|
|
|
|
এডিসি এলাকার জমি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা |
আশিস বসু • আগরতলা |
এডিসি এলাকায় জমির ‘বন্টন’ এবং ‘অধিকার’ নিয়ে ফের রাজনৈতিক তরজা শুরু হল ত্রিপুরায়।
ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পর্ষদের সীমানার মধ্যে উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত নয় এমন কারও বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বিরোধিতা করেছে ‘ইন্ডিজেনাস পিপল্স ফ্রন্ট অফ ত্রুইপ্রাল্যান্ড’ (আইপিএফটি)। এডিসি এলাকার বাসিন্দাদের মত না-নিয়ে, উপজাতিদের জমি দখল করে ‘উন্নয়নের’ নামে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে বামফ্রন্ট সরকার---এমনও অভিযোগ তুলেছে ওই সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব।
আইপিএফটি’র সহ-সম্পাদক বিদ্যুৎ দেববর্মা বলেন, ‘‘ত্রিপুরা সরকার উপজাতিদের মতামত, স্বার্থ অগ্রাহ্য করেই তাঁদের জমি দখল করছে। শাসক দলের নেতারা এ কাজে মদত দিচ্ছেন।’’ বামফ্রন্ট-জমানায় এডিসি এলাকায় উন্নয়ন হয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
প্রশাসনের বক্তব্য, রাজ্যের নিরাপত্তায় মোতায়েন টিএসআর বাহিনীর শিবিরের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। নগর পঞ্চায়েত সম্প্রসারণের জন্যও এডিসি এলাকার জমিতে হাত পড়ছে। কিন্তু এডিসি এলাকায় টিএসআর বাহিনীর শিবির তৈরি, নগর পঞ্চায়েতের সম্প্রসারণের বিরোধিতা করেছে আইপিএফটি। সংগঠনের অভিযোগের তীর সিপিএম-এর দিকেই। রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, টিটিএএডিসি সংস্থায় শাসক দলের প্রতিনিধিত্ব বেশি থাকায় এলাকার মানুষের মতামতকে গুরুত্ব না-দিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এডিসি এলাকার জমি ‘হস্তান্তর’ বা ‘বেদখল’ হওয়ার জেরে মতবিরোধ তৈরি হলে, তৃতীয় কোনও মহলের হস্তক্ষেপ জরুরি। সেই কারণে একটি কমিশন তৈরিরও দাবি তুলেছে আইপিএফটি।
সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের কথায়, ‘‘ত্রিপুরার সমস্ত জমির উপর অধিকার রাজ্য সরকারের। এডিসি এলাকার জমির দেখাশোনার বিষয়টি টিটিএএডিসি কতৃপক্ষের। ওই সংস্থার মতামত জেনে নিয়েই সরকার নিজস্ব কর্মসূচি রূপায়ণ করছে।” বিজনবাবুর বক্তব্য, রাজ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রের জমি-আইন গৃহীত না-হওয়া পর্যন্ত, টিএসআর শিবির তৈরির বন্ধ রাখা সম্ভবপর নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
এডিসি এলাকায় উপজাতি এবং অ-উপজাতি মানুষের অধিকারের সমর্থনেই কথা বলেছে রাজ্য সিপিএম। বিজনবাবু বলেন, ‘‘এডিসি এলাকায় স্থায়ী বসবাসের অধিকারের প্রসঙ্গে, ১৯৭১ ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি বর্ষকেই ভিত্তিবর্ষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের আগে থেকে যাঁরা ওখানে বসবাস করছেন, তাঁরা উপজাতির হোন বা অ-উপজাতির---উভয়েরই এডিসি এলাকায় জমির অধিকারের ক্ষেত্রে সমর্থন করবে সিপিএম।’’ ১৯৭১ সালের পরেও যাঁরা এডিসি এলাকায়, বিশেষত বনাঞ্চলে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন, তাঁদেরও বিরোধিতা করবে না সিপিএম।
ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস অবশ্য জমি-সংক্রান্ত আইপিএফটি’র দাবির পক্ষে নয়। দলের কার্যকরী সভাপতি আশিস সাহা বলেন, ‘‘কেন্দ্র এডিসিকে আরও শক্তিশালী করতে সংসদে আইন পেশ করতে চলেছে। তা-ই বিচলিত সিপিএম। বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলিকে মদত দিয়ে তাঁরা রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।’’
|
|
|
|
|
|