‘কটূক্তি’র প্রতিবাদ করায় তরুণীর গায়ে গরম ঘুগনি
শালীন মন্তব্য ও শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় বাবা, দাদা এবং বোনের সামনেই বছর আঠেরোর তরুণীর গায়ে গরম ঘুগনি ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বছর তেইশের এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সেখানেই থামেনি সে। এক সঙ্গীকে নিয়ে ওই তরুণীর বাবা এবং দাদার উপরেও চড়াও হয় ওই যুবক।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মানিকতলা থানার মুরারিপুকুর রোডে, প্রমোদ দাশগুপ্ত কলোনিতে। এক অভিযুক্ত উত্তম হালদার গ্রেফতার হলেও মূল অভিযুক্ত রঞ্জিত দাস ফেরার। ওই তরুণী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘটনাস্থলের পাশে কলকাতা সশস্ত্র পুলিশের পঞ্চম ব্যাটালিয়নের অফিস থেকে মানিকতলা থানায় ফোন গেলেও পুলিশ সময় মতো পৌঁছয়নি।
ওই তরুণী জানান, বিধাননগর স্টেশনের পাশেই তাঁদের খাবারের দোকান। এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ দোকানে বাবার সঙ্গে রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা দুই বোন। তিনি ও তাঁর বোন রুটি করছিলেন। বাবা রাঁধছিলেন ঘুগনি। রঞ্জিত সিগারেট খেতে খেতে দোকানে ঢোকে। অভিযোগ, দোকানে ঢুকেই সে তরুণীর বোনের পায়ের পাতা পা দিয়ে চেপে ধরে এবং তাঁর মুখে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে শুরু করে। আরও অভিযোগ, প্রতিবাদ জানালে তাঁদের উদ্দেশে কটূক্তি করে।
সেই তরুণীর জখম হাত।
তরুণী জানান, গালিগালাজ করতে দেখে তাঁর বাবা রঞ্জিতকে দোকান থেকে বার করে মোড়ের মাথায় নিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে হাজির হয় তার সঙ্গী উত্তম। চলে আসেন তরুণীর দাদাও। দু’পক্ষে কথা কাটাকাটি হয়। অভিযোগ, তরুণীর বাবা এবং দাদাকে মারধর করে রঞ্জিত ও উত্তম। আরও অভিযোগ, তারা তরুণীর দাদার গলাও টিপে ধরে।
তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, মোড়ের মাথা থেকে ফের দোকানে ফিরে আসে রঞ্জিত এবং উনুনে বসানো গরম ঘুগনি ঢেলে দেয় বছর ওই তরুণীর গায়ে। তরুণীর চিত্‌কারে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। আসেন কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র ব্যাটালিয়নের কর্মীরাও। তাঁরাই মানিকতলা থানায় খবর দেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, তা সত্ত্বেও সময় মতো পুলিশ পৌঁছয়নি। এর মধ্যে অবস্থা বেগতিক দেখে পালায় দুই অভিযুক্ত। তরুণীর শরীরে ততক্ষণে ফোস্কা পড়তে শুরু করেছে। তাঁকে প্রথমে আর জি কর এবং পরে বেসরকারি এক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তাঁর চিকিত্‌সা হয়।
এ দিন বিকেলে তরুণীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর শরীরের ডান দিকের অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে। মারধর করায় ডান হাত ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি ফোস্কাও পড়েছে। যন্ত্রণায় রীতিমতো কুঁকড়ে যাওয়া ওই তরুণী জানান, রঞ্জিত প্রায়ই দোকানে এসে অশ্লীল কথা বলত। এলাকাবাসী ও তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, রেললাইনের ধারে হওয়ায় রঞ্জিত, উত্তমের মতো কিছু ছেলে রোজই নেশা করে এলাকায় ঝামেলা করে। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
ওই তরুণীর পরিবার সূত্রে খবর, আর দু’মাস পরেই তরুণীর বিয়ে। তার আগে এমন ঘটনায় তাঁরা শঙ্কিত। পুলিশের এ হেন আচরণে তাঁরা ফের হামলার আশঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে ডিসি (ইএসডি) ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, “ওই দুই যুবকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি এবং ধস্তাধস্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।” অন্য দিকে, সোমবার রাতে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকায় প্রকাশ্য রাস্তায় এক তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হয় তারক প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ জানায়, মানিকতলা মেন রোডের বাসিন্দা ওই তরুণী বিবেকানন্দ রোডে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখনই তারক তাঁকে কটূক্তি করে। প্রতিবাদ করায় সে তাঁর ওড়না ধরে টানে বলেও অভিযোগ। সে সময়ে ওখান দিয়ে পুলিশের গাড়ি যাচ্ছিল। মহিলা চিত্‌কার করে সাহায্য চাইলে ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ তারককে গ্রেফতার করে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.