলব, উনি থিয়েটারকে ধারণ করেন। যে যা খুশি সিনেমা বানাতে পারে। তাতে তার স্বাধীনতা আছে। যাঁরা লেজেন্ড তাঁদের নিয়ে এই রকম সিনেমা হয়েই থাকে। তাই এটাও হোক না। যাঁরা থিয়েটার দেখতে আসেন, তাঁরা কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ সেটা জানেন এটাই ভরসা। আসল কথাটা হল, কাজ করে যাওয়া। এই শনিবার ‘নাচনী’র তেইশতম শো ছিল। প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ। পত্র-পত্রিকায়, সেমিনারে যে যা-ই বলুক না কেন, মানুষ আমাদের নাটক দেখতে এসেছেন। এবং এ ভাবেই আমরা সাধনা করে এসেছি। যে দলই ভাল থিয়েটার করবে, লোকে তার থিয়েটার দেখবেই। এর বাইরে দর্শক খুব একটা মাথা ঘামান না। |
|
পাওলি এখন মুম্বইতে। ‘নাটকের মতো’ প্রসঙ্গে জানান, “আমাকে দেবেশদা একটা চরিত্র অফার করেছেন। বলেছেন আমাকে একজন থিয়েটারের অভিনেত্রীর চরিত্র করতে হবে। ষাট বা সত্তরের দশকের মহিলাদের জীবনে যে স্ট্রাগলটা করতে হত, সেটা কি আজকের দিনের মহিলাদেরও করতে হয়? এই সিনেমাতে এটাই বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। দেবেশদা থিয়েটারে ভাল কাজ করেন। উনি নাটক নিয়ে সিনেমা পরিচালনা করলে তা নিশ্চয়ই ভাল হবে। আমার সঙ্গে অপুদা (শাশ্বত) আর ব্রাত্যদা রয়েছেন। কাস্টিংটাও ইন্টারেস্টিং।”
যদিও শাশ্বত বা পাওলি, কেউই তাঁদের চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবের ঘটনাকে মেলাতে চাননি, ব্রাত্য ব্যতিক্রম। দেবেশ যে বলছেন তাঁর ছবির সব চরিত্র কাল্পনিক, তা শুনে ব্রাত্য মুচকি হেসে বলেন, “দেবেশ আমাকে বলেছে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদলে একটা চরিত্র তৈরি হচ্ছে। সে চরিত্রটা করতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত। আমি এই ধরনের কাজ থিয়েটারে করেছি। ‘রুদ্ধসংগীত’ করেছি। সেটা একটা হিট নাটক। বাংলা সিনেমায় এই ধরনের কাজকে আমি স্বাগত জানাই।”
তা হলে কি টলি পাড়াতে নাটকের সব চরিত্ররা কাল্পনিক নন?
|
দেবেশ আমাকে বলেছে, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদলে একটা চরিত্র
তৈরি হচ্ছে। সে চরিত্রটা করতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত। আমি এই ধরনের
কাজ থিয়েটারে করেছি। বাংলা সিনেমায় এই কাজকে স্বাগত জানাই।
ব্রাত্য বসু |
|
|
|
|
|
|