ভোটের দিকে তাকিয়ে থমকে অর্থনীতির মূল্যায়নও।
বৃহস্পতিবার মার্কিন মূল্যায়ন সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর্স (এসঅ্যান্ডপি) জানিয়েছে, আগামী বছর লোকসভা ভোটের পর নতুন সরকারের আর্থিক নীতি দেখে তবেই ক্রেডিট রেটিং পুনর্বিবেচনা করবে তারা। যদি দেখা যায় দেশীয় অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর দিশা সেখানে নেই, তা হলে বাধ্য হবে রেটিং ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে। সে ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে অচ্ছুত হওয়ার আশঙ্কার মুখে পড়বে ভারত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘোষণা কার্যত নতুন করে আঙুল তুলল কেন্দ্রের নীতিপঙ্গুত্বের দিকে। তাঁদের মতে, মূল্যায়নের জন্য ভোটের দিকে তাকানো থেকে স্পষ্ট যে, তার আগে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে জোরালো পদক্ষেপ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না বলে মনে করছে তারা। আশাবাদী হতে পারছে না সাহসী সংস্কার নিয়ে। এমনকী বৃদ্ধির গতি ফেরাতে ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের মতো তেতো দাওয়াই প্রয়োগও ভোটের মুখে কতটা সম্ভব, নিশ্চিত হতে পারছে না তা নিয়েও। সেই কারণেই মূল্যায়নের আগে পরের বছর ক্ষমতায় আসা সরকারের নীতি শুরুতেই পরখ করে নিতে চাইছে তারা।
কোনও দেশকে ঋণ দেওয়া কতটা ঝুঁকির, তারই মূল্যায়ন হল ক্রেডিট রেটিং। রেটিং যত ভাল, ঋণ দেওয়া তত কম ঝুঁকির। নিস্ফলা রাজনীতি, শিকেয় ওঠা সংস্কার আর কেন্দ্রের নীতিপঙ্গুত্বের কারণে গত বছরের এপ্রিলে ভারতের ওই ঋণ ফেরতের ঝুঁকি নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গী (আউটলুক) স্থিতিশীল (স্টেব্ল) থেকে নেতিবাচক (নেগেটিভ)-এ নামিয়ে এনেছিল এসঅ্যান্ডপি। হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, দ্রুত পরিস্থিতি না-বদলালে রেটিং কমানোর।
উল্লেখ্য বর্তমানে ভারতের রেটিং বিবিবি(-)। যা লগ্নিযোগ্য রেটিংয়ের মধ্যে সব থেকে নীচে। তাই রেএরও নীচে নেমে যাওয়ার অর্থ লগ্নিযোগ্যতার তকমা খোয়ানো।
হয়তো তাই অনেকে আবার মনে করছেন, এ দিনের ঘোষণায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে কেন্দ্র। কারণ, নাটকীয় কিছু না-ঘটলে অন্তত ভোটের মুখে রেটিং খোয়ানোর অস্বস্তি পোহাতে হবে না। তা ছাড়া, চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে ঘাটতি কমা, বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার যথেষ্ট থাকা ইত্যাদি নিয়ে এ দিন কিছুটা ভাল মন্তব্য করেছে মার্কিন সংস্থাটি। যা ভোটের মুখে একটু স্বস্তি দেবে মনমোহন -চিদম্বরমকে।
|
লেনদেনের শুরুতে ২৪৮ পয়েন্ট উঠলেও এসঅ্যান্ডপি-র হুঁশিয়ারির জেরে বৃহস্পতিবার ফের পড়ল শেয়ার বাজার। রেটিং ছাঁটাইয়ের আতঙ্কে আগের দিনের তুলনায় সেনসেক্স নামল ৭২ পয়েন্ট। থিতু হল ২০,৮২২.৭৭ অঙ্কে। একই আশঙ্কায় ডলারের সাপেক্ষে পড়ছিল টাকাও। সমস্যা বেড়েছিল তেল সংস্থাগুলির আবার বাজার থেকে ডলার কেনার খবরে। তবে দিনের শেষে সেই খামতি প্রায় পুষিয়ে মাত্র ২ পয়সা পড়েছে টাকা। |