বাঘ বাঁচাতে দেশ জুড়ে চলছে নানান উদ্যোগ। সরকারের সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাগুলিও উদ্যোগী হচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় এই প্রাণীটিকে বাঁচাতে। এ বার এই তালিকায় নাম তুলল দেশের দুই খুদে। তারা বাঘ সংরক্ষণের লক্ষ্যে খুলেছে আস্ত একটি ওয়েবসাইট। বছর দশেকের এই দুই কিশোরের নাম আর্দশ ও শুভম। দুই খুদের নতুন এই প্রচেষ্টায় অবাক অনেকেই।
আর্দশ এবং শুভম দু’জনেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তাদের বাঘ বাঁচানোর এই উদ্যোগ জানার পরই সাহায্য করার জন্য প্রথম এগিয়ে আসেন শুভমের এক দাদা। তিনি মূলত ওয়েবসাইটটি তৈরি করতে সাহায্য করেছেন। ওয়েবসাইটটির নাম www.thundertigers.weebly.com। তবে টাকার অভাবে এখনও পর্যন্ত ওয়েবসাইটটি ইন্টারনেটে নথিভুক্ত করা যায়নি।
টাকা তোলার জন্য আদর্শ ও শুভম প্রতিবেশীদের কাছে গিয়ে বাঘ সংরক্ষণ সংক্রান্ত নানা তথ্য দিয়ে টাকা তুলছে। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ইতিমধ্যেই তারা তুলেছে ১৭০০ টাকা। ওয়েবসাইটটি তৈরিতে শুভমের দাদা সাহায্য করলেও গোটা উদ্যোগটাই ওই দুই কিশোরের। ওয়েবসাইটটি খুঁটিয়ে পড়লেও তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। ওয়েবসাইটে বাঘ সম্পর্কে দুই খুদে লিখেছে, “দিন দিন কমছে বাঘের সংখ্যা। মানুষের উচিত বাঘ বাঁচাতে এগিয়ে আসা। বাঘ দেখতে অনেকটা বড় বিড়ালের মতো। লম্বা একটি লেজ। হলুদের উপর কালো ডোরা কাটা দাগ। মুখের চারটে দাঁতও খুব শক্ত।”
২০০৬ সালের সরকারি গণনা অনুযায়ী, ভারতে বাঘের সংখ্যা মাত্র ১১৪১। সরকারের তরফ থেকে বার বার বাঘ কমে যাওয়ার কথা ঘোষণা করা হলেও এখনও পর্যন্ত কমেনি চোরাশিকারির উপদ্রব। বাঘ বাঁচানোর উদ্যোগ নিয়ে সেই ১৯৭২ সালে গঠিত হয়েছিল ‘প্রোজেক্ট টাইগার’। এই ওয়েবসাইটটি দেখলে বোঝা যাবে আধুনিক সমাজে বাঘের উপকারিতা কতটা।
ওই দুই খুদের এই অভিনব উদ্যোগ জানাজানির হওয়ার পর আর্দশ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, “আমি আর শুভম টিভিতে বাঘ নিয়ে একটি বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম। সেখান থেকেই জানতে পারি আমাদের দেশে বাঘের সংখ্যা কত কম। এটা আমরা তার পর ইন্টারনেটেও দেখি।” শুভম আরও জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটটি দেখা যাচ্ছে না। তবে শীঘ্রই দেখা যাবে। এই কাজটি তারা মূলত শিক্ষক, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের জন্যই শুরু করেছে। গুগলে ওয়েবসাইটটি দেখতে পাওয়ার পরই ক্লিক প্রতি গুগলের তরফ থেকে পাবে সাত টাকা করে। এই পুরো টাকাটাই বাঘ সংরক্ষণ করার জন্য আর্দশ এবং শুভম ন্যাশনাল পার্কগুলোর হাতে তুলে দেবে। যেমন জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক। |