ফের নির্জলা গোটা হাওড়া শহর!
জল সরবরাহে ব্যর্থতা যে পুর-নির্বাচনের সপ্তাহ দু’য়েক আগেও বামফ্রন্ট-শাসিত হাওড়া পুরসভার পিছু ছাড়ছে না, আরও এক বার তা প্রমাণ করে দিল শনিবারের ঘটনা। এ দিন ভোরে পদ্মপুকুর জল-প্রকল্পের জন্য গঙ্গা থেকে জল তোলার সময়ে বৈদ্যুতিক গোলযোগে পুরসভার দু’টি মোটরই পুড়ে যায়। ফলে গঙ্গা থেকে জল তুলতে না পারায় বন্ধ হয়ে যায় শহর জুড়ে জল সরবরাহ। যার ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জল না পেয়ে এ দিন নাজেহাল হলেন সাধারণ মানুষ। আজ, রবিবারও জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি পুরকর্তারা।
এ বিষয়ে হাওড়া পুরসভার জল সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ সমীর সাহা বলেন, “শনিবার ভোরে জল তোলার সময়ে সিইএসসি-র বৈদ্যুতিক লাইনে গোলমাল হওয়ায় দু’টি মোটর পুড়ে গিয়েছিল। বাকি দু’টি পাম্প চালিয়েও পর্যাপ্ত পরিমাণ জল তোলা যায়নি। ফলে শহরে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা যায়নি।”
দিনভর হাওড়ার মানুষ জল না-পাওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “এদের পুর-ভোটে লড়াই করার কোনও রকম আগ্রহই নেই। তাই ভোটের কয়েক দিন আগে এই ঘটনা সত্ত্বেও হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। মানুষের ন্যূনতম প্রয়োজন হল জল। তা দিতেও দিনের পর দিন ব্যর্থ হয়েছে ওরা। আগামী ২২ নভেম্বর পুরসভার নির্বাচনের দিন মানুষ এর জবাব নিশ্চয়ই দেবে।”
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পদ্মপুকুর জল-প্রকল্পের দু’টি ইউনিটের জন্য গঙ্গার জল তোলা হয় বটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরের একটি পাম্পিং স্টেশন থেকে। সেখানে পুরসভার দু’টি ও কেএমডিএ-র দু’টি বড় পাম্প রয়েছে। পাম্পগুলি চালিয়ে একটি মাত্র পাইপের মাধ্যমে জল তুলে পাঠানো হয় প্রকল্পে।
জল সরবরাহ দফতরের মেয়র পারিষদ সমীরবাবু জানান, ঘটনার পরে এ দিন সকালেই তিনি পাম্পিং স্টেশনে চলে আসেন। দিনভর সিইএসসি এবং পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের তদারকি করেন। সিইএসসি বিকেলের মধ্যে বৈদ্যুতিক লাইনের গোলমাল সারিয়ে ফেলে। এর পর থেকে পাম্পটি সারানোর কাজ শুরু করেছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা।
পাম্প সারানো হয়ে গেলেই কি ঠিকমতো জল পাবে হাওড়া?
সমীরবাবু বলেন, “পাম্প সারানোর সঙ্গে সঙ্গেই যে শহরে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে, তা বলা যাচ্ছে না। পাম্প সারানোর পরে প্রথমে গঙ্গা থেকে জল তুলে প্রকল্পে পাঠানো হবে। এর পরে শোধন করে তা পাঠানো হবে গোটা শহরে।”
তবে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা সারা রাত পাম্প সারানোর চেষ্টা করলেও রবিবার যে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে, তা জোর দিয়ে বলতে পারেননি পুরকর্তারা। সমীরবাবু বলেন, “আজ রাতের মধ্যে পাম্প যদি সারানো যায়, তবেই গঙ্গা থেকে জল তোলা যাবে। তার পরে সরবরাহের চেষ্টা করা হবে।” |