ছোট্ট একটা গাড়ি। নিজে নিজেই মেঝের মধ্যে দিয়ে পথ খুঁজে চলেছে সেটি। সামনে বাধা পেলে থমকে যাচ্ছে ‘নিজের বুদ্ধিতেই’। শুধু তাই নয়, আলোর ‘চোখ’ দিয়ে তফাত করছে সাদা-কালোরও!
শুনতে কল্পবিজ্ঞানের মতো হলেও আদতে আমেরিকার ফ্লোরিডায় মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, নাসার কেনেডি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে রোবট-বিজ্ঞান সংক্রান্ত একটি কর্মশালায় গিয়ে এমনই সব যন্ত্র বানিয়েছে হাওড়ার এমসি কেজরিওয়াল বিদ্যাপীঠের ছাত্রেরা।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবারই মঙ্গল গ্রহে যাত্রা শুরু করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর মহাকাশযান। হাওড়ার ওই স্কুল-পড়ুয়াদের আক্ষেপ, দেশের সংস্থায় এমন কর্মশালায় যোগ দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। “দেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করতে পারলে আমাদের আরও ভাল লাগত।” মন্তব্য একাদশ শ্রেণির ছাত্র কিশলয় মণ্ডলের। ইসরো সূত্রের খবর, সংস্থার নীতি অনুযায়ী এখনও এমন কোনও অনুষ্ঠান তাঁরা করছেন না। ভবিষ্যতেও এমন কোনও অনুষ্ঠান হবে কি না, তা নিয়ে এখনই কোনও পরিকল্পনা নেই। |
কিন্তু হাওড়ার সঙ্গে ফ্লোরিডা জুড়ল কী ভাবে? ওই স্কুলের অধ্যক্ষ নীলকণ্ঠ গুপ্ত জানান, বছর দুয়েক আগে তাঁরা উপলব্ধি করেছিলেন, পুঁথিগত পড়াশুনোর পাশাপাশি একটু অন্য বিষয়েও ছাত্রদের আগ্রহ তৈরি করা প্রয়োজন। তা থেকেই ২০১২ সালে স্কুলে রোবট-বিজ্ঞান সংক্রান্ত একটি ক্লাব গড়ে তোলা হয়। সেই সূত্র ধরেই নাসার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত দিল্লির একটি সংস্থার মাধ্যমে মার্কিন মুলুকে যাওয়া। ৩ দিনের ওই কর্মশালায় ২২ জন ছাত্রের সঙ্গে গিয়েছিলেন স্কুলের দুই শিক্ষিকা কেকা মুখোপাধ্যায় ও অরুণা গৌর-ও।
নবম শ্রেণির ছাত্র শিবম চাপোলিয়া জানায়, ২২ জনকে পাঁচটি দলে ভাগ করে একটি ‘প্রজেক্ট’ দেওয়া হয়েছিল। সেখানেই রোবট-গাড়ি বানিয়ে তার মগজে ‘বুদ্ধি’ (কম্পিউটার) ভরেছে তারা। শিখেছে লাইট সেন্সর-সহ নানা বিষয়। তিন দিন ফ্লোরিডায় কেনেডি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের ওই কর্মশালায় নাসার রোবট-বিজ্ঞানী এবং মহাকাশচারীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ মিলেছে। এমনকী, হাতে ধরেছে চাঁদের পাথরও! এমন সব কাণ্ডকারখানা ঘটিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উৎসাহিত ওই ছাত্রেরা। অনেকেই ভবিষ্যতে রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চায়। কয়েক জনকে উৎসাহিত করেছে পদার্থবিদ্যা কিংবা মহাকাশ গবেষণাও। |