চারদিকে বসতি। মাঝে এক ফালি মাঠ। সেখানে বছরভর আয়োজিত হয় নানা অনুষ্ঠান। বাজে লাউডস্পিকার। অনেক অনুষ্ঠানের মাত্রাছাড়া শব্দে বয়স্ক মানুষজন অসুবিধা ভোগ করছেন, এই অভিযোগে অবিলম্বে এই ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের নন কোম্পানি হাউসিং কলোনি এলাকার ওই বাসিন্দারা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কাছে অবিলম্বে ওই মাঠে অনুষ্ঠান বন্ধের আর্জি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।
সিটি সেন্টারের নন কোম্পানি হাউসিং কলোনি এলাকায় অবণীন্দ্র বীথি ও উদয়শঙ্কর বীথির সংযোগস্থলে রয়েছে ‘চতুরঙ্গ ময়দান’। আগে এই মাঠে দুর্গাপুজো ও কালীপুজো হত। বছরের বাকি সময়ে মাঠে খেলাধুলো করতেন এলাকার লোকজন। বাসিন্দাদের দাবি, বছরখানেক ধরে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। বছরভর পরপর অনুষ্ঠান লেগে রয়েছে সেখানে। তার মধ্যে বেশির ভাগেই এত চড়া শব্দের যন্ত্র বাজানো হয় যে টেকা দায় হয়ে দাঁড়ায়, অভিযোগ আশপাশের বেশ কিছু বাসিন্দার। |
এলাকাবাসী জানান, মাঠটির মালিক এডিডিএ। যে কোনও অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে এডিডিএ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। এই মাঠে প্রথম বড় অনুষ্ঠান হয় দোল উৎসবে। এর পরে জন্মাষ্টমীর সময়ে মাঠটিতে সপ্তাহখানেক মেলা আয়োজন করে ইস্কনের দুর্গাপুর শাখা। পয়লা বৈশাখ একটি বেসরকারি মোবাইল পরিষেবা সংস্থা এই মাঠে উৎসবের আয়োজন করেছিল। বর্তমানে মাঠটিতে ফের বড় বড় বাঁশের খাঁচা বানিয়ে আরও একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। বাসিন্দারা জানান, ৬ নভেম্বর থেকে ২০ দিন ধরে এই মাঠে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হবে। এলাকার বাসিন্দা অসীম রায়, জ্যোতির্ময় ভৌমিকদের বক্তব্য, “এই ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য অপেক্ষাকৃত কম জনবহুল জায়গায় বহু মাঠ রয়েছে দুর্গাপুরে। সেখানে ঘন জনবসতির মাঝে এই মাঠে প্রায়শয়ই এমন অনুষ্ঠান আয়োজনে অসুবিধায় পড়ছেন বয়স্ক ও পড়ুয়ারা।”
বাসিন্দারা জানান, সব অনুষ্ঠানই আয়োজিত হয় এডিডিএ-র অনুমতি নিয়ে। কিন্তু অনুমতি দেওয়ার আগে এডিডিএ-র স্থানীয় বাসিন্দাদের অসুবিধার দিকটিও ভেবে দেখা উচিত বলে তাঁদের দাবি। ভবিষ্যতে তাঁরা দুর্গাপুজো, কালীপুজো ও খেলাধুলো ছাড়া কোনও অনুষ্ঠানের জন্য মাঠ ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন এডিডিএ-র কাছে। ‘নন কোম্পানি হাউসিং অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি পীযূষ মজুমদার বলেন, “অতীতে এই মাঠ কোনও সংস্থা বা অন্য কাউকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার আগে আমাদের সম্মতি নেওয়া হত। এখন আর তা হয় না।” স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ হাজরা, অরুণ চক্রবর্তীরা বলেন, “আমাদের অসুবিধার দিকটি বিবেচনা না করে এ ভাবে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার আমরা বিরোধী।”
এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তথা দুর্গাপুর (পূর্ব) কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গত কয়েক দিন অফিস ছুটি ছিল। ওই চিঠি এখনও হাতে পাইনি। তা পেলে যাঁরা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন তাঁদের লাউডস্পিকার ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে বলা হবে। এ ছাড়া অনুষ্ঠানের সময়সূচিও এমন রাখতে বলা হবে যাতে বাসিন্দাদের অসুবিধা না হয়।” |