স্থানীয় নাম ওলান্দা। আবহবিদদের ভাষায়, হাইয়ান নামেই পরিচিত সে। বৃহস্পতিবারেই ফিলিপিন্সে আছড়ে পড়তে পারে ক্ষমতায় পাঁচ পাঁচটি হারিকেন ঝড়ের সমান এই টাইফুন। এই আগাম সতর্কতা জারি হয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রটি জুড়ে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না ফিলিপিন্সের। বোফা টাইফুনে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বছরও ঘোরেনি। এর মধ্যেই গত মাসে ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন দু’শোরও বেশি মানুষ। গৃহহীন সাড়ে তিন লক্ষ। আর এ বার হাইয়ানের চোখরাঙানি।
চলতি বছরে পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম ঝড়গুলির তালিকায় সবার প্রথমেই নাম এই হাইয়ানের। আবহবিদদের মতে, ঘণ্টায় ৩৩৫ কিলোমিটার হতে পারে এই টাইফুনের গতিবেগ। ঝড়ের আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই আড়াই হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে দিচ্ছে ফিলিপিন্স প্রশাসন।
ফিলিপিন্সের আবহাওয়া সংস্থা পাগাসের তরফে জানানো হয়েছে, আটশো কিলোমিটার এলাকা হাইয়ানের কবলে পড়তে পারে।
প্রবল ঝড়, হড়কা বান ও ধসের আশঙ্কায় সতর্ক করা হয়েছে তিরিশটিরও বেশি প্রদেশকে। পাগাস জানিয়েছে, ঝড়ের গতিপথ বিশ্লেষণ করে অনুমান, সব চেয়ে বেশি ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বোহোল ও বোরাকে দ্বীপে। দুর্যোগ এড়াতে আগে ভাগেই দ্বীপ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বহু পর্যটক।
ফ্লোরিডা থেকে আসা এমনই এক পর্যটক রস ইভানস জানিয়েছেন, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে নানা জায়গায়। যাঁরা ছুটি কাটাতে এসেছিলেন তাঁরা বোরাকে ছাড়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেছেন, “ভাগ্যের জোরে ঠিক সময়ে এখান থেকে ফিরে যেতে পারছি।”
প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ক্রান্তীয় সাইক্লোন ঝড়ের উৎপত্তিস্থলের খুব কাছেই ফিলিপিন্স। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর গড়ে অন্তত কুড়িটি টাইফুনের মুখে পড়ে ফিলিপিন্স। ঝড় থামার পরে মৃতের স্তূপ সরিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই এসে পড়ে অন্য দুর্যোগ। হাইয়ানের আগাম আশঙ্কায় যা যা সাবধানতা নেওয়া হয়েছে, তাতে মৃত্যুমিছিল খানিকটা হলেও এড়ানো যাবে বলেই আশা প্রশাসনের। |