সুস্থ হয়ে গিয়েছেন জানিয়ে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ফের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে নেওয়া হল নকশালবাড়ি দুর্ঘটনায় অন্যতম আহত মহেশ সিংহকে। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁকে সামনে পেয়ে অভিযোগ জানান মহেশ ও তাঁর মামা। মহেশ মন্ত্রীকে জানান, তিনি সুস্থই হননি। তবু তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার রাতে ভর্তি হলেও তাঁকে গত দুদিনে একটি ইঞ্জেকশন ছাড়া আর কোনও ওষুধও দেওয়া হয়নি বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন মহেশ। অভিযোগ শুনে গৌতমবাবু তখনই মেডিক্যাল সুপারকে নির্দেশ দেন তাঁকে ফের ভর্তি করতে। মন্ত্রীর নির্দেশে মহেশবাবুর পুনরায় চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
গৌতমবাবু বলেন, “ওই রোগীর অভিযোগ পেয়েছি। তাঁকে ফের ভর্তি নিয়ে যথাযথ চিকিৎসা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” যদিও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার সব্যসাচী দাস ওই ব্যক্তির নতুন করে কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন নেই বলে মনে করছেন। তিনি বলেন, “আহত মহেশের ছোট মারাত্মক কিছু ছিল না। তাঁকে যা প্রাথমিক চিকিৎসা করার দরকার ছিল তা করা হয়েছে। বর্তমানে সে সুস্থ। সাবধানতার জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। আর চিকিৎসার প্রয়োজন না থাকায় তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে মন্ত্রীর নির্দেশে ফের ভর্তি নেওয়া হয়েছে তাঁকে।” আহত মহেশ সিংহ বলেন, “আমার সারা শরীরে এখনও অসহ্য ব্যথা থাকা সত্বেও আমাকে মেডিক্যাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত দু’দিনে আমাকে কোনও ব্যথার ওষুধও দেওয়া হয়নি মেডিক্যাল থেকে।” এ দিন মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে আহতদের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে তৃণমূল জেলা মহাসচিব কৃষ্ণ পাল-সহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন ওমকেশ রায়, পয়ার মণ্ডল-সহ বাকিদের সঙ্গে। একটি শিশুকে আইসিইউতে গিয়ে দেখে আসেন তিনি। মনসা সিংহ নামে ১০ বছরের ওই শিশুটির মাথায় রক্তক্ষরণ-সহ চোয়াল ও মুখে ক্ষত রয়েছে। তার জন্য প্লাস্টিক সার্জারি করা দরকার বলে চিকিৎসকরা জানান। মন্ত্রী ওই শিশুটির চিকিৎসার সমস্ত খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। বাকিদের মধ্যে কারও অতিরিক্ত কোনও খরচ হলে তাও সরকার দেবে বলেও জানান তিনি। পরে মেডিক্যাল সুপারের সঙ্গে বসে মেডিক্যাল পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সেরে নেন। গৌতমবাবু ওই দিনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “এটা ভয়াবহ ঘটনা। অভিযুক্ত অ্যাম্বুল্যান্স চালকের কড়া শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্ত চালক সুধীর লাকড়ার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনও সুস্থ না হওয়ায় তার পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা চলছে। |